আপনি পড়ছেন

ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করতে যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যের সঙ্গে অংশীদারিত্বে অংশ নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। তিন দেশ মিলে গঠন করেছে ‘এইউকেইউএস’ জোট। এতে চীন এখন ক্ষেপে আগুন। অস্ট্রেলিয়ার ওই সিদ্ধান্তের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে দেশটি। চীনা কর্তৃপক্ষ বলছে, অস্ট্রেলিয়ার এই অংশীদারিত্ব দেশটিকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে।

a uk us allianceএইউকেইউএস জোট

বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া চীনা বলয়ের বিরুদ্ধে জোটটির ঘোষণা দেয়। এই জোটের উদ্দেশ্য অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক সাবমেরিন তৈরির প্রযুক্তি ও অত্যাধুনিক গবেষণায় সহযোগিতা করা এবং চীন বলয়ের বিরুদ্ধে একটি শক্তিকে দাঁড় করানো। দ্য উইক।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপত্র ঝাউ লিজিয়ান বলছেন, এই জোট গঠনের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য ভূরাজনীতি নিয়ে অগ্নিখেলায় মত্ত হয়েছে। তারা অস্ট্রেলিয়াতে যে পারমাণবিক সাবমেরিন প্রযুক্তি রপ্তানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে তা চীনের বিরুদ্ধে ‘ডাবল স্ট্যান্ডার্ড’ অবস্থান ছাড়া কিছুই নয়। এটি খুবই দায়িত্বজ্ঞানহীন মানসিকতার পরিচয় বহন করে।

china fm spokesman zhao lijianচীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপত্র ঝাউ লিজিয়ান

লিজিয়ান বলেন, এই জোট আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং অস্ত্রের প্রতিযোগিতাকে আরও বাড়িয়ে তুলবে। পারমাণবিক অস্ত্র অপসারণের যে চেষ্টা বিশ্বব্যাপী চলছে তা ক্ষতির মুখে পড়বে। তিনি তিন দেশকে স্নায়ুযুদ্ধের মানসিকতা ঝেড়ে ফেলে বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

আন্তর্জাতিক আনবিক শক্তি সংস্থা আইএইএর চীনা রাষ্ট্রদূত ওয়াং কুন বলছেন, পারমাণবিক গবেষণা থেকে ইরান ও উত্তর কোরিয়াকে থামানোর চেষ্টা করছি আমরা। আর সেই সময় তিন দেশ যে কাণ্ড ঘটাল তা আমাদের প্রচেষ্টায় পানি ঢেলে দেওয়ার মতো।

scott morrison newঅস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন

ব্লুমবার্গের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে কুন বলেন, আইএইএর প্রচেষ্টায় ওই তিন দেশের সিদ্ধান্ত মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। কোরিয়া উপদ্বীপ ও ইরানের পারমাণবিক সমস্যা মোকাবেলার যে প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে তা বাধাগ্রস্ত হবে।

তবে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, আমরা শুধু পারমাণবিক সাবমেরিন প্রযুক্তির ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। পারমাণবিক অস্ত্র উৎপাদন আমাদের লক্ষ্য নয়। পারমাণবিক অস্ত্রের পেছনে আমরা ছুটছি না।

তবে মরিসনের এ বক্তব্যে সন্তুষ্ট নয় চীন। গ্লোবাল টাইমস বৃহস্পতিবার সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, এইউকেইউএস জোট ও এর চুক্তি অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক যুদ্ধের মতো ভয়ঙ্কর বিপদের দিকে নিয়ে যাবে। কারণ এখন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় পারমাণবিক অস্ত্র ও সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য ব্যালেস্টিক মিসাইল সরবরাহ করা সহজ হবে।

চীনা ফরেন অ্যাফেয়ার্স ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক লি হেইডং গ্লোবাল টাইমসকে বলেন, শীতল যুদ্ধের পর ইউরোপে রাশিয়াকে আটকাতে আমেরিকা একই পদ্ধতি ব্যবহার করে আসছে, যাতে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনকে আটকে রাখা সম্ভব হয়।

ওয়াশিংটন এই অঞ্চলে ন্যাটোর মতো একটি জোট তৈরি করছে, এইউকেইউস যার মূল অংশ। এ জোটের চারপাশে রয়েছে মার্কিন-জাপান এবং মার্কিন-দক্ষিণ কোরিয়া জোট এবং চারদিকে রয়েছে কোয়াড জোট। কারণ ভারতকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বাস করতে পারে না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চীনা বিশেষজ্ঞের বরাত দিয়ে গ্লোবাল টাইমস বলছে, যেসব দেশের পারমাণবিক অস্ত্র আছে, তাদের পারমাণবিক সাবমেরিনও আছে। সুতরাং অস্ট্রেলিয়ার পরমাণু অস্ত্র না চাওয়ার প্রতিশ্রুতি অর্থহীন।

তিনি বলেন, এটি অস্ট্রেলিয়াকে পারমাণবিক হামলার সম্ভাব্য টার্গেটে পরিণত করবে। কারণ চীন ও রাশিয়ার মতো পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলো এখন অস্ট্রেলিয়ার পারমাণবিক সাবমেরিনের হুমকির মুখে থাকবে, যা যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত উদ্দেশ্য পূরণ করবে। ওই চীনা বিশেষজ্ঞের আশঙ্কা, মার্কিন মিত্র যেকোনো দেশ যেকোনো সময় পারমাণবিক অস্ত্র হাতে পেতে পারে এবং তা ব্যবহারও করতে পারে।

Get the latest world news from our trusted sources. Our coverage spans across continents and covers politics, business, science, technology, health, and entertainment. Stay informed with breaking news, insightful analysis, and in-depth reporting on the issues that shape our world.

360-degree view of the world's latest news with our comprehensive coverage. From local stories to global events, we bring you the news you need to stay informed and engaged in today's fast-paced world.

Never miss a beat with our up-to-the-minute coverage of the world's latest news. Our team of expert journalists and analysts provides in-depth reporting and insightful commentary on the issues that matter most.