এক লাখ সদস্যের প্রতিরক্ষা বাহিনী তৈরি করছে তালেবান

ইসলামিক আমিরাত আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা এক লাখ সদস্যের সমন্বয়ে নতুন প্রতিরক্ষা বাহিনী তৈরি করছে। বিষয়টিকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে দেখা হচ্ছে জানিয়ে গতকাল শনিবার তালেবান প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত প্রক্রিয়াটির প্রাথমিক কাজ অনেকটাই এগিয়ে গেছে।

তালেবানের বিশেষ প্রতিরক্ষা বাহিনী

দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইনায়েতুল্লাহ খোরাজামি জানিয়েছেন, পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন করার জন্য ২০ সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। কমিটিকে একটি সুশৃঙ্খল সামরিক বাহিনী গঠনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আপাতত এক লাখ সদস্যের সমন্বয়ে একটি নতুন সামরিক বাহিনী গঠনের চেষ্টা চলছে। নতুন সদস্য নথিভুক্ত করার পর তাদের স্কোয়াড্রনে দায়িত্বে পাঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। প্রক্রিয়াটির প্রায় ৮০ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে।

তালেবান প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে প্রবীণ ও সাবেক প্রতিরক্ষা ব্যক্তিত্বরা কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। তারা নতুন প্রশাসনের কাছে সাবেক নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্ত করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সমর সাদাত নামের সাবেক একজন সামরিক কর্মকর্তা বলেন, সেনাবাহিনীকে মানসম্মত করা উচিত, যাতে তারা শৃঙ্খলা মেনে চলে। তাদের যথাযথ ইউনিফর্ম ও গেটআপও থাকতে হবে।

আফগানিস্তানের সাবেক সেনাবাহিনী

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করা আজিজ মুজাদিদি বলেন, জাতীয় এ বাহিনীতে দেশের সব জাতিগোষ্ঠীর সদস্য অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। সাবেক বাহিনীর মধ্যে যারা কর্মক্ষমতায় পেশাদার, নতুন সামরিক ইউনিটে তাদের যুক্ত করা উচিত।

গত ১৫ আগস্ট আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানির পলায়নের পর কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। তবে আগের সরকারের পতনের সাথে সাথে সাড়ে তিন লাখ সদস্যের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বাহিনী ভেঙে যায়। গত বিশ বছরে তালেবানের বিরুদ্ধে বার বার অভিযান চালানো এ বাহিনীর অনেক সদস্যই প্রথম সুযোগে দেশ ছাড়েন।

তবে তালেবানের পক্ষ থেকে বারবার তাদের প্রতি সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করে কাজে যোগ দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়। দেশে ফিরে এসে একটি উন্নত আফগানিস্তানের জন্য কাজ করার আহ্বান জানানো হয়। ইসলামিক আমিরাত জানায়, তাদের এ আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিছু সাবেক নিরাপত্তা কর্মকর্তা কাজে যোগ দিয়েছেন এবং দায়িত্ব পালন করতে শুরু করেছেন।

উল্লেখ্য, তালেবানের ক্ষমতা নেয়ার আগে দেশে সাড়ে তিন লাখ সদস্যের নিরাপত্তা বাহিনী বিদ্যমান ছিল, যাদের মধ্যে সরাসরি প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়ন্ত্রণে ছিল দেড় লাখ সদস্য।