বিচারকদের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের টক্কর, তিউনিসিয়ায় উত্তেজনা

তিউনিসিয়ার প্রেসিডেন্ট কাইস সাইদ দেশটির সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল ভেঙ্গে দেওয়ায় বিচারকরা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন। প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখান করেছেন বিচারকরা। ক্ষমতার একত্রীকরণ নিয়ে ক্রমবর্ধমান উদ্বেগের মধ্যে বিচার বিভাগের স্বাধীনতা রক্ষা হবে কি-না, তা নিয়ে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আল জাজিরা।

কাইস সাইদ

প্রেসিডেন্ট সাইদ গতকাল রোববার রাতে ঘোষণা করেছেন, তিনি সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল ভেঙে দিচ্ছেন। যে কয়েকটি রাষ্ট্রীয় সংস্থা স্বাধীনভাবে কাজ করতে সক্ষম, তার মধ্যে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল একটি। এই কাউন্সিল কয়েক মাস ধরে কাইস সাইদের তীব্র সমালোচনা করেছে, যাতে প্রেসিডেন্টের দুর্নীতি ও রাজনৈতিক অনুপ্রবেশের অভিযোগ আনা হয়।

সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের প্রধান ইউসুফ বাউজাখের বলেছেন, কাউন্সিলের বিলুপ্তি অবৈধ এবং রাষ্ট্রপতির নির্দেশে বিচারকদের বশে আনার চেষ্টা। তবে বিচারকরা চুপ থাকবেন না বলে তিনি সতর্ক করে দেন। ওই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে নিন্দা জানিয়েছে অন্য দুটি বিচারিক সংস্থাও।

রশীদ ঘানুচি

ইয়ং ম্যাজিস্ট্রেট অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, বিচার বিভাগের রাজনৈতিক শুদ্ধির অংশ ওই পদক্ষেপ। অন্যদিকে বিচারক সমিতি সাইদ তার নিজের হাতে সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তুলেছে।

২০২১ সালের জুলাইতে সাইদ হঠাৎ করে জাতীয় সংসদ স্থগিত করেন এবং প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করেন। তার সমালোচকরা এটিকে অভ্যুত্থান হিসেবে বর্ণনা করেন। পরে তিনি ডিক্রির মাধ্যমে দেশ শাসনের পদক্ষেপ নেন। তারপর তিনি বলে আসছিলেন, গণভোটে দেওয়ার আগে ২০১৪ সালের গণতান্ত্রিক সংবিধানকে সংশোধন করবেন।

সাঈদ অভ্যুত্থানের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং দেশের ২০১১ সালের বিপ্লবে জয়ী অধিকার ও স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার অঙ্গীকার করেছেন, যা গণতন্ত্রের সূচনা করেছিল। তবে তার সমালোচকরা বলছেন, তিনি নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি ক্রমবর্ধমানভাবে ঝুঁকে পড়ছেন। জনগণ ভয় পাচ্ছে, তিনি ভিন্নমতের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেবেন।

আল জাজিরার সাংবাদিক এলিজিয়া ভলকম্যান বলেছেন, বিচারক এবং রাষ্ট্রপতির মধ্যে দ্বন্দ্ব শেষ হয়নি বলে মনে হচ্ছে। স্থগিত পার্লামেন্টের স্পিকার এন্নাহদা নেতা রশীদ ঘানুচি রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, শীর্ষ বিচারিক পরিষদ ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে তারা প্রত্যাখ্যান করেছেন এবং বিচারকদের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন।