অরুণাচলের ১৫ স্থানের ‘অফিসিয়াল’ নাম দিয়েছে চীন

চীনের বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় অরুণাচল প্রদেশের ১৫টি স্থানের জন্য স্ট্যান্ডার্ড নাম ইস্যু করেছে। নাম ও স্থানগুলো এখন থেকে চীনের সরকারি মানচিত্রে ব্যবহার করা হবে। গতকাল বৃহস্পতিবার চীনা কর্তৃপক্ষ এক ঘোষণায় এ তথ্য জানায়।

অরুণাচলের একটি অংশ

চীনের মানচিত্রে অরুণাচল প্রদেশকে ‘জাংনান’ বা ‘দক্ষিণ তিব্বত’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। এর আগে ২০১৭ সালেও চীন এর ছয়টি স্থানের নামকরণ করেছিল। মনে করা হয়, তিব্বতের আধ্যাত্মিক নেতা হিসেবে পরিচিত দালাইলামা ওই এলাকা পরিদর্শন করার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে বেইজিং এই পদক্ষেপ নিয়েছে।

গতকাল বৃহস্পতিবার দেশটির বেসামরিক বিষয়ক মন্ত্রণালয় ওই ১৫টি স্থানের স্ট্যান্ডার্ড নাম, সঠিক অবস্থানসহ একটি মানচিত্র প্রকাশ করে। একটি নতুন সীমান্ত আইন কার্যকর হওয়ার মাত্র দুদিন আগে দেশটি এমন পদক্ষেপ নিল। আগামীকাল ১ জানুয়ারি আইনটি কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে। ভারত গত অক্টোবরেই আইনটি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছে, চীনের এমন একতরফা সিদ্ধান্ত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।

ভারত-চীনের সম্পর্ক অস্থিতিশীল

ভারত আইনটিকে দুই দেশের সীমান্তে সংঘাতের পর পূর্ব লাদাখে চীনা সামরিক বাহিনীর অনুপ্রবেশ বৈধ করার চেষ্টা হিসেবে দেখছে। কারণ এ আইনে চীনের বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক সংস্থাকে চীনা ভূখণ্ড সুরক্ষায় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

চীনের গণমাধ্যম গ্লোবাল টাইমস জানিয়েছে, চীন নতুন করে যে ১৫টি স্থানের নামকরণ করেছে, তার মধ্যে রয়েছে আটটি আবাসিক এলাকা, চারটি পর্বত, দুটি নদী এবং একটি পর্বতপাস বা গিরিপথ। প্রভাবশালী চাইনিজ একাডেমি অব সোশ্যাল সায়েন্সের সীমান্ত বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ঝাং ইয়ংপানের উদ্ধৃতি দিয়ে পত্রিকাটি বলছে, যেহেতু জাংনান এলাকাটি ভারত আগে থেকে অবৈধভাবে দখল করে আছে, তাই ভারত সরকারও সেই এলাকায় কিছু অবৈধ নাম দিয়েছে। অথচ এ স্থানগুলোর নামকরণের অধিকার থাকা উচিত কেবল চীনের।

তালিকায় থাকা আটটি আবাসিক এলাকা হল- শানান অঞ্চলের কোনা কাউন্টির সেংকেজং ও দাগলুংজং, নিংচির মেডগ কাউন্টির মানিগ্যাং, ডুডিং ও মিগপেইন, নিংচির জায়ু কাউন্টির গোলিং, ডাম্বা এবং শানানের লুঞ্জে কাউন্টির মেজাগ। পর্বতগুলো হল- ওয়ামো রি, দেউ রি, লুনঝুব রি এবং কুমিংজিংজে ফেং; নদী দুটি হল জেনইয়োগমু হে ও ডুলাইন হে এবং তালিকার পর্বতপাসটি হল সে লা।

উল্লেখ্য, ভারত অরুণাচলকে নিজেদের অংশ বলে মনে করে। তবে চীনও বিভিন্ন সময় এলাকাটি নিজেদের বলে দাবি করে সেখানে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করেছে।