আসল ‘সিনাই পর্বত’ আবিষ্কারের দাবি!

বাইবেলে উল্লিখিত অন্যতম পবিত্র স্থান সিনাই পর্বত খুঁজে পাওয়ার দাবি করেছেন প্রত্নতত্ত্ব গবেষকরা। বাইবেলের প্রত্নতাত্ত্বিক সংগঠন দ্য ডাউটিং থমাস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের গবেষকরা এ দাবি করেছেন। সিনাই পর্বত হিসেবে আগে যেটিকে ধারনা করা হয়েছিল, নতুন স্থানটি সেখান থেকে কয়েক মাইল দূরে অবস্থিত। নিউইয়র্ক পোস্ট এ খবরটি দিয়েছে।

সিনাই পর্বত

বাইবেলের ওল্ড টেস্টামেন্ট অনুসারে মোজেস (কুরআন অনুসারে মুসা) ইসরায়েলিদের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন একটি পর্বতে যা ধোঁয়া, আগুন এবং বজ্রপাতের মধ্যে আবৃত ছিল। ওই পর্বতের শীর্ষে উঠে ঈশ্বরের কাছ থেকে মোজেস দশটি আদেশ পেয়েছিলেন। এখন সিনাই পর্বত হিসেবে ‘জাবাল মাকলা’ বা মাকলা পর্বতকে মনে করা হয়।

স্থানটিকে ইহুদি, খ্রিস্টান এবং ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা অন্যতম পবিত্র স্থান মাউন্ট সিনাই হিসেবে গণ্য করে থাকে। এই জাবাল মাকলা উত্তর-পশ্চিম সৌদি আরবের জাবাল আল-লজ পর্বতশ্রেণিতে অবস্থিত।

মাউন্ট সিনাইয়ের একটি অংশ

দ্য ডাউটিং থমাস রিসার্চ ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট রায়ান মাউরো বলেন, মিশরের সিনাই উপদ্বীপে সিনাই পর্বতের অবস্থান বলে বাইবেলের যে রেকর্ড পাওয়া গেছে, তার কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কিন্তু আরব উপদ্বীপে গেলে বাইবেলের বিবরণের সাথে অবিশ্বাস্যভাবে স্থানটির মিল খুঁজে পাওয়া যায়।

সূর্যের তাপ বা আগুনে জাবাল মাকলার চূড়াগুলো ঝলসে কালো হয়ে গেছে। এটি নুয়েবা সৈকতের কাছে, যেখানে বিজ্ঞানীরা পানির নিচে স্থলপথ খুঁজে পেয়েছেন। মাউরো মনে করেন, এখানেই মোজেস ও তার অনুসারীদের জন্য সমুদ্রের পানি ভাগ করে পথ তৈরি করে দিয়েছিলেন ঈশ্বর।

বলা হচ্ছে, রথে করে মিশরীয়রা ইসরায়েলি ও মোজেসকে অনুসরণ করেছিল। যখন ইসরায়েলিরা পথ পেরিয়ে ওপারের ভূমিতে পৌঁছেছিল, তখন সমুদ্র তাদের গ্রাস করেছিল। সুইডিশ বিজ্ঞানী ড. লেনার্ট মোলারের মতে, এই এলাকায় প্রবালের মধ্যে একটি রথের আকৃতি পাওয়া গিয়েছিল যেটির ধাতু ও কাঠ অনেক আগেই ভেঙ্গে গেছে।

গবেষকদের দাবি, মরুভূমির মাঝে থাকা সত্ত্বেও সমুদ্র সৈকত থেকে সম্ভাব্য মাউন্ট সিনাই যাওয়ার পথে একটি বড় শিলা রয়েছে। মাউরো বলছেন, আমরা বিশ্বাস করি এই শিলাটি সেই পাথর হতে পারে যার আঘাতে ঈশর সমুদ্রের পানি বিভক্ত করে দিয়েছিলেন ইসরায়েলিদের পথ তৈরির জন্য।

বিশেষজ্ঞরা এমন একটি জায়গাও আবিষ্কার করেছেন যা পাহাড়ের পাদদেশে একটি বেদী হিসেবে মনে হয়েছে। সিনাই পর্বতের পাদদেশে মোজেসের তৈরি এরূপ একটি বেদীর কথার জানা যায়।

এছাড়া প্রত্নতত্ত্ব গবেষকরা কাছাকাছি স্থানে একটি সমাধিক্ষেত্র পেয়েছেন। যেটিকে মাউরো মনে করেন, এখানে বাছুরের উপাসকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের আঘাত করেছিলেন মোজেস। পাহাড়ের কাছাকাছি এই স্থানটিতে ষাড় ও গরুর উপাসনাকারী লোকদের চিত্র খোদাই করা আছে।