তেলের দাম বৃদ্ধি: অর্থমন্ত্রীর বক্তব্যের বিপরীত সিপিডি

সম্প্রতি ডিজেল-কেরোসিনের দামবৃদ্ধিকে ‘অযৌক্তিক’ আখ্যায়িত করে তা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ, সিপিডি। তবে জনগণের ওপর মূল্যবৃদ্ধির এই চাপকে ‘যৌক্তিক’ আখ্যা দিয়ে তা থেকে সরে না আসার কথা জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। আজ বুধবার পরস্পরবিরোধী এমন মতামত ব্যক্ত করা হয়েছে।

সিপিডি ও আ হ ম মুস্তফা কামাল

জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে এদিন সংবাদ সম্মেলন করে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডি। এসে প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন, সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান ও গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম উপস্থিত ছিলেন।

তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক দৃষ্টিতে যুক্তিসংগত নয় উল্লেখ করে ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, এটি সরকারের নীতির সঙ্গে সাংঘর্ষিক, নৈতিকভাবে গ্রহণযোগ্য নয় এবং রাজনৈতিকভাবে আলোচিত সিদ্ধান্ত নয়। মূল প্রবন্ধে ফাহমিদা খাতুনও একই ধরনের কথা বলেন এই ইস্যুতে। এতে বলা হয়, তেলের দামবৃদ্ধি করোনাকালে সামগ্রিক অর্থনীতি ও মানুষের জীবনযাত্রায় চাপ সৃষ্টি করবে। তেলের দাম ২৮ শতাংশ বাড়ানোর পর বাসের ভাড়া বেড়ে গেছে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত। অন্যায্য এই পদক্ষেপ থেকে সরে আসার সুপারিশ করেছে সিপিডি।

সিপিডির ব্রিফিং

এদিন অর্থনৈতিক বিষয়ক ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ভার্চ্যুয়াল এক বৈঠক শেষে এ বিষয়ে কথা বলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এ সময় প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দামবৃদ্ধি পুরোপুরি যৌক্তিক। সরকার কোথা থেকে টাকা পাবে? রেভিনিউ অর্জন করেই কাজ করতে হয়, যতটা সম্ভব সামঞ্জস্য করে দেয় সরকার।

নিজের মতের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, তেলের দাম কি সরকার বাড়িয়েছে? কোনো জাহাজে করোনা আক্রান্ত থাকলে জাহাজটি কোয়ারেন্টাইনে পাঠানো হয়। মাসের পর মাস সাগরে আটকে থাকছে জাহাজ। এসবের চার্জ শিপিং কোম্পানিকে দিতে হয়, যা একত্রে আমরা পাই।

তবে তেলের দাম বাড়ায় জনজীবনের ওপর চাপ পড়ার কথা স্বীকার করে তিনি আরো বলেন, সরকার কত বহন করতে পারে। ভোক্তাদেরও কিছুটা বহন করতে হবে। তবে যে পরিমাণ বাড়বে তা যেন ভোক্তারা সহ্য করতে পারেন, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখা হবে।

প্রসঙ্গত, গত ৩ নভেম্বর হঠাৎ করে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ১৫ টাকা বাড়িয়ে দেয় সরকার, যা ওই দিন রাত ১২টা থেকে কার্যকর হয়। এর প্রতিবাদে গত ৫ নভেম্বর সকাল ৬টা থেকে সারাদেশে বাস ও ট্রাক ধর্মঘট শুরু করেছে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা। তিন দিন পর তাদের দাবি মেনে নিয়ে বাস ও লঞ্চের ভাড়া বাড়ানোর ঘোষণা দেয় সরকার।