আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ দেখবে কাতার

দুই দশকের আগ্রাসনের ইতি ঘটিয়ে আফগানিস্তান থেকে তল্পিতল্পা গুটিয়ে চলে গেছে যুক্তরাষ্ট্র। এরপর থেকে তালেবানকে ঠেকাতে নানা ধরনের প্রতিবন্ধকতা তৈরি করেছে দেশটি। এমনকি আফগানিস্তানের রিজার্ভও আটকে দেওয়া হয়। আটকে দেয় বিভিন্ন সহযোগিতামূলক তহবিলও।

যৌথ ঘোষণা দিচ্ছেন মার্কিন ও কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

তালেবান প্রশাসনকে তারা স্বীকৃতিও যুক্তরাষ্ট্র। তবে এবার আফগানিস্তানের নতুন সরকারের সাথে কাজ করার দিকে অগ্রসর হচ্ছে তারা। এই লক্ষ্যে কাতারের সাথে আগাম একটি চুক্তি সম্পন্ন করা হয়েছে। চুক্তিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক স্বার্থ রক্ষা করবে কাতার। রয়টার্স।

গত আগস্টে সেনা প্রত্যাহারের মুখে আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখল করে তালেবান। ১৫ আগস্ট প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেলে প্রেসিডেন্ট প্যালেস দখল করে নেয় তারা। দুই সপ্তাহ পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করে। কিন্তু আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে অসহযোগিতার কারণে এরই মধ্যে দেশটিতে অর্থনৈতিক বিপর্যয় দেখা দিতে শুরু করেছে। আসন্ন শীতে এই অবস্থা ভয়াবহ আকার ধারণ করবে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা।

আবারো আফগানিস্তানে ফিরছে যুক্তরাষ্ট্র

এ অবস্থায় আবারো আফগানিস্তানে ফিরতে চাইছে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু পরিস্থিতি যে আগের মতো নেই তা জানে ওয়াশিংটন। ফলে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন গতকাল শুক্রবার কাতারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন আব্দুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। জানা গেছে, ওই বৈঠকে চুক্তিটি সই হয়েছে, কার্যকর হবে আগামী ৩১ ডিসেম্বরের পর।

ব্লিংকেন বলেন, আফগানিস্তানে কাতারের কিছু কর্মকর্তা নিজেদের দূতাবাসেই যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক কার্যক্রম দেখভাল করবেন। তারা সীমিত পরিসরে পাসপোর্ট আবেদন গ্রহণ, জরুরি সহায়তা প্রদান, তথ্য প্রদান ইত্যাদি সেবা দেবেন। এছাড়া কাবুলে মার্কিন কূটনৈতিক সুবিধার নিরাপত্তা ও সুরক্ষার দায়িত্বও নেবে কাতার।

অবশ্য এটাই প্রথম নয়, যেখানে কূটনৈতিক প্রতিনিধিত্ব নেই সেখানেই যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য সুরক্ষামূলক চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- ইরানের জন্য সুইজারল্যান্ড, উত্তর কোরিয়ার জন্য সুইডেন এবং সিরিয়ার জন্য চেক প্রজাতন্ত্র।

আফগানিস্তান থেকে সরে আসার পর যুক্তরাষ্ট্রের জন্য কূটনীতি এবং স্থানান্তর- উভয় ক্ষেত্রেই প্রধান ভূমিকা পালন করেছে কাতার। গত কয়েকমাসে প্রায় সোয়া লাখ পশ্চিমা এবং পশ্চিমা-মিত্রের মধ্যে অর্ধেকই কাতারের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছান।

কাতার এর আগে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র এবং তালেবানের মধ্যে আলোচনার হোস্ট হিসাবে ভূমিকা পালন করেছিল। সেই আলোচনার মাধ্যমেই সেনা প্রত্যাহারের চুক্তিতে সই করে যুক্তরাষ্ট্র। তালেবান দখলের পর থেকে কাবুলে মার্কিন দূতাবাসের কার্যক্রমও কাতারে স্থানান্তরিত করা হয়।