পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল আজ, মোদির কপালে চিন্তার রেখা

ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারে টানা দ্বিতীয় মেয়াদ চলছে মোদির। প্রথম মেয়াদটা যতটা মসৃণ ছিল, দ্বিতীয় দফাটা ততই বন্ধুর। বিশেষ করে রাজ্যগুলোর বিধানসভা নির্বাচনে কোনোভাবেই সুবিধা করে উঠতে পারছে না মোদির দল বিজেপি। নতুন উপসর্গ শুরু হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের নির্বাচনে জোর দিয়ে। নির্বাচনের আগে যেমন অনেকে এসে ভিড়েছে বিজেপির পতাকাতলে, নির্বাচনে হারার পর অবস্থা হয়েছে একেবারেই অপ্রত্যাশিত। আগের চেয়ে দ্রুতগতিতে দল ছেড়েছে শীতের পাখিরা।

চিন্তায় মোদি, ফাইল ছবি

অন্যান্য রাজ্যের নির্বাচনেও আশা পূর্ণ হয়নি। তাই আজ বৃহস্পতিবার যখন উত্তরপ্রদেশসহ পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা হওয়ার কথা, তখন বাড়তি টেনশন তো থাকছেই।

অবশ্য কয়েকবারের অভিজ্ঞতায় পদ্ধতি পাল্টেছে বিজেপি। সেটি হচ্ছে নির্বাচনী যুদ্ধের ব্যর্থতার দায় কোনোভাবেই যেন মোদি ম্যাজিকে দাগ না ফেলতে পারে, সেই কৌশল নেয়া। সদ্যসমাপ্ত পাঁচ রাজ্যের নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জোরদারভাবে শরীক হয়েছেন। তিনিই ছিলেন দলের স্টার প্রচারক। আজ ফলপ্রকাশের পর যদি দেখা যায় বিজেপি জিতে গেছে, তাহলে মোদি ম্যাজিকের জয়ধ্বনিই দেবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। কিন্তু ব্যর্থ হলে দায় নিতে হবে রাজ্য শাখাগুলোকেই। অর্থাৎ, বিজেপি ধরাশায়ী হলে রাজ্য নেতৃত্বের দোষ, আর জয়ী হলে সব কৃতিত্ব মোদির।

মোদি-যোগি জুটি কাজ না করলে বিজেপির জন্য তা ভয়ের কারণ

আজ ফল পাওয়া যাবে উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাব, গোয়া, উত্তরাখণ্ড ও মনিপুর রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের। পাঁচ রাজ্য হলেও বেশি নজর থাকবে উত্তরপ্রদেশকে ঘিরেই। এই রাজ্যেই দুই হাই প্রোফাইল বিজেপি সেনাপতি একসাথে হেঁটেছেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই রকম একটি পাওয়ার হাউজই যদি প্রশাসন ও প্রচার-উভয় ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়, তা ২০২৪ সালের জন্য বড় ধরনের অশনি সঙ্কেত।

টেনশন বুঝা গেলেও মুখে অবশ্য আত্মবিশ্বাসী বিজেপি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর দলের সদর দপ্তরে বুধবার বলেছেন, আগামীকাল ফলপ্রকাশের পর অখিলেশ যাদবকে বলতে শোনা যাবে- ভোটযন্ত্র বেইমানি করল। কিন্তু লখনৌয়ে সমাজবাদী পার্টির সহ-সভাপতি কিরণময় নন্দ স্পষ্ট বললেন, বাজার চাঙ্গা রাখার জন্যই এক্সিট পোলের ওই ফলাফল। বৃহস্পতিবার দেখা যাবে প্রকৃত ফলাফল সম্পূর্ণ উল্টো। আর সেটা হচ্ছে উত্তরপ্রদেশে যোগীরাজের অবসান। সূচনা হচ্ছে মোদিরাজের সমাপ্তি পর্বের।

এদিকে বিজেপি যে সত্যই টেনশনে তার নজির দেখা গেল হাতেনাতেই। সাধারণত বিরোধী দলে থাকা প্রার্থীরা ভোটগণনায় গোালমাল হওয়ার আশঙ্কা করেন। কিন্তু এই প্রথম দেখা গেছে, সরকারি তথা শাসক দল নির্বাচন কমিশনে গিয়ে নিজেদের আশঙ্কার কথা জানিয়ে বলেছে, উত্তরপ্রদেশের ভোটগণনা শান্তিপূর্ণ হবে না।

আজকে ফল হতে যাওয়া পাঁচ রাজ্যের চারটি- গোয়া, উত্তরাখণ্ড, মণিপুর, উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারে আসীন। সুতরাং এই চার রাজ্যের যে কোনও ব্যর্থতা ঠেকানোই আপাতত চ্যালেঞ্জ মোদির। আর রাহুল গান্ধীর টেনশন একটাই। পাঞ্জাবে কী হবে? তাঁর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার নির্ভর করছে এই রাজ্যের ফলে।

ফল জানতে আজ সারাদিন লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যমগুলো।