রুশ হামলা প্রতিহত করতে প্রস্তুত কিয়েভ!

যখন রাশিয়ান আক্রমণ শুরু হয় এবং প্রথমবার কিয়েভে সাইরেন বেজে ওঠে, তখন এখানকার কিছু লোক আশঙ্কা করেছিল, বিকেল নাগাদ শহরটি রাশিয়ার দখলে যেতে পারে। কিয়েভের বাতাসে উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে বর্ম এবং ভারী অস্ত্রের একটি দীর্ঘ সামরিক বহরের খবর ভাসছে। বিবিসি।

রাশিয়ার আগ্রাসন থেকে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ রক্ষায় নানা কৌশল

সামরিক বিশ্লেষকরা বলছেন, ১৯৯৫ সালে চেচনিয়া প্রজাতন্ত্রে যখন বিদ্রোহ দমন করার চেষ্টা করেছিল রাশিয়া, তখন রাশিয়ানদের কিছু কৌশলগত ত্রুটি ছিল। যুদ্ধের প্রথম দিনে ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনী সম্পর্কে ঐকমত্য ছিল যে, তারা ২০১৪ সালের তুলনায় অনেক বেশি শক্তিশালী। তবে ইউক্রেনের বাহিনী রাশিয়াকে ক্রিমিয়া দখল করা এবং পূর্ব ইউক্রেনে দুটি বিচ্ছিন্ন ছিটমহল প্রতিষ্ঠা করা বন্ধ করতে পারেনি।

এক সপ্তাহেরও বেশি ঘন মেঘের পর গত কয়েকদিন কিয়েভের আবহাওয়া উজ্জ্বল এবং রৌদ্রোজ্জ্বল হয়েছে। তার মানে, স্যাটেলাইটে ভূমিতে চলাফেরার দৃশ্য স্পষ্ট হয়েছে। কিয়েভের উত্তর-পশ্চিমে ৪০ মাইল রাশিয়ান কনভয় ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ছে এবং পুনর্গঠিত হচ্ছে। মার্কিন প্রতিরক্ষা বিভাগ সর্বশেষ জানিয়েছে, কিয়েভের নিকটতম সামরিক বহর নড়ছে না।

কিয়েভের চারপাশের যুদ্ধ উত্তর-পশ্চিমে কেন্দ্রীভূত হয়েছে এবং হামলা শুরুর প্রথম সকাল থেকেই যুদ্ধ চলছে। রাশিয়ান বিমানবাহী সৈন্যরা হোস্টোমেল এবং ইরপিনের কাছে একটি কার্গো বিমানবন্দরে অবতরণ করেছে। ছোট শহরগুলো থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। এখন রুশ বাহিনী কিয়েভে চূড়ান্ত হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। কিন্তু ইউক্রেনের সেনারা তাদের বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

গত কয়েকদিনে ইরপিন এবং হোস্টোমেল বিমানবন্দরের চারপাশে রুশ বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সৃষ্টি করেছে ইউক্রেনের সেনারা। ঘন বনভূমির বেল্টে লুকিয়ে থাকা বন্দুকলাইন থেকে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে অবিচলিত কামানের গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে।

খবরে বলা হচ্ছে, কিয়েভের চেকপয়েন্টগুলো এখন ব্যারিকেডে ঢাকা। শহর জুড়ে পুরুষরা বালির ব্যাগ ভর্তি বস্তা ফেলে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা নিয়েছে। কিয়েভের ধাতুকর্মীরা ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কৌশলগত জংশনে এবং দ্বৈত ক্যারেজওয়েতে অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ব্যারিকেড ও অস্ত্র প্রস্তুত।

কিয়েভ একটি বিশাল শহর। সড়কগুলো গলিত পাথর দিয়ে সরু করে দেওয়া হয়েছে। অনেক ভবন রয়েছে যেখানে রয়েছে বিশাল বেসমেন্ট এবং আন্ডারগ্রাউন্ড কম্পাউন্ড। সবমিলিয়ে মনে করা হচ্ছে, কিয়েভের সড়কে লড়াই দীর্ঘ হবে।