সোলাইমানি হত্যাকাণ্ড নিয়ে নতুন তথ্য

ইরানের ইসলামিক বিপ্লবী গার্ডের কুদস বাহিনীর প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল কাসেম সোলাইমানি হত্যায় যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোন হামলার পাশাপাশি যুক্তরাজ্যের একটি গোপন গোয়েন্দা ঘাঁটির যুক্ত থাকার অভিযোগ পাওয়া গেছে। একটি নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, ঘাঁটিটি জেনারেল কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পাশাপাশি আরো কিছু বিতর্কিত হত্যাকাণ্ডেও জড়িত ছিল।

জেনারেল কাসেম সোলাইমানি

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের এক রিপোর্টে বলা হয়, ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্স পরিচালিত মেনউইথ হিল গোয়েন্দা ঘাঁটি থেকে প্রাপ্ত তথ্য ব্যবহার করেই কাসেম সোলাইমানিকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ‘মেনউইথ হিল ইন থ্রিডি, ডোমস, ডেটা অ্যান্ড ড্রোন স্ট্রাইকস’ শিরোনামের এক গবেষণায় এ তথ্য জানানো হয়।

গবেষণায় আরো বলা হয়, মেনউইথ হিল মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার (এনএসএ) একটি বিদেশি ফাঁড়ি হিসেবে কাজ করছে। এ ঘাঁটির ব্রিটিশ কর্মীরা ইয়েমেন, পাকিস্তান ও সোমালিয়ায় মার্কিন ড্রোন হামলায় সহায়তা করছে কি না, সে প্রশ্নও তোলা হয় গবেষণায়।

ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ারফোর্স পরিচালিত মেনউইথ হিল গোয়েন্দা ঘাঁটি

গত বছরের শেষদিকে, ইরানের বিচার বিভাগের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা দাবি করেছিলেন, ব্রিটিশ নিরাপত্তা পরিষেবা সংস্থা জিএস-৪ জেনারেল সোলাইমানি হত্যার সাথে যুক্ত ছিল। তেহরানের প্রসিকিউটর আলী আলকাসিমেহর বলেছিলেন, কোম্পানির এজেন্টরা বাগদাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্রবেশের সাথে সাথে জেনারেল সোলাইমানি এবং তার সফরসঙ্গীদের তথ্য যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করে। এর ওপর ভিত্তি করে যুক্তরাষ্ট্র ড্রোন হামলা চালিয়ে সোলাইমানিকে হত্যা করে।

জেনারেল সোলাইমানি ইরাক সরকারের আনুষ্ঠানিক আমন্ত্রণে বাগদাদ সফর করছিলেন। যখন তিনি নিহত হন, তখন তার ইরাকি ট্রেঞ্চমেট আবু মাহদি আল-মুহান্দিস, পপুলার মোবিলাইজেশন ইউনিটের ডেপুটি হেড এবং তাদের সঙ্গীরা সাথে ছিলেন।

জেনারেল সোলাইমানির হত্যার প্রসঙ্গে ওই গবেষণায় বলা হয়, কাসেম সোলাইমানির হত্যাকাণ্ড যুক্তরাজ্য ও মেনউইথ হিলকে একটি যুদ্ধের হুমকির মধ্যে নিয়ে গেছে, যা অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়।

গবেষণায় আরো অভিযোগ করা হয়, মেনউইথ হিলে মার্কিন এবং যুক্তরাজ্যের বাহিনী জনসাধারণের যাচাই-বাছাই এবং জবাবদিহিতার বাইরে কাজ করে। মেনউইথ হিলের গোয়েন্দা কর্মসূচিগুলো ইয়েমেনে জনগণকে ‘নির্মূল’ করার অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। 

মার্কিন হুইসেল ব্লোয়ার এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস হওয়া ফাইল অনুসারে, বেসটি একটি ইভসড্রপিং নেটওয়ার্কের অংশ, যা প্রতিদিন কয়েক মিলিয়ন ইমেইল ও ফোন কল এবং ফোনগুলোর অবস্থান চিহ্নিত করে তথ্য সংগ্রহ করতে সক্ষম। এটি এনএসএ’র সবচেয়ে বড় বিদেশি সাইট, যেখানে ৬০০ মার্কিন কর্মী এবং ৫০০ ব্রিটিশ বেসামরিক নাগরিক রয়েছেন।