মমতার উপনির্বাচন: ভোট রাজ্যের, নজর পুরো দেশের

ছয় মাস আগেই নির্বাচনে জিতে সরকার গঠন করেছে তার দল তৃণমূল কংগ্রেস। বিপুল জয়ের জেরে ভাঙন লেগে গেছে প্রতিপক্ষ বিজেপির স্থানীয় শাখায়। এ অবস্থায় সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা থাকায় নির্বাচনে লড়তে হচ্ছে মমতা ব্যানার্জিকে। ‘অনেকটা অগুরুত্বপূর্ণ’ এই নির্বাচন মমতার জন্য হয়ে উঠেছে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গুরুত্বের সাথে নিতে বাধ্য হচ্ছে কেন্দ্রের সরকার বিজেপিও। কারণ মমতা এখন রাজ্য ছাড়িয়ে জাতীয় নেত্রী হতে চাচ্ছেন। ফলে নিজ এলাকাতে তার অবস্থান কেমন, তা দেখতে উৎসুক পুরো দেশ। আজ বৃহস্পতিবার ভোটগ্রহণ হলেও চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করা হবে ৩ অক্টোবর।

ভাষণ দিচ্ছেন মমতা, ফাইল ছবি

পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর ভাগ্যনির্ধারণী ভোট গ্রহণ চলছে। দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর আসন থেকে উপনির্বাচনে লড়ছেন এই নেতা। গত বিধানসভা নির্বাচনে তার দল বড় ব্যবধানে জিতলেও হেরে যান মমতা। তারপরও ‘শর্তসাপেক্ষে’ মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। শর্ত হল, মুখ্যমন্ত্রীর পদে থাকতে হলে ছয় মাসের মধ্যে কোনো একটি আসন থেকে জিতে আসতে হবে। না জিতলে পদে থাকা হবে না তার। ভবানীপুর আসনে মমতার বিরুদ্ধে লড়ছেন বিজেপির তরুণ নেতা প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল। আরো আছেন সিপিআইএম প্রার্থী আইনজীবী শ্রীজীব বিশ্বাস।

গত বিধানসভা নির্বাচনে ভবানীপুর আসনে জয়ী হয়েছিলেন রাজ্যের কৃষিমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। পরে তিনি পদত্যাগ করলে আসনটি শূন্য হয়। ডাকা হয় উপনির্বাচন। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মূলত মমতাকে ভবানীপুর থেকে জেতানোর লক্ষ্যেই শোভনদেব পদত্যাগ করেন।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী

বিশ্লেষকরা বলছেন, উপনির্বাচনে জয়ের হাওয়া মমতার দিকেই। কারণ তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হওয়ায় ভবানীপুর তথা পশ্চিমবঙ্গে তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি বেশ ভালোই। তারওপর এই কেন্দ্রের সুবিধা অন্যখানে। এখানকার মুসলমান ভোটার ২২ শতাংশ, তাদের প্রায় সবাই কট্টর বিজেপিবিরোধী। ১২ শতাংশ আছে অবাঙালি ভোটার। এদের মধ্যে পাঞ্জাবি ও দক্ষিণ ভারতীয়রা অধিকাংশই মমতার সমর্থক। এ আসনের আটটি ওয়ার্ডের মধ্যে ছয়টিতে গত নির্বাচনে জিতেছিলেন শোভনদেব। কিন্তু আজকের নির্বাচনে আটটি ওয়ার্ডেই মমতা অনেক বেশি মার্জিন নিয়ে জিতবেন বলে দাবি করছেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।

মমতার জয় নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই তৃণমূল নেতারা শতভাগ আত্মবিশ্বাসী। দুই সপ্তাহ আগেই দলের বিধায়ক ও সাবেক মন্ত্রী মদন মিত্র বলে রেখেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এত ভোটে জয়ী হবেন যে আগামী ৫০ বছর কেউ তৃণমূলের বিরুদ্ধে প্রার্থী দিতে পারবে না। তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী সুজাতা মণ্ডল মনে করেন, প্রিয়াঙ্কা ভবানীপুরে মমতার কাছে এমনভাবে হারবেন যে, এই বিজেপি প্রার্থীর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে।