মাহমুদ আব্বাসের সঙ্গে ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর বিরল বৈঠক

ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথে বিরল বৈঠক করেছেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ। গত রোববার অনুষ্ঠিত এ বৈঠকটি ছিল বিগত ১০ বছরের মধ্যে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েলের উচ্চ পর্যায়ের নেতাদের মধ্যে প্রথম কোনো বৈঠক। এতে গাজা ও পশ্চিম তীরের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক বিষয়গুলো গুরুত্ব পেয়েছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

মাহমুদ আব্বাসের সাথে বিরল বৈঠক করেছেন বেনি গানৎজ, ফাইল ছবি

নানা কারণে এ বৈঠকটিকে গুরুত্বপূর্ণ বলা হলেও তাতে তেমন ভ্রুক্ষেপ করছেন না ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। তিনি পরিষ্কার ভাষায় ফিলিস্তিনিদের সাথে নতুন শান্তি আলোচনা শুরুর সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। ফিলিস্তিনি প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের সাথে ইসরায়েল প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজের বৈঠকের কয়েক ঘণ্টা পর ইসরায়েলের প্রধান প্রধান সংবাদমাধ্যম প্রধানমন্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠ এক সূত্রের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ফিলিস্তিনিদের সাথে কোনো কূটনৈতিক প্রক্রিয়া নেই, হবেও না।

সম্প্রতি ওয়াশিংটন ডিসিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সাথে সাক্ষাৎ করেন ইসরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট। এর পরপরই আব্বাস-গানৎজের এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত ছিলেন ইসরায়েলের সামরিক শাখার কর্মকর্তা গাসান আলিয়ান, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হুসেইন আল শেখ ও ফিলিস্তিনের গোয়েন্দাপ্রধান মাজিদ ফারাজ।

কাঁদানে গ্যাস ছুড়ে ছত্রভঙ্গ করা হয় ফিলিস্তিনি বিক্ষোভকারীদের, ফাইল ছবি

পরে এক টুইট বার্তায় ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গান্টজ বলেন, ফিলিস্তিনের অংশে অর্থনৈতিক অবস্থা শক্তিশালী করতে কাজ করবে ইসরায়েল। অন্যদিকে, এ বৈঠকের ব্যাপারে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, উভয় পক্ষ যোগাযোগ রক্ষা ও আলোচনা অব্যাহত রাখার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।

এদিকে, গাজা উপত্যকা থেকে অবরোধ প্রত্যাহারে ইসরায়েলের ওপর তীব্র চাপ দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে ফিলিস্তিন প্রতিরোধকামী সংগঠন হামাস। সম্প্রতি এক বিবৃতিতে সংগঠনটির মুখপাত্র ফাওজি বারহৌম বলেন, যতদিন পর্যন্ত ফিলিস্তিনিরা স্বাধীন ও মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপন করতে পারবেন না, ততদিন শান্তি ও স্থিতিশীলতা উপলব্ধি করা যাবে না।

হামাস মুখপাত্র ফাওজি বলেন, গাজায় বর্তমানে যে মানবিক সংকট চলছে, তা ইসরায়েলি অবরোধের জন্য, আর এ সংকটের জন্য সম্পূর্ণভাবে দায়ী বর্বর রাষ্ট্রটি। ফিলিস্তিনিরা কখনো ইসরায়েলের নীতি মেনে নেবে না বা জাতীয় স্বার্থ জড়িত এমন বিষয়ে কখনও আপস করবে না।

প্রায় ২০ লাখেরও বেশি মানুষের বাস যে গাজা উপত্যকায়, সেটি ২০০৭ সাল থেকেই ইসরায়েলের চাপিয়ে দেয়া অবরোধের কারণে নানা সংকটে নিমজ্জিত।

উল্লেখ্য, চলতি বছরের জুন মাসে ইসরায়েলে নতুন সরকার গঠিত হয়। এর আগে প্রায় এক যুগ ক্ষমতায় ছিলেন বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। বর্তমান নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেটকে আগের সরকারের তুলনায় অনেক বেশি কট্টর বলে ধারণা করা হচ্ছে।