অবশেষে স্বশরীরে কাবুলে ফিরলেন মোল্লা বারাদার

তালেবান সরকার গঠনের পরপরই অন্তর্দ্বন্দ্বে গুলিবিদ্ধ হয়ে মোল্লা আবদুল গনি বারাদারের মৃত্যু হয়েছে বলে গুজব ছড়িয়ে পড়ে। এমন অবস্থায় প্রায় একমাস পর গতকাল মঙ্গলবার রাজধানী কাবুলে ফিরলেন তিনি। মোল্লা বারাদার তালেবানের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং নতুন সরকারের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী।

ম্যাপে আফগানিস্তান

গোয়েন্দা সংস্থার বরাতে আজ বুধবার হিন্দুস্তান টাইমস জানায়, গুজবের মধ্যে একমাস কান্দাহারে থেকে কাবুলে ফিরেছেন বারাদার। তিনি প্রেসিডেন্ট প্যালেস ও রাষ্ট্রপতির আবাসিক ভবনে অবস্থান করছেন। এ সময় তার সঙ্গে নিজস্ব নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে।

ভারতীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, কাবুলে পৌঁছানোর পর বারাদারের নিরাপত্তায় সরকারি নিরাপত্তা বাহিনীর একদল সদস্য পাঠানো হয়। তবে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সিরাজউদ্দিন হাক্কানির এসব কর্মীকে ফিরিয়ে দেন বারাদার। নিজস্ব নিরাপত্তা রক্ষী থাকায় সরকারি বাহিনীর প্রয়োজন নেই বলে জানান তিনি।

এদিকে, গতকালই বারাদারসহ নতুন সরকারের তিন শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে প্রথমবার কাবুলে বৈঠক করেন ব্রিটিশ বিশেষ দূত সাইমন গাস। রয়টার্স ও এএফপি জানায়, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের আফগান বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি সাইমন গাস। তিনি ছাড়া বাকি দুই তালেবান নেতা হলেন- আফগান দ্বিতীয় উপ-প্রধানমন্ত্রী আবদুস সালাম হানাফি ও ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকী।

এর আগে গত মাসে আফগান প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে হাক্কানি নেটওয়ার্কের নেতাদের সঙ্গে ঝগড়া হয় বারাদারের। এ সময় তিনি গুলিবৃদ্ধ হন বলে বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। তবে সেই খবর উড়িয়ে দিয়ে একাধিকবার বক্তব্য রেখেছেন বারাদার, তালেবানের পক্ষ থেকেও নাচক করা হয়েছে ওই খবরটি।

তাতে মৃত্যুর গুজব বন্ধ না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত গণমাধ্যমে ভিডিও সাক্ষাৎকার দিতে বাধ্য হন মোল্লা আবদুল গনি বারাদার। এতে তিনি বলেন, তালেবানে অন্তর্দ্বন্দ্বের বিষয়টি সত্য নয়, আমিও ঠিক ও সুস্থ আছি। কাবুলের বাইরে থাকায় ইন্টারনেটে প্রবেশ করতে না পারায় ভুয়া খবরের বিষয়ে জানানো সম্ভব হয়নি।

প্রসঙ্গত, আফগানিস্তান ইস্যুতে দীর্ঘ আলোচনা শেষে গত বছর কাতারের রাজধানী দোহায় তালেবানের সঙ্গে শান্তি চুক্তি সই করে যুক্তরাষ্ট্র। ওই চুক্তির আওতায় চলতি বছরের ৩১ আগস্টের মধ্যে আফগান ছেড়ে যায় সব মার্কিন সেনা। এর মধ্যেই একের পর এক এলাকা দখল করে ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান।

সংগঠনটি আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফেরার মধ্য দিয়ে শেষ হয় দুই দশকের দীর্ঘ যুদ্ধ, দ্রুত কাবুল ছেড়ে যায় পশ্চিমা সকল সেনা। ২০০১ সালে মার্কিন নেতৃত্বাধীন আগ্রসনে ক্ষমতাচ্যুত হয়েছিল তৎকালীন তালেবান সরকার।