পাকিস্তানে ভয়াবহ ভূমিকম্পে নিহত ২০, আহত ৪শ

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে আজ বৃহস্পতিবার ভোরে শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এতে প্রায় ২০ জন নিহত এবং ৪শর বেশি গুরুতর আহত হয়েছেন বলে সরকারি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। ৫ দশমিক ৭ মাত্রার অগভীর ভূমিকম্পের পর ছাদ ও দেয়াল চাপায় অনেকে নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার ভোরে বেলুচিস্তানে আঘাত হানে শক্তিশালী ভূমিকম্প

বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যকর্মীরা টর্চের সাহায্যে আহতদের চিকিৎসা করেন। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ জানাচ্ছে, ভূমিকম্পটি প্রায় ২০ কিলোমিটার গভীরতায় ভোর ৩টার দিকে আঘাত হানে। বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক রাজধানী কোয়েটাতেও কম্পন অনুভূত হয়। এপির বরাত দিয়ে খবরটি দিয়েছে জাপান টাইমস।

বেলুচিস্তান সরকারের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সুহেল আনোয়ার হাশমি জানান, নিহতদের মধ্যে একজন নারী ও ছয় শিশু রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় উদ্ধার কাজ চলছে। প্রাদেশিক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মীর জিয়া উল্লাহ লাঙ্গাউ ২০ জন নিহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বেলুচিস্তানের প্রাদেশিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের প্রধান নাসির নাসার বলেন, ২০ জনের মতো নিহত হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।

ঘর ছেড়ে সড়কে অবস্থান নিয়েছে এলাকাবাসী

খবরে বলা হচ্ছে, বেলুচিস্তানের দুর্গম পাহাড়ি শহর হরনাই সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেখানার পাকা রাস্তা ও বিদ্যুৎ লাইনে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। মোবাইল ফোন নেটওয়ার্কও বিঘ্ন ঘটায় উদ্ধার অভিযানও ব্যাহত হচ্ছে। ভূমিকম্পের ফলে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। স্বাস্থ্যকর্মীরা সরকারি হাসপাতালে আলো ছাড়াই চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন।

সরকার পরিচালিত হরনাই হাসপাতালের সিনিয়র কর্মকর্তা জহুর তারিন বলেন, আমরা টর্চ এবং মোবাইল ফ্ল্যাশলাইটের সাহায্যে বিদ্যুৎ ছাড়াই কাজ করছি। আহতদের অধিকাংশই হাত-পা ভাঙা ছিল। শত শত মানুষকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ফেরত পাঠানো হয়েছে। গুরুতর আহত প্রায় ৪০০ জনকে অ্যাম্বুলেন্সে কোয়েটায় পাঠানো হয়েছে।

ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, পাকিস্তান সীমান্তের ওই এলাকায় ভারতীয় ও ইউরেশীয় টেকটনিক প্লেট মিলিত হয়েছে। তাই অঞ্চলটি সর্বদা ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে থাকে। ২০১৫ সালের অক্টোবরে ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পে পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দুর্গম এলাকায় ৪০০ মানুষ নিহত হয়। রাস্তাঘাট ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় ত্রাণ সরবরাহ ও উদ্ধারকাজে বাধার সৃষ্টি হয়েছিল।

২০০৫ সালের ৮ অক্টোবর ৭ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্পে ৪৩ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়। গৃহহীন হয় প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ। ওই ভূমিকম্পে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আজাদ কাশ্মির।