আপনি পড়ছেন

ইউক্রেন যেন এক চলমান রণক্ষেত্র। বহু বছর ধরে রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে দেশটির সেনারা যুদ্ধে জীবন দিচ্ছে বলা যায়। ২০১৪ সালে ক্রিমিয়া যুদ্ধের পর থেকেই চরম যুদ্ধাবস্থায় রয়েছে দেশটির সেনারা। আর এ আট বছর ধরেই পরিখায় জীবন কাটাচ্ছেন ইউক্রেনের সেনারা। মানবেতর না হলেও সীমান্তবর্তী কমান্ড সেন্টার আর পরিখার আড়ালে সেনাদের জীবন যেন এক বালির দুর্গ। ওয়াশিংটন পোস্ট।

ukraine trenches soviet relics bunkerবাঙ্কারে ইউক্রেন সেনাদের জীবন, ছবি-ওয়াশিংটন পোস্ট

ব্যাটালিয়ন কমান্ডার ওলেক্সান্ডার পরিখার বাম দিকে মোড় নিলেন। একটা সরু পিচ-কালো গর্তের মধ্যে ঢুকলেন তিনি। এরপর কাপড়ের পর্দা সরিয়ে উঁকি দিলেন বাইরের দিকে। না, কেউ নেই। এভাবেই গত আট বছর ধরে রাশিয়া সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে কৌশলগত অবস্থানে দিন কাটাচ্ছেন সীমান্তরেখা বরাবর থাকা পরিখায়। রাশিয়া আক্রমণ করুক আর না করুক, এই সেনাদের এভাবেই ততদিন কাটাতে হবে যতদিন রুশপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদীরা থাকবে।

আনুমানিক ২ লাখ ৯ হাজার সক্রিয়-ডিউটি কর্মীদের একজন এই ওলেক্সান্ডার, যারা সম্ভাব্য রুশ আক্রমণ ঠেকাতে নিযুক্ত হয়েছেন। কিন্তু ওলেক্সান্ডারের মতো ইউক্রেনীয় সৈন্যরা ২০১৪ সাল থেকে মস্কোর দোসরদের সঙ্গে লড়াই করছে, যখন রাশিয়া ক্রিমিয়া আক্রমণ ও সংযুক্ত করে এবং পূর্ব ডনবাস অঞ্চলে রাশিয়ার সহায়তায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়। সেই লড়াইয়ে প্রাণ হারিয়েছিল প্রায় ১৪ হাজার মানুষ।

ইউক্রেনের সেই সামরিক বাহিনী এখন নেই। আমেরিকা এবং অন্যান্য ন্যাটো মিত্রদের কাছ থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন সামরিক সহায়তায় তারা আরও বেশি সশস্ত্র এবং প্রশিক্ষিত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীকে একাই লড়াই করতে হবে। ইউক্রেনের বার্ষিক আনুমানিক ৬ বিলিয়ন ডলারের সামরিক বাহিনীর বিপরীতে প্রতিরক্ষা খাতে রাশিয়ার খরচ ৬১ বিলিয়ন ডলারের বেশি। সঙ্গে রাশিয়া প্রতি বছর প্রতিরক্ষা খাতে ৬১ বিলিয়ন ডলারের বেশি ব্যয় করে। এটা ভাবলেই ওরা দুর্বল হয়ে যায়।

যখন মস্কো তাদের বাহিনীর আধুনিকীকরণ করেছে, তখন কিয়েভ ট্যাঙ্ক ও বিমান বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য পশ্চিমের ওপর নির্ভরশীল। এর অস্ত্রোগারে এখনো সোভিয়েত ইউনিয়নের ধ্বংসাবশেষ রয়েছে। সামরিক বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ইউক্রেন একটি বিমান বা সমুদ্র আক্রমণ বন্ধ করতে যথেষ্ট শক্তিশালী নয়, স্থলভাগে হয়তো কিছুটা প্রতিরোধ তৈরি করতে পারবে।

ওলেক্সান্ডার বলেন, আমাদের প্রতিরক্ষা ঢাল আমরাই। তবে কেউ আমাদের সাহায্য করতে এলে তাকে আমরা স্বাগত জানাব, কৃতজ্ঞ থাকব। ওলেক্সান্ডারের নেতৃত্বে আরেকটি পরিখা খোঁড়া হচ্ছিল পাশেই। সঙ্গেই দাঁড়িয়ে ছিলেন ২৯ বছর বয়সী কর্পোরাল ভানিয়া।

পরিখায় সেনাদের জীবন সবসময়ই যেন অন্ধকার, ধোঁয়াশার মতো। যুদ্ধাবস্থায় এই অবস্থানটিকে তুলনামূলকভাবে চতুর অ্যাসাইনমেন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়। আর এই এলাকাটি ইউক্রেনীয়রা উদ্ধার করেছিল কয়েকবছর আগে, বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হটিয়ে। ভ্যাম্পায়ার নামের একজন সৈনিককে দেখিয়ে ভানিয়া বলেন, এই যুবকরা এখানে যুদ্ধ করতে এসেছে। আমি মনে করি, ওরা ভুল সময়ে এসেছে। কারণ ফাঁড়ির শান্ত স্থিতাবস্থা যেকোনো মুহূর্তে পরিবর্তিত হতে পারে।

একটি পরিত্যক্ত পূর্ব ইউক্রেনীয় বাড়ির বেসমেন্টে রয়েছে তাদের একটি কমান্ড সেন্টার। এটাই তাদের অপারেশনের কেন্দ্রস্থল। ওলেক্সান্ডার মনে করেন, তার জন্মই হয়েছিল যুদ্ধের জন্য। ছোটবেলায় তার হাতে সবসময় একটি খেলনা বন্দুক থাকতো। ১৪ বছর বয়সে তিনি একটি সামরিক একাডেমিতে ভর্তি হন। এখন ৩৬ বছর বয়সে তিনি তার ইউক্রেনীয় সামরিক পরিষেবায় প্রায় দুই দশক পার করেছেন।

তিনি বললেন, ইউনিফর্ম পরেছিলাম এবং এখনো পরেই আছি। লাঞ্চের পর ভানিয়া তার বাঙ্কারের বিছানায় স্থির হয়ে তার কম্পিউটার খুললেন। এটা তার প্রতিদিনের রুটিন। চাপ দিলেন দ্য ফার্স্ট পারসন শুটার গেম আইকনে। তিনি একটি একে-৪৭ রাইফেলের মৌলিক কনফিগারেশন এবং একটি উন্নত রাইফেলের মধ্যে পার্থক্য শিখেছিলেন এ গেম থেকেই। তিনি বলেন, একজন যোদ্ধা কেমন হওয়া উচিত, সে ধারণা পেতেই আমি মূলত এ গেমটি খেলে থাকি। আমি একজন উপযুক্ত যোদ্ধা হতে চাই।

এই কমান্ড সেন্টারটি তিনতলা, বাইরে সশস্ত্র চেকপয়েন্ট দ্বারা ঘেরা। মেস হলটি কয়েকটা ব্লক নিচে। এছাড়াও এমন একটি বাড়িতে, যা অনেকদিন ধরে পরিত্যক্ত। এটি একটি কোলাহলপূর্ণ কয়লা-খনন গ্রাম ছিল, কিন্তু মাত্র ৩০ জন লোক রয়ে গেছে।

এখানে সৈন্যরা অশোভন রসিকতায় সময় পার করে। একজন ইভজেনি, আবাসিক কালি মাস্টার হিসেবে পরিচিত। সেই রাতেই তার পরিষেবা বুক করা হয়েছিল। তিনি আজ সবার গায়ে উল্কি আঁকবেন। এটাই তাদের আনন্দ বা বিনোদন। ভানিয়া বলেন, যোদ্ধারা যেন মনোবল না হারান, সেজন্য আমরা এ ধরনের আনন্দ উপভোগ করি।

Stay up-to-date with the latest news from Bangladesh. Our comprehensive coverage includes politics, business, sports, and culture. Get breaking news, analysis, and commentary on the issues that matter most to Bangladeshis and the international community.

Bangladesh is a country located in South Asia and is home to a diverse population of over 160 million people. It has a rich cultural heritage and a rapidly growing economy. News from Bangladesh covers a wide range of topics, including politics, economics, social issues, culture, and more. The country has made significant progress in recent years in areas such as poverty reduction, education, and healthcare. However, it still faces challenges such as corruption and environmental degradation. Bangladeshi news sources cover both local and international news to keep the public informed about the latest developments and events.