টেলিফোনে হুমকি বিনিময় করলেন বাইডেন-পুতিন!

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে সতর্ক করেছেন, কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলে রাশিয়ার সাথে মার্কিন সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভেঙে যেতে পারে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাইডেনের সঙ্গে ফোন কলে অংশ নিয়ে পুতিন বলেন, এই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিলে তা হবে ‘বড় ভুল’। বিবিসি।

জো বাইডেন ও ভ্লাদিমির পুতিন

এদিকে, বাইডেন পুতিনকে বলেছেন, ইউক্রেনে যে কোনো আক্রমণের জবাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে। এই ফোন কল দুই দেশের প্রেসিডেন্টের মধ্যে দ্বিতীয়বারের মতো। দুই বিশ্বনেতা প্রায় এক ঘণ্টা ধরে কথা বলেন। এটি রাশিয়ার সাথে ইউক্রেনের পূর্ব সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমিত করার সর্বশেষ প্রচেষ্টা।

ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া ইউক্রেন সীমান্তে এক লাখের বেশি সেনা মোতায়েন করেছে। এটা পশ্চিমে উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুতিনকে হুমকি দিয়েছে, ইউক্রেন আক্রমণের শিকার হলে এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে যা রাশিয়া কখনও দেখেনি। যেটা হবে কঠোর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা।

মুখোমুখি অবস্থানে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া

রাশিয়া অবশ্য ইউক্রেনে আগ্রাসনের পরিকল্পনার কথা অস্বীকার করেছে। পুতিন জানিয়েছেন, সৈন্য মোতায়েন করা হয়েছে মহড়ার জন্য। নিজ দেশের মাটিতে অবাধে সেনা স্থানান্তরের অধিকার রাশিয়ার রয়েছে। ফোন কল উভয় পক্ষ শুধু সতর্কবার্তা বিনিময় করেছে।

রাশিয়ার পররাষ্ট্র উপদেষ্টা ইউরি উশাকভ কিছুক্ষণ পরেই সাংবাদিকদের বলেন, পুতিন কথোপকথনে সন্তুষ্ট ছিলেন। এটি ভবিষ্যতে সরাসরি আলোচনার জন্য একটি ‘ভাল প্রেক্ষাপট’ তৈরি করেছে। একজন ঊর্ধ্বতন মার্কিন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, ফোন কলের আলোচনা গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি জেন সাকি বলেছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন পুনর্ব্যক্ত করেছেন এই ফোন সংলাপে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটতে পারে। তিনি স্পষ্ট করেছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ করলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং তার মিত্ররা চূড়ান্ত প্রতিক্রিয়া জানাবে।

মার্কিন ও রাশিয়ান কর্মকর্তারা আগামী মাসে জেনেভায় ব্যক্তিগত আলোচনার জন্য মিলিত হবেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, বাইডেন তার রুশ প্রতিপক্ষকে ইউক্রেন সমস্যার কূটনৈতিক সমাধানের জন্য অনুরোধ করেছেন।

তবে বৃহস্পতিবার দুই নেতার কথোপকথোনকে ইতিবাচক লক্ষণ হিসেবে দেখছে হোয়াইট হাউস। এর মাধ্যমে তারা নতুন বছরে শান্তি প্রতিষ্ঠার বিষয়ে কথা বলেছেন। ইউক্রেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ডিসেম্বরের শুরুতে পার্লামেন্টে বলেছিলেন, রাশিয়া সীমান্তের কাছে হাজার হাজার সৈন্য মোতায়েন করেছে রাশিয়া।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে উত্তেজনা নতুন কিছু নয়। ২০১৪ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের ক্রিমিয়ান উপদ্বীপ দখল করে নেয়। এর পরেই ইউক্রেনের পূর্বে একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহকে সমর্থন করতে শুরু করে রাশিয়া। পর্যায়ক্রমিক লড়াইয়ে প্রায় ১৪ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে।