জটিলতার সামনে আফগানিস্তান!

ইসলামাবাদ আশঙ্কা করছে, বিশ্ব বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্ব আফগানিস্তানকে পরিত্যাগ করতে পারে। আর এমনটি হলে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত দেশটি অনিশ্চয়তার একটি নতুন চক্রে পা দেবে। যা পুরো বিশ্বের জন্যই ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। এ অবস্থায় আগামী ছয় থেকে ১২ মাস সময় আফগানিস্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

আফগানিস্তানে টহলরত এক তালেবান সদস্য

আফগানিস্তান ইস্যুতে কাজ করা পাকিস্তানের সরকারি কিছু সূত্রের বরাত দিয়ে এক্সপ্রেস ট্রিবিউন এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, বিশ্ব নেতারা শীঘ্রই আফগানিস্তানকে ভুলে যেতে পারে, যা নিয়ে বেশ সত্যিকারভাবেই চিন্তিত ইসলামাবাদ। এক্ষেত্রে সামনের বছরটি আফগানিস্তানের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে দেখা হচ্ছে। এ সময়টি শুধু তালেবান শাসনের স্থায়িত্বই নির্ধারণ করবে না বরং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় কাবুলের সাথে জড়িত থাকার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী কতদূর এগিয়েছে তা-ও নির্ধারণ করবে।

ইসলামাবাদের আশঙ্কার সাথে একমত প্রকাশ করে একজন পশ্চিমা কূটনীতিকও বলছেন, বিশ্ব বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে পারে।

আফগান-পাকিস্তান সীমান্ত

পাকিস্তান আশঙ্কা করছে, যদি বিশ্ব আবারও আফগানিস্তানকে পরিত্যাগ করে তাহলে দেশটি অস্থিতিশীলতার আরেকটি চক্রের দিকে ধাবিত হবে। এর ফলে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো পুনঃসংগঠিত হতে উৎসাহিত বোধ করবে, যা শুধু এই অঞ্চলের জন্য নয়, এর বাইরের বিভিন্ন দেশের জন্যও হুমকি সৃষ্টি করবে। এ আশঙ্কাতেই বিশ্ব যেন অতীতের ভুলের পুনরাবৃত্তি না করে তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করছে পাকিস্তান।

যদি তাই হয় তাহলে পাকিস্তানসহ প্রতিবেশী দেশগুলোতে আফগান শরণার্থীদের নতুন ধাক্কা লাগবে। অথচ আফগানিস্তানের চারপাশের দেশগুলো এখন নতুন করে কোনো শরণার্থী নেওয়ার মতো অবস্থানে নেই। তাই এই শরণার্থী সমস্যা প্রভাবিত করবে ইউরোপকেও।

এ অবস্থায় দুঃস্বপ্নের পরিস্থিতি এড়াতে বিশ্বের আফগানিস্তানের সাথে জড়িত থাকা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে পাকিস্তানের থিংক ট্যাংক।

আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এশিয়ার এ দেশটির সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। ধারাবাহিক সাহায্য বন্ধ করে দেয়, এমনকি যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের রিজার্ভসহ বিভিন্ন তহবিল আটকে দেয়। এর ফলে দেশটিতে অর্থনৈতিক পতন ও মানবিক সংকট প্রায় আসন্ন।

পাকিস্তান শুরু থেকেই আফগানিস্তানের বিদেশি সম্পদ খারিজ করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে আসছে। আগস্টে তালেবান কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ৯.৫ বিলিয়ন ডলার আটকে দেয়। পাকিস্তানের পাশাপাশি কাতার, চীন, রাশিয়া ও ইরানও আফগানিস্তানের এ সম্পদ তাদের দেশেই ফেরত দেওয়ার পক্ষে আওয়াজ তুলেছে।