আমিরাত-ইসরায়েলের চাপের মুখে যুক্তরাষ্ট্র

মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি নিরাপত্তা কৌশল প্রণয়নের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লবিং করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েল। দেশ দুটির আশঙ্কা, যদি ইরানের পারমাণবিক চুক্তি পুনর্বহাল হয়ে যায়, তাহলে তাদের নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে যাবে। এছাড়া ইউক্রেন যুদ্ধে তেলের দাম বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট সংকট মোকাবেলা করতে যুক্তরাষ্ট্রের সহযোগিতা চেয়েছে আমিরাত ও ইসরায়েল। ব্লুমবার্গ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে লবিং করছে সংযুক্ত আরব আমিরাত ও ইসরায়েল

ইসরায়েল ও আমিরাত ২০২০ সালে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে। উভয় দেশই একটি সুসংহত নিরাপত্তা দাবি করছে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে। যার মধ্যে রয়েছে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা এবং গোয়েন্দা তথ্য ভাগাভাগির মতো বিষয়।

বলা হচ্ছে, ইসরায়েল এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত এ বিষয়ে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যোগাযোগ করেছে। বাইডেন প্রশাসনের কর্মকর্তারা আলাদাভাবে ও উদ্বেগের সাথে বিষয়টি সমন্বয় করছেন। ইরান মধ্যপ্রাচ্যের চারপাশে সশস্ত্র প্রক্সি যুদ্ধে তহবিল যোগাতে তেল অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে বলে দেশ দুটির আশঙ্কা।

মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এমন একটি অঞ্চলে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেখানে তার অংশীদাররা বহিরাগত আগ্রাসন থেকে নিরাপদ এবং ইরানের হুমকি মোকাবেলায় আমরা তাদের সাথে কাজ করছি।

বাইডেন প্রশাসনের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলছেন, ইরানের ক্রমবর্ধমান হুমকির সম্পর্কে আলোচনা চলমান রয়েছে। তবে সুনির্দিষ্ট বা নতুন পরিকল্পনার ব্যাপারে মার্কিন প্রতিশ্রুতি এখন চূড়ান্ত করা হয়নি।

এ ব্যাপারে ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। দেশটির প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি। সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর মন্তব্য চেয়ে একটি ইমেল পাঠালেও তার জবাব আসেনি।

উপসাগরীয় আরব দেশগুলোর সরকার এবং ইসরায়েল ইরানের সাথে করা ২০১৫ সালের পারমাণকি চুক্তির বিরোধিতা করেছিল। তারা ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের ক্ষমতা, লেবাননের হিজবুল্লাহ এবং ইয়েমেনের হুথিসহ মিলিশিয়াদের সমর্থন নিয়ে তাদের উদ্বেগের সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে।

এখন উপসাগরীয় আরব সরকারগুলো রাশিয়া এবং চীনের সাথে সম্পর্ক প্রসারিত করতে চাওয়ায় চাপের মুখে আছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি এখন মস্কোকে বিচ্ছিন্ন করা এবং জ্বালানি বাজারের ব্যাপারে উপসাগরীয় দেশগুলোকে আশ্বস্ত করতে চাইছে। কারণ পুতিনের ইউক্রেনে আক্রমণ তেলের দাম ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রয়েছে।

নিরাপত্তার জন্য তেল: হোয়াইট হাউসের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সিনিয়র মিডল ইস্ট ডিরেক্টর বারবারা লিফ গত সপ্তাহে তেলের বাজার নিয়ে উত্তেজনা কমাতে আবুধাবি সফর করেন। সেখানে শেখ তাহনুন বিন জায়েদ এবং সুলতান আল জাবেরের সাথে বৈঠক করেন তিনি।

ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের ফলে উদ্ভূত তেলের বাজারের বাড়তি চাপ যে সামাল দিতে হচ্ছে তা স্বীকার করে নিয়েছেন মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের কর্মকর্তারা। এ চসপ প্রশমনে যুক্তরাষ্ট্র নিয়মিত সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং অন্যান্যদের সাথে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।