আপনি পড়ছেন

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তকে আবারো সঠিক দাবি করে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, আমি কোনোভাবেই যুদ্ধ দীর্ঘায়িত করতে চাচ্ছিলাম না। দশকের পর দশক ধরে ওয়াশিংটন সামরিক পন্থায় অন্য দেশ পুনর্গঠনের জন্য যে চেষ্টা চালিয়ে গেছে, তা ছিলো একেবারেই অযথা। সেনা প্রত্যাহার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি এই পদক্ষেপকে সামরিক মিশনের অবসান ঘটিয়ে দেশ পুনর্গঠনের সুযোগ হিসেবে দেখছি।

jo biden 2যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন

আফগানিস্তান বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের আগের প্রতিশ্রুতিগুলোকে অসার মন্তব্য করে বাইডেন আরো বলেন, আফগানিস্তানে সামরিক মিশন বাস্তবায়নে আমাদের আসলে সুনির্দিষ্ট কোনো লক্ষ্য ছিল না। তাই আফগান যুদ্ধ শুরু হওয়ার দুই দশক পরে ওই যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য আমাদের ছেলে মেয়েদেরকে সেখানে না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। বহু আগেই এ যুদ্ধ বন্ধ করা উচিত ছিল, যা এখন আমরা করছি।

পর্যবেক্ষকরা দাবি করছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেনের এ বক্তব্য থেকে মার্কিন নিরাপত্তা ও বৈদেশিক নীতিতে পরিবর্তনের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। ওয়াশিংটন দীর্ঘদিন ধরে সন্ত্রাসবাদ দমনের অজুহাতে বিভিন্ন দেশে হামলা চালিয়ে যাচ্ছিল। এসব ক্ষেত্রে তারা জানিয়েছিল, যেসব দেশ সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য, যে সব দেশে গণতন্ত্র নেই, সেসব দেশে তারা গণতন্ত্রের সরকার প্রতিষ্ঠা করবে।

সন্ত্রাসবাদ দমনের অজুহাতে ২০০১ সালে আফগানিস্তানে এবং এরপর ২০০৩ সালে ইরাকে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। এরপর তারা সেখানে গণতান্ত্রিক ধারার সরকার গঠনের কথা বলে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের প্রচেষ্টার ইতি ঘটার পরে দেখা গেছে, এসব দেশে উন্নয়নমূলক কোনো কাজই হয়নি।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, আফগানিস্তান পুনর্গঠনে তারা কোটি কোটি ডলার ব্যয় করেছে। গত মার্চে প্রকাশিত মার্কিন সরকারের আফগানিস্তান পুনর্গঠন বিষয়ক তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল অংকের অর্থ মূলত গচ্ছা গেছে। এতে বলা হয়েছে মার্কিন অব্যবস্থাপনার পাশাপাশি আফগানিস্তানে ব্যাপক দুর্নীতি এবং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক বিশৃঙ্খলার কারণে মার্কিন সরকারের ওই বিপুল বিনিয়োগ মূলত কোনো কাজে আসেনি। যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগান জনগণের জন্য সেগুলো কোনো কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসেনি।

এতদিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে যেসব দাবি করতো, সেগুলোর অসারতা প্রমাণ করা একটু কঠিনই হতো। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা আফগানিস্তান থেকে চলে যাওয়ার পর পরিস্থিতি সবার সামনেই উন্মুক্ত। বলা হচ্ছে, আফগানিস্তানের বর্তমান ধ্বংসযজ্ঞ, দরিদ্রতা ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির জন্য যুক্তরাষ্ট্রই দায়ী।

এ অবস্থায় পরিস্থিতি স্বীকার করে সেনা প্রত্যাহার ও সার্বিক বিষয়ে বাইডেনের বক্তব্য থেকে ধারণা করা হচ্ছে, স্নায়ু যুদ্ধের পর যুক্তরাষ্ট্র যে অবস্থান ছিল, সে অবস্থানের পতন ঘটেছে। অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক ক্ষেত্রে তাদের অবনতির আলামত লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ অবস্থায় অন্য দেশের গণতন্ত্র বা সরকার পাল্টানো নয়, বরং নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টানোর পথেই হাঁটছে জো বাইডেনের যুক্তরাষ্ট্র।

সূত্র: ওয়াশিংটন পোস্ট

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.