ইসরায়েলি আগ্রাসনের দাঁতভাঙা জবাব দেবে ইরান

যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্বশক্তির সঙ্গে ২০১৫ সালে করা পরমাণু চুক্তি পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টার মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে ইসরায়েল আগ্রাসন চালানোর চেষ্টা করলে তা কঠোর হাতে প্রতিহত করা হবে। সম্প্রতি ইসরায়েলের হুমকির জবাবে ইরানের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল মোহাম্মদ রেজা আস্তিয়ানি এ পাল্টা হুমকি দিলেন। তিনি বলেন, ইরানে হামলা করলে ইসরায়েলকে কঠোর জবাব দেওয়া হবে।

ইরানের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল মোহাম্মদ রেজা আস্তিয়ানি

তেহরান টাইমসের খবরে বলা হয়েছে, সম্প্রতি মস্কো সফরের সময় ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়াইর ল্যাপিড ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির জন্য অভিযুক্ত করে বলেন, বিশ্ব যদি ইরানকে না থামায়, ইসরায়েল তা করবে। যত মূল্যই দেয়া লাগুক, ইরানকে পারমাণবিক সক্ষমতা পাওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে।

তবে ইরানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী বলছেন, তাদের প্রতিরক্ষা শক্তি এবং এর প্রযুক্তিগত অগ্রগতি শুধু দেশের সীমান্ত রক্ষার জন্য এবং সম্ভাব্য হুমকি ও আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জবাব দিতে কাজে লাগানো হবে। ইসরায়েলের অযৌক্তিক হুমকির প্রতি কটাক্ষ করে তিনি বলেন, শত্রুরা হতাশার কারণে ফাঁকা আওয়াজ ও অভিযোগের আশ্রয় নিচ্ছে। বিশেষ করে ইসরায়েল পায়ে পাড়া দিয়ে ইরানের সঙ্গে ঝগড়া করেই যাচ্ছে।

ইরানের নতুন প্রতিরক্ষামন্ত্রীর দাবি, ইসরায়েল বরাবরই ইরানি জাতির কাছে পরাজিত হয়েছে এবং ফিলিস্তিনে নিপীড়িত এবং অসহায় নারী ও শিশুদের ওপর তারা আগ্রাসন চালাচ্ছে। সামরিক ও প্রতিরক্ষা অগ্রগতি বজায় রাখতে ইরানের দৃঢ় সংকল্পের কথা ব্যক্ত করে রেজা আস্তিয়ানি বলেন, ইরানের শত্রুরা অযৌক্তিক কোনো পদক্ষেপ নিলেই কঠোর জবাব দেবে তেহরান এবং প্রতিপক্ষকে সব দায় বহন করতে হবে। ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ আনার পরও তা থামাতে ব্যর্থ হয়েছে ইসরায়েল। এজন্য ইরানকে বার বার আক্রমণের হুমকি দিচ্ছে বলে মনে করেন এই প্রতিরক্ষামন্ত্রী।

অপরদিকে, ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সাঈদ খতিবজাদে ইসরায়েলের অভিযোগ তীব্রভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিরুদ্ধে ইসরায়েলের হুমকি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, যেকোনো ইসরায়েলি আগ্রাসনের জবাব দেওয়ার অধিকার ইরানের রয়েছে। তিনি বলেন, অবৈধ পরমাণু অস্ত্রের ওপর বসে ইসরায়েল অবৈধ শাসন চালাচ্ছে। তারাই আবার এনপিটি সদস্য ইরানকে হুমকি দেয়।

২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি করে যুক্তরাষ্ট্রসহ ছয়টি দেশ ও সংস্থা। ২০১৮ সালে ওই চুক্তি থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে প্রত্যাহার করেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জয়েন্ট কমপ্রিহেনসিভ প্ল্যান অফ অ্যাকশন (জেসিপিওএ) নামে পরিচিত এই চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিতে থাকে। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর পুনরায় চুক্তিতে ফেরার প্রক্রিয়া শুরু করেন।