আফগানিস্তানের অর্থ ছাড়ে বাইডেনকে মার্কিন আইন প্রণেতাদের চিঠি

যুক্তরাষ্ট্রের ৪৬ ডেমোক্র্যাটিক আইন প্রণেতাদের একটি দল গতকাল সোমবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের কাছে চিঠি লিখেছেন। তাতে আফগানিস্তানে মানবিক বিপর্যয় এড়াতে সহায়তা করার জন্য আটকে দেওয়া আফগান ব্যাংকের রিজার্ভ ছাড় দিতে প্রেসিডেন্টকে অনুরোধ করা হয়েছে। তবে ওয়াশিংটন পোস্টের এক খবরে বলা হচ্ছে, কংগ্রেসনাল রিপাবলিকানদের বৃহৎ অংশ তালেবানদের অর্থায়নের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। ভয়েস অব আমেরিকা।

জো বাইডেন

আইন প্রণেতারা বাইডেনকে চলমান শাস্তিমূলক নিষেধাজ্ঞা দ্রুত শিথিল করতে এবং আফগান কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বৈদেশিক রিজার্ভ আনব্লক করার অনুরোধ জানান। চলতি বছরের আগস্টের মাঝামাঝি তালেবান সামরিকভাবে দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পরপরই ওয়াশিংটন ওই রিজার্ভ স্থগিত করেছিল।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন যে, তালেবান কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা সরকারি আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং আফগানিস্তানে সেবা প্রদানকারী সংস্থাগুলোর জন্য একটি কুপ্রভাব তৈরি করছে। হোয়াইট হাউস পরে এক প্রতিক্রিয়ায় জানিয়েছে, স্থগিত তহবিলের বিষয়ে প্রেসিডেন্টের হাত বাঁধা, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে মানবিক প্রচেষ্টাকে সমর্থন করে চলেছে।

খবরে বলা হচ্ছে, ওই নিষেধাজ্ঞা এবং আন্তর্জাতিক সহায়তার আকস্মিক স্থগিতাদেশ আফগান অর্থনীতিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ফেলেছে। আফগানিস্তান গত ২০ বছর ধরে বহিরাগত সহায়তার ওপর নির্ভরশীল।

আফগানিস্তানে বছরের পর বছর ধরে চলা যুদ্ধ, খরা এবং চরম দারিদ্র্যের কারণে সঙ্কট বেড়েছে। জাতিসংঘ মনে করে, দেশটির প্রায় ৪০ মিলিয়ন জনসংখ্যার অর্ধেকেরও বেশি ক্ষুধার্ত। ১ মিলিয়ন শিশু তীব্র অপুষ্টিতে মারা যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে।

আইনপ্রণেতারা লিখেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে থাকা আফগানিস্তানের কারেন্সি রিজার্ভের মার্কিন ৯.৪ বিলিয়ন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এতে দেশটিতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্যিক ব্যাংক ও ব্যবসা বন্ধ হয়ে দেশকে গভীরতর অর্থনৈতিক ও মানবিক সংকটে নিমজ্জিত করেছে।

তারা যুক্তি দেন, শাস্তিমূলক অর্থনৈতিক নীতি তালেবান নেতাদের দুর্বল করবে না বরং নিরপরাধ আফগানদের ক্ষতি করবে। এসব জনগণ তারাই, যারা কয়েক দশক ধরে যুদ্ধ ও দারিদ্র্য ভোগ করেছে। আমরা আশঙ্কা করি, মানবাধিকার সংস্থাগুলো একই নীতি বজায় রাখলে আগামী বছরে ২০ বছরের যুদ্ধে যত মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, তারচেয়েও বেশি মানুষ অনাহারে মরতে পারে।

আফগান অর্থনৈতিক সংকট এবং মানবিক পতন সমগ্র অঞ্চলজুড়ে একটি নতুন শরণার্থী সংকট সৃষ্টি করবে বলে চিঠিতে হুঁশিয়ারি দেন আইন প্রণেতারা। তারা আফগানিস্তানে কাজ করা সাহায্য সংস্থাগুলোকে ত্রাণ তৎপরতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, আর্থিক নিষেধাজ্ঞা তাদের কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।