আফগানিস্তানের সামরিক ঘাঁটি পরিদর্শনে চীন, উদ্বিগ্ন ভারত

আফগানিস্তান থেকে মার্কিন সেনাদের চূড়ান্ত প্রস্থানের পর থেকে দেশটি নিয়ে প্রতিবেশী কয়েকটি দেশের ব্যাপক আগ্রহ দেখা গেছে। এর মধ্যে গত সপ্তাহে চীনের একটি প্রতিনিধি দল আফগানিস্তানের অন্যতম বৃহৎ সামরিক ঘাঁটি বাগরাম বিমানঘাঁটি পরিদর্শন করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ভারত উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। যদিও চীনের প্রতিনিধি দলটির এ পরিদর্শনের সুস্পষ্ট কোনো কারণ জানা যায়নি। তবে ভারত মনে করছে, চীন তালেবান ও পাকিস্তানের সহযোগিতায় সেখানে কোনো গোয়েন্দা সুবিধা স্থাপন করতে চায়। নিউজএইটিনের এক প্রতিবেদনে এ খবর দেয়া হয়েছে।

আফগানিস্তানের বাগরাম বিমানঘাঁটি

ভারতের সরকারি সূত্র বলছে, চীনের প্রতিনিধি দলের বাগরাম সফর ভারতের জন্য গুরুতর উদ্বেগের বিষয়। আমরা চীনা গোষ্ঠীর গতিবিধি যাচাই করছি। যদি তারা সেখানে পাকিস্তানের সাথে কোনো ঘাঁটি খুলে, তাহলে সেটি খুবই গুরুতর একটি ব্যাপার হবে। কারণ তাদের ভাষায়, এটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে আরো উৎসাহিত করবে এবং অঞ্চলটিকে অস্থিতিশীল করে তুলবে।

বলা হচ্ছে, ভারতের উদ্বেগের অন্যতম কারণ হলো, পাকিস্তানের গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই প্রধান ফয়েজ হামিদ এই মাসের শুরুর দিকে রাশিয়া, চীন, ইরান ও তাজিকিস্তানের গোয়েন্দা প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ভারত আশঙ্কা করছে, আফগানিস্তানকে কেন্দ্র করে ওই বৈঠকে সেখানে সন্ত্রাসবাদের উন্নয়নে পূর্ববর্তী আফগান সরকারগুলোর সাথে ভারতের ভূমিকা সম্পর্কেও কথা হয়েছে।

চীনের সাথে নতুন তালেবান প্রশাসনের যোগাযোগ বেশ ঘনিষ্ঠ দেখা গেছে

২০০১ সালে ক্ষমতা থেকে তালেবানকে উৎখাতের পর সেখানে একক আধিপত্য বিস্তার করে যুক্তরাষ্ট্র। ভারত তাদের সহযোগিতায় আফগানিস্তানে নিজেদের অবস্থান দৃঢ় করে। দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যে তারা সেখানে বড় অংকের বিনিয়োগ করে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের নতুন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন আসার পরই তাদের অনেক হিসাব পাল্টে যায়।

আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়ার পর তালেবানের চাপে ওই নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তা বাস্তবায়ন করতে বাধ্য হয়। এর আগেই তালেবান পুরো আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। এরপরই ভারত চাপে পড়ে যায়।

এদিকে চীন শুরু থেকেই তালেবানের সাথে যোগাযোগ রাখতে শুরু করে। ফলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাষ্ট্রটি ভারত থেকে অনেকখানি সুবিধাজনক পর্যায়ে অবস্থান করছে। এমতাবস্থায় আফগানিস্তানে নিজেদের অবস্থান দুর্বল হয়ে যাওয়া এবং দুই চির প্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তান ও চীনের প্রভাব বিস্তারে স্বভাবতই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে ভারত।