ভারতের ইতিহাসে বৃহত্তম ব্যাংক জালিয়াতি, দেশজুড়ে হইচই
- Details
- by আন্তর্জাতিক ডেস্ক
ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা সিবিআই গুজরাটের একটি জাহাজ নির্মাণ সংস্থার বিরুদ্ধে প্রায় ২৩ হাজার কোটি রুপির জালিয়াতির অভিযোগ এনেছে। ভারতের ইতিহাসে এটিকে বৃহত্তম ব্যাংকিং কেলেঙ্কারি বলে বর্ণনা করা হচ্ছে। বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করছে, নরেন্দ্র মোদি সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিদের মদদেই এত বড় মাপের আর্থিক কেলেঙ্কারি করা সম্ভব হয়েছে।
এবিজি শিপইয়ার্ড
জানা গেছে, গুজরাটের সুরাট ও দহেজে রয়েছে এবিজি শিপইয়ার্ডের জাহাজ তৈরির কারখানা। কোম্পানির প্রধান ঋষি কমলেশ আগরওয়াল ভারতের জাহাজ নির্মাণ শিল্পেও পরিচিত মুখ। কোম্পানিটি ভারতের বিভিন্ন ব্যাংকের একটি কনসোর্টিয়ামের কাছ থেকে ২২ হাজার ৮৪২ কোটি রুপি জালিয়াতি করেছে। ওই কনসোর্টিয়ামে ২৮টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান যুক্ত ছিল।
গত শনিবার ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে ২২ হাজার ৮৪২ কোটি রুপি জালিয়াতির অভিযোগ এনে সিবিআই একটি এফআইআর দায়ের করে। এর পরপরই দেশজুড়ে হইচই পড়ে যায়। এবিজি শিপইয়ার্ডের কর্ণধার ঋষি আগরওয়ালেরও খোঁজ মিলছে না। তিনি দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ভারতের বিরোধী দলগুলো প্রশ্ন তুলছে, গুজরাটের সংস্থা বলেই কি সরকার অভিযুক্তদের ব্যাপারে নরম মনোভাব দেখিয়েছে?
এবিজি শিপইয়ার্ডের কর্ণধার ঋষি আগরওয়াল
সংশ্লিষ্টরা অভিযোগ করছেন, এ বিষয়ে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া তো দূরে থাকুক, একটি এফআইআর দায়ের করতেও অনেক বেশি সময় নিয়ে ফেলেছে সিবিআই। তারা এজন্য কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীকেও দায়ী করছেন।
কংগ্রেসের মুখপাত্র গৌরব বল্লভ বলছেন, দেশের শাহেনশা ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি উপহার দেবেন বলে কথা দিয়ে এর মধ্যেই ৫ ট্রিলিয়ন রুপির ধোঁকা দিয়ে ফেলেছেন। গত সাড়ে সাত বছরে দেশের ব্যাংকিং খাত থেকে এই পরিমাণ অর্থ উধাও হয়ে গেছে। সরকারের তথ্যই বলছে, জালিয়াতদের কাছ থেকে এক শতাংশ অর্থও উদ্ধার করা যায়নি। সরকারের স্কিমটাই যেন এমন- ব্যাংক লুট করো, তারপর দেশ থেকে পালাও!
শিবসেনা নেতা ও এমপি সঞ্জয় রাউত বলেন, গুজরাটে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাঙ্কিং কেলেঙ্কারি ঘটার পরও কেন সেখানে অভিযান চালানো হচ্ছে না? কারা এই মামলায় দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে এফআইআর পর্যন্ত হতে দেয়নি? কার স্বার্থ ছিল এতে? জালিয়াতিতে প্রধান অভিযুক্ত কীভাবে পালাতে পারল, তা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার!
জানা গেছে, এবিজি শিপইয়ার্ড ২০১২ থেকে ২০১৭-এর মধ্যে আইসিআইসিআই, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়াসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে মোট ২৩ হাজার কোটি রুপি ঋণ নিয়েছিল। কিন্তু ২০১৯-এর নভেম্বরেই স্টেট ব্যাংক সিবিআইয়ের কাছে অভিযোগ জানায়, পুরো অর্থটাই আত্মসাৎ করা হয়েছে।
তারও সোয়া দুই বছর পর এসে সিবিআই আনুষ্ঠানিক এফআইআর দায়ের করেছে। অবশ্য স্টেট ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বিলম্বের কথা মানতে নারাজ। স্টেট ব্যাংকের এমডি স্বামীনাথন জানকীরামন বলছেন, এত বড় অঙ্কের আর্থিক দুর্নীতির তদন্ত করতে দু-এক বছর সময় লেগেই যায়, তারপরই কেবল এফআইআর রুজু করা যায়। ফলে আমি মনে করি না এখানে দেরি হয়েছে।
অন্যদিকে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছেন, এই দুর্নীতির ব্যাপারে সরকার হাত গুটিয়ে নেই। ব্যাংকিং খাতের বিশেষজ্ঞ ও পেশাদাররা পুরো বিষয়টা খতিয়ে দেখছেন, ঋণের টাকা উদ্ধারের চেষ্টা করছেন। তিনি দাবি করেন, অন্য সময়ের তুলনায় এ জালিয়াতি অনেক কম সময়ে ধরা পড়েছে।
এর আগে ভারতের বড় আর্থিক জালিয়াতির মধ্যে ছিল হীরে ব্যবসায়ী নীরব মোদি ও মেহুল চোকসির পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে ১৪ হাজার কোটি রুপি জালিয়াতি এবং তারও আগে শিল্পপতি বিজয় মালিয়া বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ১০ হাজার কোটি রুপি আত্মসাতের ঘটনা ঘটান। কিন্তু এবারের ঘটনাটি আগের দুই জালিয়াতিকেও পেছনে ফেলেছে। অঙ্কের হিসেবে আগের দুই বড় জালিয়াতির সমান জালিয়াতি করা হয়েছে এই এক কেসেই।
গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...
খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর
Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.
Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.