কিয়েভে কারফিউ, রুশ সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক আগ্রাসনের ২০তম দিনে দেশটির রাজধানী কিয়েভে হামলা জোরদার করেছে রুশ বাহিনী। এতে ২ জনের প্রাণহানির পর রাশিয়ানদের মরণ কামড় প্রতিরোধে শহরটিতে ৩৫ ঘণ্টার কারফিউ জারি করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিৎচকো এ ঘোষণা দেন, যা স্থানীয় সময় রাত ৮টায় শুরু হওয়ার কথা।

কিয়েভে রুশ হামলা, পাশে ভলোদোমির জেলেনস্কি

রয়টার্স জানায়, সোমবার শেষ রাতে কিয়েভে রাশিয়ার একটি ড্রোনে হামলা চালায় ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী। তারপর রাজধানীজুড়ে বুলেটের ঝলকানি দেখা যায়, শহরের কেন্দ্রস্থলে বড় ধরনের জোড়া বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। আজকের দিনটিকে ‘কঠিন ও বিপজ্জনক মুহূর্ত’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন কিয়েভের মেয়র।

কিয়েভকে ইউক্রেনের প্রাণ আখ্যায়িত করে সেটি রক্ষা করার প্রত্যয় ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ইউরোপের স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার প্রতীক এই শহর। সম্মুখ লড়াইয়ের এই ঘাঁটিকে কখনোই ছেড়ে দেব না আমরা।

আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, রুশ বাহিনীর বহর ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের কেন্দ্রস্থলের দিকে এগুচ্ছে, হামলা করেছে উপকণ্ঠের কয়েক স্থানে। খারকিভ, মারিউপোলসহ অন্যান্য শহরগুলোর মতো কিয়েভের অবস্থাও একই হওয়ার শঙ্কা প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।

এদিকে, গতকাল সোমবার রাতে রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে অভিযানে অংশ নেওয়া রুশ সেনাদের আত্মসমর্পণের আহ্বান জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদোমির জেলেনস্কি। তিনি বলেন, আত্মসমর্পণ করলে ভদ্র-মর্যাদাসম্পন্ন মানুষের মতো আচরণ করা হবে। মানুষ হিসেবে গ্রহণ করতে আমরা প্রস্তুত, এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের।

এ সময় গত ২০ দিনে চেচনিয়ায় আগ্রাসনের চেয়েও বেশি রুশ সেনার মৃত্যুর কথা উল্লেখ করেন তিনি। রাশিয়ার আগ্রাসী সেনাদের উদ্দেশে জেলেনস্কি বলেন, আপনারা বেঁচে থাকতে চান, সেটা আমি জানি। এই সংঘাতে এখন পর্যন্ত ১২ হাজারের বেশি রুশ সেনা মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেছেন ইউক্রেনের প্রতিরক্ষা বাহিনী। এমন তথ্য স্বীকার বা অস্বীকার- কোনোটিই করেনি রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বাহিনী।

মস্কো বলছে, তারা লক্ষ্যপূরণ না হওয়া পর্যন্ত অভিযান অব্যাহত রাখবে। তবে রুশ সেনাদের উদ্দেশে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, আপনাদের কথাবার্তা আমাদের কানে আসে। এই নিরর্থক যুদ্ধ নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন, তা জানি। এজন্য বিশ্বজুড়ে মস্কোর মর্যাদাহানিতে যে কষ্ট পাচ্ছেন, তাও আমরা বুঝি।