আখুন্দজাদা নিহত, বারাদার জিম্মি!

সময় যত গড়াচ্ছে, আফগানিস্তানের নতুন সরকার নিয়ে আলোচনা ততই তুঙ্গে উঠছে। সরকার গঠন নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘর্ষের খবর চাউর হওয়ার পর এবার সামনে এসেছে তালেবান প্রধান হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদার নিহত হওয়ার জল্পনা। এছাড়া নতুন সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুল ঘানি বারাদারকে জিম্মি করা হয়েছে বলেও খবর দিয়েছে ব্রিটিশ ম্যাগাজিন দ্য স্পেকটেটর।

আবদুল ঘানি বারাদার ও হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা

দ্য স্পেকটেটরের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, দীর্ঘ সময় জনসম্মুখে দেখা যায়নি তালেবান শীর্ষ নেতা হাইবাতুল্লাহ আখুন্দজাদাকে। এ নিয়ে প্রশ্নের মুখে বারবারই তালেবানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শিগশিরই তিনি দেখা দেবেন। তবে সেটা আর বাস্তবে হয়ে ওঠেনি। এবার খবর বেরুলো, তিনি নিহত হয়েছেন!

২০১৩ সালে মোল্লা ওমরের নিহতের খবর বেরিয়ে পড়লে কেউ বিশ্বাস করেনি। দুই বছর পর ২০১৫ সালে জানা গেল, তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা সত্যিই মারা গেছেন। তালেবানও তখন বিষয়টি স্বীকার করে দেয়। এখন আখুন্দজাদার ব্যাপারেও কি সেই একই নাটক মঞ্চস্থ হচ্ছে- প্রশ্ন ব্রিটিশ ম্যাগাজিন দ্য স্পেকটেটরের।

তালেবান সরকারের কয়েকজন সদস্য

বারাদারের জিম্মি হওয়ার ব্যাপারটি নিয়েও বেশ কয়েকদিন ধরেই আলোচনা হচ্ছে। নতুন সরকার গঠন নিয়ে দ্বিমত পোষণের এক পর্যায়ে তাকে ঘুষি মেরে আহত করা হয়েছে বলে খবর বের হয়। জানা গেছে, এরপর তাকে জোর করে কাবুল থেকে বের করে দিয়েছে তালেবানের একটি অংশ। তিনি বর্তমানে কান্দাহারে অবস্থান করছেন। তবে এক ভিডিও বার্তায় আহত হওয়ার খবর উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

বিবিসির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও নতুন সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুল ঘানি বারাদার এবং শরণার্থীবিষয়ক মন্ত্রী খলিল উর রহমান হাক্কানির মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়েছে। সরকার গঠনের প্রশ্নে প্রেসিডেন্সিয়াল প্যালেসে তাদের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। সেখানে থাকা দুজনের অনুসারীরাও বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন।

খলিল উর রহমান হাক্কানি আফগানিস্তানের সশস্ত্র গোষ্ঠি হাক্কানি নেটওয়ার্কের গুরুত্বপূর্ণ নেতা। অন্যদিকে কূটনৈতিকভাবে তালেবানকে এগিয়ে নিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা বারাদারের। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে দোহা চুক্তি হয়েছিল, সেখানেও স্বাক্ষর করেছেন বারাদার। চুক্তির সময় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প একাধিকবার বারাদারের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন।

যুদ্ধের ময়দানে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন খলিল উর রহমান হাক্কানি অন্যদিকে কূটনৈতিকভাবে বড় ভূমিকা বারাদারের। তালেবানের বিজয়ে কৃতিত্ব কার হবে, সেটা নিয়ে দ্বন্দ্বের উৎপত্তি। খলিল উর রহমান হাক্কানি বলছেন, যুদ্ধের মাধ্যমে আমরা দেশ স্বাধীন করেছি। অন্যদিকে বারাদার বলছেন, কূটনৈতিকভাবে যারা তালেবানকে এগিয়ে নিয়েছেন, কৃতিত্ব তাদের।