নিরাপত্তা পরিষদে আফগান পরিস্থিতি জানাল ইরান

২০২১ সালের নভেম্বরে নিরাপত্তা পরিষদের শেষ বৈঠকের পর থেকে আফগানিস্তানের পরিস্থিতি দিন দিন অবনতির দিকে যাচ্ছে, কোনো অগ্রগতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মজিদ তখত রাভাঞ্চি নিরাপত্তা পরিষদের কাছে এক বিবৃতিতে এসব কথা জানিয়েছেন। আবনা নিউজ।

মজিদ তখত রাভাঞ্চি

জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী, আফগানিস্তানে ২৪ মিলিয়নেরও বেশি মানুষের মানবিক সহায়তার প্রয়োজন এবং জনসংখ্যার অর্ধেক তীব্র ক্ষুধার সম্মুখীন। ৯ মিলিয়নেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। ওই বিবৃতিতে বলা হয়, পরিস্থিতি যদি নিয়ন্ত্রণ না করা হয়, তাহলে দেশটি আর্থ-সামাজিক পতনের দিকে চলে যাবে, যা আফগান জাতির জন্য একটি করুণ দারিদ্র্য অবস্থা তৈরি করতে পারে।

ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরান প্রতিবেশী দেশসহ এ অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার ওপর এই পরিস্থিতির সম্ভাব্য বিধ্বংসী পরিণতির বিষয়ে গুরুতর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, গত ৪০ বছরে ইরান আফগান জনগণকে সমর্থন করার জন্য তার ক্ষমতার সব কিছু করেছে। এটি ইরান সরকারের একটি নীতি, যা সর্বোচ্চ নেতা দ্বারা অনুমোদিত।

আফগানিস্তান-ইরান সীমান্ত

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘আমরা আফগানিস্তানে খাদ্য, ওষুধ এবং চিকিৎসা সামগ্রীসহ মানবিক কাফেলা পাঠিয়েছি। গত গ্রীষ্মে তালেবানরা ক্ষমতা দখল করার পর আমরা কখনোই আফগানিস্তানের সাথে সীমান্ত বন্ধ করিনি এবং বর্তমানে উভয়পক্ষের মধ্যে স্বাভাবিক বাণিজ্য চলছে। এই শীত মৌসুমে আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তার ব্যবস্থা চালিয়ে যাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

জাতিসংঘে নিযুক্ত ইরানের রাষ্ট্রদূত মজিদ তখত রাভাঞ্চি বলেন, গত আগস্ট থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার আফগান ইরানে প্রবেশ করছে। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরে সামগ্রিক পরিস্থিতি ইরানের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অমানবিক নিষেধাজ্ঞা আমাদের সরকার এবং জনগণের জন্য প্রচণ্ড অসুবিধার সৃষ্টি করেছে, অন্যদিকে আফগান সঙ্কটও সামাল দিতে হচ্ছে। ইরানে বসবাসকারী আফগান জনগণকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসা, বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ এবং কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে।

এটা পরিষ্কার, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় যদি সময়মতো ইরানে বসবাসকারী আফগান জনগণকে পর্যাপ্ত সহায়তা দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে আমরা নিজেরাই, আফগান উদ্বাস্তুদের প্রতি আমাদের সমর্থন অব্যাহত রাখতে অক্ষম হব। এসব আফগান জনগণ ইরান হয়ে ইউরোপে ঢোকার চেষ্টা করছে। আফগানিস্তানে অতিরিক্ত আর্থিক সংস্থান প্রসারিত করার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।