আকাশসীমা লঙ্ঘন: যুক্তরাষ্ট্রকে কড়া হুঁশিয়ারি তালেবানের

খারাপ কোনো কিছু ঘটা ঠেকাতে হলে আফগান আকাশসীমা লঙ্ঘন বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে তালেবান প্রশাসন। গতকাল বুধবার কাবুল থেকে জারি করা এক বিবৃতিতে সরকারের মুখপাত্র জবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে মার্কিন ড্রোন হামলা জাতীয় নিরাপত্তার লঙ্ঘন। দ্য ডন।

জবিউল্লাহ মুজাহিদ

মুজাহিদ বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা চালানোর ক্ষেত্রে আফগানিস্তানের আকাশসীমা লঙ্ঘন করেছে, যা আন্তর্জাতিক অধিকার ও আইনের বিরোধী। সংঘাত শেষ করতে চাইলে ওয়াশিংটনকে অবশ্যই এসব কাজ বন্ধ করতে হবে।

তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে প্রত্যেকটি দেশ তাদের আঞ্চলিক ও আকাশসীমার সার্বভৌমত্বের মালিক। অতএব, আফগানিস্তানের একমাত্র আইনি সত্তা হিসেবে ইসলামিক আমিরাত দেশটির ভূমি ও আকাশসীমার তত্ত্বাবধায়ক। এ অবস্থায় আমরা যুক্তরাষ্ট্রসহ সব দেশের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি, আফগানিস্তানকে আন্তর্জাতিক অধিকার, আইন এবং অঙ্গীকারের আলোকে বিবেচনা করুন। পারস্পরিক সম্মান ও প্রতিশ্রুতির বিষয়টিও বিবেচনা করুন, যাতে কোনো নেতিবাচক পরিণতি না ঘটে।

মার্কিন ড্রোন

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দেয়, প্রয়োজনে আগের মতো সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে আফগানিস্তানে ড্রোন হামলা চালাবে। এর জবাবে জবিউল্লাহ মুজাহিদ আফগানিস্তানকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করে উপরোক্ত সতর্ক বার্তা দেন।

গত আগস্ট মাসে তালেবান কাবুল দখল করে নেয় এবং সেপ্টেম্বরের শুরুতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণা করে। এর আগে ২০ বছর আফগানিস্তানে অবস্থানকালে যুক্তরাষ্ট্র অসংখ্যবার ড্রোন-বিমান হামলা চালিয়েছে। অনেকবার তারা কেবল ধারণার বশবর্তী হয়ে বেসামরিক লোকজনকে হত্যা করেছে। অনেক ক্ষেত্রে সেগুলোকে ফ্রেন্ডলি ফায়ার বলে পার পেয়ে গেছে। আবার কোথাও সমবেদনা ও ক্ষমা চেয়ে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।

আফগানিস্তান ত্যাগের মাত্র একদিন আগেও তারা ড্রোন হামলা চালিয়ে শিশুসহ ১০ জনকে হত্যা করে। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করেছিল, এরা আইএসের সদস্য।

কিন্তু পরে ব্যাপক চাপের মুখে তারা ঘোষণা দেয়, হামলাটি ভুল জায়গায় পরিচালিত হয়েছিল এবং প্রধান অভিযুক্ত ব্যক্তি তাদের সরকারের পক্ষেই কাজ করতো। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্র ওই হামলার ব্যাপারে সমবেদনা জানায় এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে। তবে নিহতদের আত্মীয়স্বজনরা এটিকে যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে বিচার দাবি করে।