তালেবানের হাতে অস্ত্র তুলে দিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য

১৯৮০’র দশকে আফগানিস্তানে তালেবানদের অগ্রদূত মুজাহিদিনদের হাতে যে শত শত ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল তা ছিল ইংল্যান্ডের বেলফাস্টে নির্মিত। সোভিয়েত ইউনিয়নের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ব্রিটিশ সরকার তালেবানদের সমর্থন করেছিল। সোভিয়েত ইউনিয়ন দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে তৎকালীন কমিউনিস্ট শাসন চাপিয়ে দিয়েছিল। দ্য ডিটেইলে শুক্রবার (২৪ সেপ্টেম্বর) প্রকাশিত এক নিবন্ধে এসব তথ্য জানানো হয়।

অস্ত্র হাতে তালেবান যোদ্ধা

পূর্ব বেলফাস্টভিত্তিক অস্ত্র উৎপাদনকারী সংস্থা এবং সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (সিআইএ) একটি পরিকল্পনা করে। সেই পরিকল্পনা মোতাবেক মুজাহিদিনদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শত শত এম১৬ রাইফেল ও ব্লোপাইপ ক্ষেপণাস্ত্র। ১৯৯০ সালে প্রকাশিত বিবিসি নিউজনাইটের কূটনৈতিক সম্পাদক মার্ক আরবানের লেখা ‘আফগানিস্তানে যুদ্ধ’ বইতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়। ১৯৮০-এর দশকে মুজাহিদিনদের হাতে ৩০০টিরও বেশি বেলফাস্ট কোম্পানির নির্মিত অস্ত্র সরবরাহ করা হয়েছিল।

ওই সময় আফগান মুজাহিদিনরা সৌদি আরব থেকে ওসামা বিন লাদেনসহ আরব বিশ্বের ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের সাথে মিলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেছিল। আফগানে রাশিয়া হেরে যাওয়ার পর মিখাইল গর্বাচেভ ১৯৮৯ সালে সোভিয়েত সৈন্যদের আফগানিস্তান থেকে সরিয়ে নেন এবং মাত্র কয়েক বছর পরেই রাশিয়ায় কমিউনিস্ট শাসনের পতন ঘটে।

তালেবানের পতাকা

ওই বইতে বলা হয়েছে, সাবেক মুজাহিদিন যোদ্ধাদের নেতৃত্বে ৯০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে তালেবান আনুষ্ঠানিকভাবে গৃহযুদ্ধ অব্যাহত রেখেছিল। দশকের অগ্রগতির সাথে সাথে আফগানিস্তানে তালেবানের আধিপত্য বৃদ্ধি পায়। কিন্তু ৯/১১ এর পর মার্কিন যুক্তরাষ্টে এবং যুক্তরাজ্যের বাহিনী আফগানে যুদ্ধ বাধানোর কয়েকমাসের মধ্যেই তালেবান ভেঙ্গে যায়।

যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য ২০ বছর ধরে আফগানিস্তানে একটি উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি বজায় রাখে। যার শেষ হয় গত ১৫ আগস্ট তালেবান কাবুল দখলের মাধ্যমে।

আফগানিস্তানে পশ্চিমা সামরিক পদক্ষেপের মূল যে কারণ বলা হয়েছিল, তা ছিল ওসামা বিন লাদেন আফগানিস্তানে লুকিয়ে আছেন। কিন্তু আল কায়েদা নেতা ধরা পড়েন পাকিস্তানে। ২০১১ সালে তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয় তিনি আফগানিস্তানে লুকিয়ে ছিলেন না।

সমাজতান্ত্রিক যুদ্ধবিরোধী প্রচারক ইমন ম্যাকক্যান বলছেন, আমরা সবাই জানি, মুজাহিদিনরা পশ্চিমের অস্ত্র দ্বারা সজ্জিত ছিল। পশ্চিমারাই ওসামা বিন লাদেনকে সহায়তা করেছিল। তাহলে প্রশ্ন জাগে ৯/১১ এর হামলায় ওসামা বিন লাদেন জড়িত কোন যুক্তিতে। সেক্ষেত্রে ‘ওই হামলা তো পশ্চিমারাই করেছে’ তালেবানের এই অভিযোগ যুক্তিপূর্ণ ছিল।