ইঁদুরের তাণ্ডবে জেরবার কলকাতা!

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের রাজধানী কলকাতার রাস্তাঘাট-ফুটপাত ধ্বংস করে দিচ্ছে ইঁদুর। এমনকি একটি বড় ব্রিজও তাদের আগ্রাসনে ধ্বংসের মুখে পড়েছিল। এ অবস্থায় সমূলে ইঁদুর ধ্বংসের কোনো উপায় না পেয়ে হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালার মতো কোনো উপায় খুঁজছে কলকাতা পৌরসভা কর্তৃপক্ষ।

ইঁদুরের দাপটে অস্থির কলকাতা পৌরসভা

জানা গেছে, ইঁদুরদের অত্যাচারে কলকাতা পৌরসভার শীর্ষ ইঞ্জিনিয়ার ও কাউন্সিলরদের একাংশের অবস্থা নাজেহাল। পৌরসভার বৈঠকে গতকাল শুক্রবার মধ্য কলকাতার কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে ইঁদুরের তাণ্ডবের তথ্য তুলে ধরে এর প্রতিকার চান। তিনি বলেন, আমহার্স্ট স্ট্রিট থেকে বিপিনবিহারী গাঙ্গুলি স্ট্রিটসহ পুরো এলাকায় ইঁদুর সমস্ত ফুটপাত, পিচের রাস্তা ও পার্ক ধ্বংস করে দিচ্ছে। ইঁদুরের উৎপাতে উত্তর ও মধ্য কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণ কলকাতার বহু বড় রাস্তা ও মাইলের পর মাইল পেপার ব্লক বসানো ফুটপাত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।

তার এই বক্তব্যকে সমর্থন করেন বড়বাজার ও বেহালা ও দক্ষিণ কলকাতার অনেক কাউন্সিলর। বৈঠকে উল্লেখ করা হয়, বছর কয়েক আগে একবার সেখানকার একটি ব্রিজও ইঁদুরের দাপটে বসে যাচ্ছিল। সেই সময় পৌরসভা অনেক কৌশলে তা নিয়ন্ত্রণ করে বলে জানান সুশান্ত ঘোষ নামের এক কর্মকর্তা।

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা

এ অবস্থায় তারা ইঁদুরের বিরুদ্ধে জোরেশোরে অভিযানে নামতে চাইলেও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশের জেরে তা সম্ভব হচ্ছে না। সেই কারণে ইঁদুরদের খাবার বন্ধ করে দিয়ে তাদের দমনের চিন্তা করা হচ্ছে। ডেপুটি মেয়র অতীন ঘোষ জানান, শহরের রাস্তা ও পার্ক বাঁচাতে শুধু কাউন্সিলর বা পৌরসভা নয়, সমস্ত শহরবাসী যদি পথে ইঁদুরের খাবারের জোগান বন্ধ না করেন তবে পরিস্থিতি আরো ভয়ংকর হবে।

তার পরামর্শ, রাস্তায় বাড়ির আবর্জনা ও খাবারের উচ্ছিষ্ট ফেলা বন্ধ করুন। কারণ এসব উচ্ছিষ্ট ও খাবারের অংশ খেয়ে ইঁদুররা শুধু বেঁচেই থাকছে না, বংশবৃদ্ধিও করছে। এছাড়াও কোথাও মাটিতে ছোট গর্ত ও ইঁদুরের বাসা দেখলেই তা বন্ধ করে দিন। খুব অসুবিধায় পড়লে ‘ইঁদুর মারা কল’ ব্যবহার করুন।

কাউন্সিলররা আপাতত ইঁদুর দমন করতে সে পথই অবলম্বন করতে যাচ্ছেন। তবে অনেকে জার্মান লোককাহিনি ‘হ্যামিলিনের বাঁশিওয়ালা’র কথা উল্লেখ করে বলেন, ওই বাঁশিওয়ালা যেমন বাঁশির সুরে সব ইঁদুর ডেকে নিয়ে ওয়েজার নদীতে ফেলে দিয়েছিল, তেমন কিছু যদি কলকাতায় ঘটত!