আপনি পড়ছেন

ভারতের আইনে এমন কিছু নেই, যা কোনো মুসলিম নারীকে হিজাব পরিধান করা থেকে বাধা দেবে। বর্তমান বিতর্কে যে আইন বা মামলার রেফারেন্স দেয়া হচ্ছে, তারও কোথাও উল্লেখ নেই, একজন মুসলিম নারীকে হিজাব পরিধান করা থেকে বাধা দেয়া যেতে পারে। মেলবোর্ন ল স্কুলের অধ্যাপক ফারাহ আহমেদ হিন্দুস্তান টাইমসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারে তিনি সাংবিধানিক আইন, ধর্মীয় স্বাধীনতা, বিশ্বাস, গোপনীয়তা, ধর্মচর্চাসহ বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেন।

hijab is prideহিজাব মুসলিম নারীদের অধিকার, ইনসেটে ফারাহ আহমেদ

সাম্প্রতিক হিজাব বিতর্ক নিয়ে তিনি বলেন, এসব ঘটনার সাথে জড়িত শুধু স্কুল বা কলেজ, রাষ্ট্র নয়। আমি ভারতের আইনের কোথাও স্পষ্টভাবে এই নিষেধাজ্ঞা পাইনি, যেখানে বলা হয়েছে, নারীরা হিজাব পরতে পারবে না বা মাথা ঢেকে স্কুলে যেতে পারবে না। এক্ষেত্রে যে বিষয়টি আছে, তা হলো স্কুল ও কলেজ উন্নয়ন কমিটিসহ কিছু বেসরকারি সংস্থার ইউনিফর্মের বিধান করার ক্ষমতা।

তবে এক্ষেত্রে খেয়াল করার বিষয় হচ্ছে, ভারত আইনের শাসনে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আইনের শাসন মানে আইনকে সহজলভ্য হতে হবে। ফলে যদি কোথায় বলা হয়, আপনি হিজাবসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করতে পারবেন না বা আপনি এটি পরতে পারবেন না, তাহলে স্পষ্টভাবে বর্ণনা করতে হবে, তারা কেন সেটা করতে পারে না। 

hijab student 1হিজাবের কারণে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে

আমি সরকারি আদেশগুলো দেখেছি। এতে অনেক গোঁড়ামি আছে, অনেক বাগাড়ম্বর আছে। এখন আদালতে বা বিভিন্ন পর্যায়ে হিজাবের রায়ের ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের মামলা এবং কিছু উচ্চ আদালতের মামলাসহ যে তিনটি মামলার কথা বলা হচ্ছে, এগুলোর সাথে এই সমস্যার আসলেই কোনো সম্পর্ক নেই। কারণ এতে কোথাও বলা হয়নি, নারীরা মাথায় স্কার্ফ পরে কলেজে আসতে পারবেন না। সব মিলিয়ে সংবিধানে এমন কোনো ধারা নেই, যা স্কুল-কলেজগুলোকে এভাবে কাজ করার ক্ষমতা দেয়।

ফারাহ আহমেদ বলেন, কর্ণাটকের রায়ে বলা হয়েছে, হেডস্কার্ফ বা হিজাব পরার কোনো মৌলিক অধিকার নেই। কিন্তু তাতে এটা বোঝা যায় না, তারা এটা পরতেও পারবে না। তারা শুধু বলেন যে, অন্য সংস্থাগুলো নিয়ম তৈরি করতে পারে এবং আমরা জানি না সেই নিয়মগুলো আসলে কোথায়? সুতরাং, এই আদেশের ভিত্তিতে আপনি নারীদের হিজাব পরা থেকে আটকাতে পারবেন না।

মূলত এই আদেশেও এমন কিছু নেই যা স্কুলগুলোতে হিজাব নিষিদ্ধ করে। এমনকি যদি কেউ দাবি করে, এই আদেশ হিজাব নিষিদ্ধ করেছে, তবুও এটি একটি আইনের মাধ্যমে ন্যায়সঙ্গত হতে হবে। সরকার দাবি করছে যে আদেশটি কর্ণাটক শিক্ষা আইনের নির্দেশের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যা মোটামুটি বিস্তৃত এবং অনেকগুলো স্কুল-কলেজকে নিয়ন্ত্রণ করে। যদি এই আইনটিও দেখা হয়, তবে এটিও এমন কিছু বলে না, যা সরকারকে মাথার স্কার্ফ নিষিদ্ধ করার ক্ষমতা দেয়।

প্রকৃতপক্ষে, এটি অনেক কিছু বলে যা প্রচলিত আইনের বিপরীত করার পরামর্শ দেয়। কারণ এটি বলে যে সরকারকে সমাজের দুর্বল অংশ, অনগ্রসর শ্রেণি এবং তর্কাতীতভাবে এই নারীদের শিক্ষার প্রচারের জন্য কাজ করতে হবে, অন্য কিছু না হলেও শুধু নারী হওয়ার কারণে। আইনটি শিক্ষা, ভারতের যৌগিক সংস্কৃতি, বৈচিত্র্য, সমৃদ্ধির কথা বলে। ফলে হিজাবের কারণে যদি এসব নারীকে শিক্ষার বাইরে থেকে যায়, তাহলে নিঃসন্দেহে তা আইনের ব্যত্যয় হবে।

সব মিলিয়ে এটা বলা যায়, মুসলিম নারীরা হিজাব পরতে পারবে না, এটা তো সংবিধানের কোথাও নেই-ই। বরং কেউ যদি এমন কোনো আইন করে, তাহলেও তা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক হবে।

গুগল নিউজে আমাদের প্রকাশিত খবর পেতে এখানে ক্লিক করুন...

খেলাধুলা, তথ্য-প্রযুক্তি, লাইফস্টাইল, দেশ-বিদেশের রাজনৈতিক বিশ্লেষণ সহ সর্বশেষ খবর

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.