ফের ‘বোমা ফাটালেন’ মার্কিন জেনারেল

মার্কিন সেনাবাহিনীর জয়েন্ট চিফ অব স্টাফ মার্ক মিলি আবারও ‘ভয়ঙ্কর তথ্য’ দিয়েছেন। এই মার্কিন জেনারেল বলছেন, আফগানিস্তানের শরণার্থীদের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে আল-কায়েদা ও দায়েশ। ফক্স নিউজের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি এই তথ্য জানান।

মার্ক মিলি

এর আগে তিনি আফগানিস্তানে আগামী এক বছরের মধ্যে গৃহযুদ্ধের তীব্র আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। তার এ বক্তব্য সারা বিশ্বের গণমাধ্যম গুরুত্ব দিয়ে প্রকাশ করেছে। রুশ সংবাদ মাধ্যম স্পুটনিক এ খবর দিয়েছে। 

মার্ক মিলি বলছেন, জার্মানির রামস্টেইন এয়ার বেজে ২০০ থেকে ৩ হাজার আফগান শরণার্থী স্থানান্তরিত হয়েছে। যাদেরকে লাল তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড, পরিচয়, কাগজপত্র ইত্যাদি চেক করা হচ্ছে। তার আশঙ্কা, এসব আফগান শরণার্থীর মাধ্যমেই ইউরোপ ও আমেরিকায় আল-কায়েদা ও দায়েশ ছড়িয়ে পড়বে।

এই জেনারেল বলছেন, যদি কোনো আফগান নাগরিকের ব্যাপারে ক্ষতিকর কোনো তথ্য পাওয়া যায়, তাহলে তাকে লাল অথবা হলুদ তালিকায় রাখা হচ্ছে। তিনিও এই প্রক্রিয়াকে সমর্থন করেন।

যুক্তরাষ্ট্রের হোমল্যান্ড সিকিউরিটির সেক্রেটারি অ্যালেজান্দ্রো মেয়রকাস বলছেন, কমপক্ষে ৫০ হাজার আফগান নাগরিক আফগান সংকটের সুযোগে যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকে পড়ছে। ইতোমধ্যে ১০ হাজার নাগরিক যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করেছে। এর মধ্যে মাত্র ২০ ভাগ মানুষের দু’দেশেরই নাগরিকত্ব রয়েছে। বাকি নাগরিকরা স্পেশাল ইমিগ্র্যান্ট ভিসা নিয়ে আমেরিকায় থিতু হচ্ছে।

খবর বলা হচ্ছে, গত মাসে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিযোগ করেন, বাইডেন কি তার দেশে সন্ত্রাসবাদ আমদানি করছেন? আর কত সন্ত্রাসীকে বাইডেন আমেরিকায় আনবেন তা আমরা জানি না।

নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিমানে তোলার আগে আফগান নাগরিকদের একটি বিশেষ প্রকিয়ায় ফিল্টারিং করা হয়। আরব আমিরাতের বিমান বেজ থেকে বিভিন্ন দেশে পাঠানোর আগে তাদের বিশেষভাবে চেক করা হয়েছে। একইভাবে জার্মানির এয়ার বেজে আফগান নাগরিকদের লাল ও হলুদ তালিকায় রাখা হয়েছে।

আফগান নাগরিকদের ফ্লাইট তালিকা চেক করা হচ্ছে। তাদের কার কোন গন্তব্য সেটাও জানতে চাওয়া হচ্ছে। সন্দেহভাজন নাগরিকদের ব্যাকগ্রাউন্ডও খুঁজে দেখা হচ্ছে। কোন কেন্দ্র থেকে তারা কোথায় কোথায় গেছে ইত্যাদি তথ্যও জানতে চাওয়া হচ্ছে।

জেনেভার আফ্রিকা সিকিউরিটি অ্যান্ড স্ট্রাটেজিক স্টাডির পরিচালক ডেভিড অটো বলছেন, আফগান নাগরিকদের ব্যাকগ্রাউন্ড চেক করা হচ্ছে খুব কম সময়ের মধ্যে। এই কাজ অনেক সীমাবদ্ধতা নিয়ে করা হচ্ছে।

অটো বলছেন, ইউরোপে আল-কায়েদা কিংবা দায়েশের প্রবেশ ঠেকাতে সামর্থ্য অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিককে স্ক্রিনিংয়ের আওতায় আনা হচ্ছে। তবে এ প্রক্রিয়াটি খুবই সংক্ষিপ্তভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। আফগান নাগরিকদের প্রবেশে ইউরোপ ও আমেরিকায় দায়েশের হামলার আশঙ্কা করা হচ্ছে। যদি কাউকে সন্দেহ করা হয়, তাহলে তার আফগানিস্তানে ফেরত যাওয়া ছাড়া কোনো উপায় নেই।

জার্মানির বনভিত্তিক কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ইন্টেলিজেন্স স্টাডিজের প্রধান ড. জসিম মোহাম্মদ বলছেন, আফগানিস্তান তালেবানের হাতে যাওয়ার পর নাগরিকদের বিষেশ শর্তে জার্মানিতে অস্থায়ীভাবে থাকার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। সন্দেহভাজনদের পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে, কিন্তু কাউকে কারারুদ্ধ করা হচ্ছে না।