যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা আঘাত করবে চীন!

মানবাধিকার হরণের অভিযোগে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিবাদে যুক্তরাষ্ট্রকে পাল্টা আঘাতের হুমকি দিয়েছে চীন। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, আরোপ করা নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। না হলে পাল্টা চরম আঘাত হানা হবে।

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পতাকা

এদিকে, চীনকে ‘আগ্রাসী’ অভিহিত করে দেশটির কর্মকর্তাদের একরকম তুলোধুনা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। বলেছেন, ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে অংশীদার দেশগুলোর সঙ্গে সামরিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও প্রসারিত করবে যুক্তরাষ্ট্র। সিজিটিএন, আল জাজিরা।

যুক্তরাষ্ট্র-চীন সম্পর্ক গত কয়েক বছর ধরে অনেকটা সাপে-নেউলে। গত ১৫ নভেম্বর ভিডিও কনফারেন্সে এক ভার্চুয়াল বৈঠক হয়েছিল মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যে। তখন অনেকেই মনে করেছিলেন, এবার মনে হয় সম্পর্কের বরফ গলে যাচ্ছে। নতুন এক যুগের সূচনা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে। কিন্তু না, পরিস্থিতি সহসা উলটে গেল।

গত শুক্রবার হঠাৎই মানবাধিকার ইস্যুতে চীনের বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ও কিছু প্রতিষ্ঠান যেমন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাবিষয়ক কোম্পানি সেন্সটাইমের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয়, বেইজিংয়ে আয়োজিত শীতকালীন অলিম্পিক কূটনৈতিকভাবে বর্জন করার ঘোষণা দিল ওয়াশিংটন।

এতে বেজায় চটেছে চীন। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবেন যুক্তরাষ্ট্রকে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, কোনো ‘বেপরোয়া’ পদক্ষেপ নেওয়া হলে ‘পালটা আঘাতের মাধ্যমে’ প্রতিক্রিয়া জানাবে বেইজিং। এদিকে চীনের ‘আগ্রাসী’ পদক্ষেপের নিন্দা জানিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ায় সফররত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। এ সময় তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক দেশগুলোর সঙ্গে প্রতিরক্ষা ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও গভীর করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

বেইজিং আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে চীনের মুখপাত্র ওয়াং ওয়েনবেন যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে ‘স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ’ হিসাবে আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা যুক্তরাষ্ট্রকে অবিলম্বে সংশ্লিষ্ট ভুল সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার এবং চীনের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ ও চীনা স্বার্থের ক্ষতি করা বন্ধের আহ্বান জানাচ্ছি।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র যদি বেপরোয়া আচরণ করে, তাহলে চীন দৃঢ়ভাবে পালটা আঘাত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। ওয়াং ওয়ানবেন আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের জাতীয় স্বার্থ, নিরাপত্তা ও উন্নয়নস্বার্থ রক্ষার প্রতিশ্রুতিতে অনড় থাকব।

চীনের সঙ্গে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে এশিয়া সফরে বের হয়েছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন। প্রেসিডেন্ট হিসাবে জো বাইডেন দায়িত্ব গ্রহণের পর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এটাই ব্লিঙ্কেনের প্রথম সফর। মঙ্গলবার তিনি ইন্দোনেশিয়া সফর করেন। সফরকালে তিনি ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে ‘বিশ্বের সবচেয়ে গতিশীল অঞ্চল’ হিসাবে অভিহিত করে বলেন, চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসী কর্মকাণ্ডে এই অঞ্চলের দেশগুলো চিন্তিত।

সপ্তাহব্যাপী এ সফরে তার পরবর্তী গন্তব্য মালয়েশিয়া ও থাইল্যান্ড। দক্ষিণ চীন সাগরে হংকং এবং তাইওয়ানের বিরুদ্ধে চীনের ক্রমবর্ধমান আগ্রাসন মোকাবিলার জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করাই তার এই সফরের প্রধান উদ্দেশ্য।