ইমরান: আফগানদের না জেনে বোকামি করেছে মার্কিনিরা

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, যারা আফগানিস্তানের ইতিহাস বোঝে, তারা কখনোই যুক্তরাষ্ট্র যা করেছে তা করতে যাবে না। আমি অনেক আগে থেকেই সাবধান করেছিলাম, যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানে সামরিকভাবে সফল হবে না।

ইমরান খান

ফুদান ইউনিভার্সিটির চায়না ইনস্টিটিউটের উপদেষ্টা কমিটির পরিচালক ড. এরিক লিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি এসব কথা বলেন। তিনি জানান, তাদের (আমেরিকান) লক্ষ্যই কখনো স্পষ্ট ছিল না। তারা আফগানিস্তানে কী অর্জন করতে চাইছে, সেটা জানতো না। তারা বলছিল, গণতন্ত্র আনবে, জাতি গঠন করবে। কিন্তু তারা কি জাতি গঠন করতে পেরেছে, গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পেরেছে, নারীদের মুক্তি দিতে পেরেছে? সুস্পষ্ট লক্ষ্য না থাকায় তারা এর কোনোটিই পারেনি।

সাক্ষাৎকারে ইমরান খান বলেন, যখন একটি মিশনের লক্ষ্য অস্পষ্ট থাকে, তখন এটি অবধারিতভাবে ব্যর্থতার দিকে যেতে থাকে। তথাকথিত সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামের আফগানিস্তানে মার্কিন আগ্রাসনের ক্ষেত্রে তা-ই হয়েছে।

আফগানিস্তান ত্যাগ করছে মার্কিন বাহিনী, ফাইল ছবি

আফগানিস্তানে মার্কিন মিশন একটি মিথ্যা ভিত্তির ওপর চলছিল উল্লেখ করে ইমরান খান বলেন, ৯/১১ হামলার পরে আফগানিস্তান আক্রমণের আগে যুক্তরাষ্ট্র এ ব্যাপারে ভালোভাবে জানতে চায়নি। তারা যদি আফগানিস্তান সম্পর্কে পড়াশোনা করতো, তাহলে যেভাবে অভিযান পরিচালনা করেছে, সেভাবে অন্তত করতো না। আল কায়েদা নেতা ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করার পরই আফগানিস্তানে মার্কিন মিশন শেষ হয়ে যাওয়া উচিত ছিল। এরপরও তারা কী করছিল, সেটা কারোই জানা ছিল না।

তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আফগান জনগণকে বুঝতে পারেনি। তারা কখনোই বিদেশিদের শাসন মেনে নেয় না। আর জনগণ যদি শাসিত হতে না চায় তাহলে কেউ তাদের শাসন করতে পারে না।

আফগানিস্তানের পরিস্থিতি নিয়ে অনেক আগে থেকেই সরব ছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তালেবানের সাথে মার্কিনিদের আলোচনার সময় তিনি বলেছিলেন, সামরিক অভিযান এ ধরনের পরিস্থিতিতে কোনো সমাধান হতে পারে না। আলোচনার মাধ্যমেই এ পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে হবে। কাবুলের পতনের কয়েকদিন আগে গত বছর এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, আমি মনে করি যুক্তরাষ্ট্র সত্যিই আফগানিস্তানে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে।

ইমরান খান বলেন, মার্কিনিরা আফগানিস্তানের সাধারণ জনগণ এবং তালেবানের মধ্যে পার্থক্য করতে ব্যর্থ হয়েছে। আর এ বিষয়টিই দেশটিকে একটি সম্ভাব্য মানবিক সংকটের দিকে যেতে বাধ্য করছে।

সূত্র: এক্সপ্রেস ট্রিবিউন