কাবুলে মার্কিনবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভ

মার্কিন সরকার কর্তৃক আফগানিস্তানের জব্দকৃত সম্পদ ছাড়ের আহ্বান জানিয়ে রাজধানী কাবুলে বিক্ষোভ মিছিল করেছে আফগান জনগণ। তারা আফগান জনগণের বিরুদ্ধে মার্কিন অর্থনৈতিক সন্ত্রাস বন্ধের দাবি জানিয়েছে। ‘আমাদের খেতে দাও’ ও ‘আমাদের জব্দকৃত অর্থ ফেরত দাও’ লেখা ব্যানার হাতে নিয়ে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দেয় এবং কাবুলের মূল সড়ক ধরে মিছিল করে। খবর আল জাজিরার।

মার্কিনবিরোধী মিছিলে আফগানদের ব্যানার ‘আমাদের খেতে দাও’

আফগানিস্তানের অর্থ আটকে রাখার প্রতিবাদে হোয়াইট হাউজের সামনেও বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবারে অনুষ্ঠিত ওই সমাবেশে আফগান জনগণকে মার্কিন নীতির বলির পাঠা না করতে ওয়াশিংটনের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

গত আগস্টে তালেবান দেশটির নিয়ন্ত্রণ নেয়ার পরে আফগানিস্তানের বিভিন্ন পর্যায়ের আন্তর্জাতিক তহবিল স্থগিত করা হয়েছে। পাশাপাশি বিদেশে বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্রে থাকা দেশটির বিলিয়ন ডলারের সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এর ফলে আফগানিস্তানের সমস্যাগ্রস্ত অর্থনীতি আরো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

কাবুলে মার্কিনবিরোধী বিক্ষোভ

মার্কিন সরকার আফগানদের প্রায় এক হাজার কোটি ডলার অর্থ আটকে দেয়ায় দেশটি খাদ্য ও ওষুধসহ নানা জরুরি পণ্যের সংকটে ভুগছে এবং দেশটিতে দুর্ভিক্ষ ও চরম দারিদ্র ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অর্থের অভাবে চার মাস ধরে তালেবান সরকার কর্মচারীদের বেতন দিতে পারছে না।

বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থা এরই মধ্যে দেশটিতে আসন্ন মানবিক বিপর্যয়ের বিষয়ে সতর্ক করেছে। জাতিসংঘ হুঁশিয়ার করে দিয়ে বলেছে, এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে ৯৭ শতাংশ আফগান দরিদ্র হয়ে পড়বে।

এ অবস্থায় গত রোববার মুসলিম দেশগুলো ক্রমবর্ধমান মানবিক সংকট মোকাবেলায় জব্দ করা আফগান সম্পদ ছাড়ের চেষ্টা চালাতে জাতিসংঘের সাথে কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ৫৭ সদস্যের ওআইসি প্রতিনিধিরা পাকিস্তানে একটি বিশেষ বৈঠকে এ ব্যাপারে কাজ করবে বলে একমত হয়।

২০ বছর অবস্থানের পর গত আগস্টে আফগানিস্তান থেকে তাদের সেনা সরিয়ে নেয় যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু বিভিন্নভাবে সেখানকার প্রশাসন ও সাধারণ জনগণকে চাপে রেখে এখনও নিজের প্রভাব খাটিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। গত দুই দশকে মার্কিন সরকার সন্ত্রাসবাদ ও তালেবান দমনের নামে হাজার হাজার নিরীহ বেসামরিক আফগানকে হত্যা করেছে এবং আফগানিস্তানের অনেক অবকাঠামোও ধ্বংস করেছে।