তালেবানকে মেনে নিচ্ছে বিশ্ব

তালেবান সরকার গঠন করেছে প্রায় তিন মাস হতে চললো। এখন পর্যন্ত কোনো দেশ এই সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি, এমনকি সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ মিত্র বলে পরিচিত পাকিস্তানও। বিষয়টিকে অনেকেই আফগানিস্তানের নতুন সরকারের জন্য উদ্বেগের বিষয় হিসেবে দেখছে। তবে তালেবান কর্তৃপক্ষ দাবি করছে, ধীরে ধীরে তালেবানকে মেনে নেয়ার পথেই এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন।

কাতারে তালেবান সরকারের প্রতিনিধিরা, ফাইল ছবি

তালেবান সরকার গঠনের পর থেকেই তাদেরকে স্বীকৃতি দিতে পাকিস্তান অব্যাহতভাবে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে। পরে কাতারও বিশ্ববাসীর প্রতি এমন অনুরোধ জানিয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ স্বীকৃতি না দিলেও তিন মাসের কম সময়ের মধ্যেই অনেক দেশের রাষ্ট্রদূত বা প্রতিনিধি তালেবান প্রতিনিধিদের সথে সাক্ষাত করেছেন।

এর মধ্যে কারো সাথে কাবুলে, আবার কারো সাথে কাতারের রাজধানী দোহায় সাক্ষাত হয়েছে। মার্কিন বিশেষ প্রতিনিধি টমাস ওয়েস্টও পাকিস্তান, রাশিয়া ও চীনের শীর্ষ কূটনীতিকদের সাথে এই মাসের শুরুতে ইসলামাবাদে ভারপ্রাপ্ত আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকির সাথে দেখা করেছিলেন। বিদেশি প্রতিনিধিদের সাথে হওয়া এসব সাক্ষাতের বেশিরভাগই সফল হয়েছে বলে দাবি তালেবানের।

আবদুল গনি বারাদারসহ তালেবানের অন্য প্রতিনিধিরা, ফাইল ছবি

আশরাফ ঘানি সরকারের পতনে অনেক দেশই কাবুলে তাদের দূতাবাস বন্ধ করে দিয়েছিল। এখন আবার কিছু কিছু দেশ দূতাবাস পুনরায় চালুর পথে হাঁটছে। এ পর্যন্ত ১৫টিরও বেশি দেশ কাবুলে দূতাবাস চালু করেছে। যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি কাবুলে তাদের দূতাবাস চালু না করলেও কাতারের সাথে এ ব্যাপারে একটি চুক্তি করেছে। চুক্তি অনুযায়ী কাতার কাবুলে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ দেখবে। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্র আবারো কাবুলের ব্যাপারে আগ্রহী হয়ে উঠেছে।

ইউরোপের বেশ কিছু দেশ সাহায্য-সহযোগিতা নিয়ে তালেবান সরকারের পাশে দাঁড়াচ্ছে। আফগানিস্তানের মানবিক সংকট মোকাবেলায় তারা তালেবান কর্তৃপক্ষকে সাহায্য করতে রাজি হয়েছে। তাদের আশঙ্কা, অর্থের কারণে যদি আফগানিস্তানের পরিস্থিতি খারাপের দিকে মোড় নেয়, তাহলে আফগানরা শরণার্থী হয়ে এসব দেশেই প্রবেশ করতে চাইবে, যাতে দেশগুলো অনেক বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

ক্ষতি এড়াতে তারা এরই মধ্যে তালেবান সরকারকে সহায়তা করতে শুরু করেছে। জার্মানি ও নেদারল্যান্ডস আফগান শিক্ষক ও ডাক্তারদের বেতন দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এসব দেশ আরো আশঙ্কা করছে, অর্থ সংকটে পড়ে তালেবান যদি দেশটিতে মাদক উৎপাদনের আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়, তাহলে তা পুরো বিশ্বের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে।

সব মিলিয়ে দেশগুলো আবারো আফগানিস্তানের সাথে কাজ করার ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। এটি তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে ইতবাচক হিসেবে কাজ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করছে সংশ্লিষ্টরা।