বিশ্বব্যাপী শেয়ারবাজারে ধস, তেল ও সোনার বাজারে আগুন

রাশিয়া কর্তৃক ইউক্রেনে হামলার প্রভাব হবে ভয়াবহ, বিশ্লেষকরা গত কয়েকদিন ধরেই এ কথা বলে আসছিলেন। আক্রমণের প্রথম দিনেই সেই আশঙ্কা বাস্তবে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বড় বড় শেয়ারবাজারে সূচকের ব্যাপক পতন ঘটেছে। অন্যদিকে, আগুন লেগেছে তেল ও সোনার বাজারে। যুদ্ধ চলতে থাকলে সামনে আরও ভয়াবহ দিন আসছে বলে সতর্ক করেছেন বিশেষজ্ঞরা।

শেয়ারবাজারে ধস, ফাইল ছবি

হামলা পরিচালনাকারী রাশিয়ার শেয়ারবাজারে সূচক কমেছে ৪৫ শতাংশ। অবশ্য পশ্চিমা কয়েকটি দেশের নিষেধাজ্ঞার ফলে রাশিয়ায় সূচকের এই পতন শুরু হয়েছিল কিছুদিন আগেই। এছাড়া রুশ মুদ্রা রুবলের বিনিময় হারও পড়ে গেছে ৩.৬ শতাংশ। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরপরই জাপানের টোকিও স্টক এক্সচেঞ্জের নিক্কি ২২৫ সূচক কমে গেছে ১ দশমিক ৮১ শতাংশ।

ইউক্রেন সংকটের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ভারতের শেয়ারবাজারেও। গত বুধবার দিনশেষে মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জে সেনসেক্সের সূচক ছিল ৫৭ হাজার ২৩২ দশমিক ০৬ পয়েন্টে। গতকাল বৃহস্পতিবার বাজার খোলার ঠিক আগে পুতিনের যুদ্ধের ঘোষণার পরই ধাক্কা খায় সেনসেক্স। নামতে নামতে একটা সময় ৫৪ হাজার ৩৮৩ দশমিক ২ পয়েন্টেও নেমে গিয়েছিল।

অর্থাৎ, পুতিনের যুদ্ধ ঘোষণার জেরে ২ হাজার ৭০২ দশমিক ১৫ পয়েন্ট (চার দশমিক ৭২ শতাংশ) খুইয়েছে সেনসেক্স। এ শেয়ার মার্কেটে দর নেমে যায় ৩ হাজার ৮৪টি সংস্থার শেয়ারের। একই অবস্থা ভারতের আরেক শেয়ারবাজার নিফটির। বৃহস্পতিবার নিফটির সূচক চার দশমিক ৭৮ শতাংশ বা ৮১৫ দশমিক তিন পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ২৪৭ দশমিক ৯৫।

শেয়ারবাজারে সূচকের এই ব্যাপক পতনের দিনে বেড়েছে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল, সোনা ও গ্যাসের দাম। আন্তর্জাতিক বাজারে সাত বছর পর অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম প্রতি ব্যারেল ১০০ মার্কিন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার লন্ডনভিত্তিক আগাম কেনাবেচায় প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেলের দাম সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়ে ১০৫ দশমিক ৩০ ডলারে উঠেছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে এই দাম ২০১৪ সালের পরও সর্বোচ্চ। আগের দিনও (বুধবার) প্রতি ব্যারেল তেলের দাম ৯৯ ডলার পর্যন্ত উঠেছিল। এদিকে, বিশ্ববাজারে প্রাকৃতিক গ্যাসের দাম বেড়েছে ১১ দশমিক ৬৫ শতাংশ বেড়েছে। এছাড়া ‘নিরাপদ বিনিয়োগ’ খ্যাত সোনার দামও ঊর্ধ্বমুখী। পণ্যটির আউন্সপ্রতি (২৮ দশমিক ৪ গ্রাম) দাম ২ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ১ হাজার ৯৬৮ ডলারে উঠে গেছে।