বিশ্বব্যাপী নববর্ষ উদযাপনে ওমিক্রনের বাগড়া

বিশ্বব্যাপী থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপিত হয়েছে। কিন্তু ওমিক্রনের কারণে পরিকল্পিত অনেক অনুষ্ঠানই হতে পারেনি। মোটামুটি ঘরোয়াভাবে সারা বিশ্বে ইংরেজি নতুন বর্ষকে বরণ করেছে মানুষ। দক্ষিণ প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জ সামোয়া এবং কিরিবাতির লোকেরা সবচেয়ে আগে নতুন বছর শুরু করেছে। তার এক ঘণ্টা পরে নিউজিল্যান্ড শুরু করে উদযাপন। আল জাজিরা।

ইংরেজি নববর্ষ উদযাপন, ফাইল ছবি

অস্ট্রেলিয়ার সিডনি শহরের ল্যান্ডমার্ক হারবার ব্রিজ এবং অপেরা হাউসের আকর্ষণীয় পটভূমিতে ৬ টন রঙিন আতশবাজি দিয়ে নতুন বছরের সূচনা হয়েছে। সমগ্র বিশ্বে নতুন বছরের দামামা শেষ হতে ২৬ ঘণ্টা সময় লাগে। করোনার নুতন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের কারণে অনেক বড় পার্টি এবং আতশবাজি প্রদর্শন বাতিল করা হয়েছে বা ছোট করা হয়েছে।

নিউইয়র্ক সিটি নতুন বছরকে আলিঙ্গন করেছে। টাইমস স্কয়ার সবাই মেতে ওঠে নতুন বছরের উন্মাদনায়। গত বছর করোনা মহামারির কারণে এই বিশাল পাবলিক ইভেন্টটি পরিত্যাগ করতে হয়েছিল। টাইম স্কয়ারের অনুষ্ঠানে অংশ নিতে বহু দূর থেকে মানুষ আসতে শুরু করে।

নিউইয়র্ক সিটিতে হালকা শীতের রাতে ইলেকট্রনিক বিলবোর্ডের আলোয় ঝলমলে হয়ে ওঠে চারপাশ। ঘড়ির কাঁটায় রাত ১২টা বাজার সাথে সাথে ক্লিক করে ওঠে হাজারো ক্যামেরা। চলে নাচ-গান আর শ্যাম্পেন। আলিঙ্গনে মেতে ওঠে টাইমস স্কয়ার। নতুন বছরকে স্বাগত জানায় সবাই।

এদিকে মধ্যরাতে লন্ডনের বিগ বেন ঘড়ি বেজে ওঠে। নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর জন্য ২০১৭ সালের পর এই প্রথমবারের মতো ঘড়িটি নতুন বছর উদযাপনে ব্যবহার করা হল। যুক্তরাজ্যে ওমিক্রনের শক্ত হানায় ভাটা পড়ে নববর্ষের উদযাপন।

নববর্ষের প্রাক্কালে ভাষণ দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তিনি মহামারির ব্যাপারে সতর্ক করে বলেন, বিপত্তিটি এখনও পিছু হটছে না। এই কঠিন সময়ে রাশিয়ানদের প্রত্যাশার প্রশংসা করে পুতিন বলেন, যারা মহামারিতে প্রিয়জন হারিয়েছেন, তাদের প্রতি আন্তরিক সমর্থন দিচ্ছি। রাশিয়ায় ২০২১ সালে তিন লাখ আট হাজার মানুষ করোনায় মৃত্যুবরণ করেছেন।

কানাডার কুইবেক নিঃশব্দে উদযাপন করছে ২০২২ সাল। কারণ স্থানীয় সময় রাত ১০টায় কুইবেকজুড়ে রাতের কারফিউ কার্যকর করা হয়। কুইবেকের প্রিমিয়ার ফ্রাঙ্কোয়েস লেগল্ট কারফিউ ঘোষণা করেন। প্রতিদিন রাত ১০টা থেকে সকাল ৫টা পর্যন্ত কারফিউ থাকবে। ওমিক্রন বিস্তার রোধে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নববর্ষকে স্বাগত জানাতে জার্মানির ব্র্যান্ডেনবার্গ গেট লাইটগুলো জ্বলে ওঠে। বার্লিনের ব্র্যান্ডেনবার্গ গেটের কাছে জড়ো হয় নগরবাসী। তবে নববর্ষের প্রধান অনুষ্ঠানগুলো এবারও বাতিল করা হয়েছে। আতশবাজি বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়। ওমিক্রন ইউরোপে চরমভাবে বেড়েছে। যদিও জার্মানিতে এখনও আক্রান্তের সংখ্যা কম।

ফ্রান্স শুক্রবার রাতে প্যারিসের আইফেল টাওয়ারে আলোক প্রদর্শনের মাধ্যমে ২০২২ সালের উদযাপন সূচনা করেছে। ইউরোপের অনেক দেশের মতো ক্রমবর্ধমান করোনভাইরাসের কারণে উদযাপনে ভাটা কিছুটা হলেও ভাটা পড়ে। সরকার নববর্ষের উদযাপনে পাবলিক কনসার্ট এবং আতশবাজি প্রদর্শন নিষিদ্ধ করে। ফ্রান্সে ২ লাখ ৩২ হাজার ২০০ নতুন করে করোনায় আক্রান্ত হয়। এমন ভয়াবহ চিত্র আগে দেখা যায়নি।