ইমরানের ক্ষোভ: আমরা কি পশ্চিমাদের চাকর?

রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দেওয়ার জন্য পাকিস্তানের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছিলেন ২২টি দেশের রাষ্ট্রদূতেরা। তা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। তিনি বলেন, আমরা কি তাদের চাকর নাকি যে, তারা যেভাবে বলে সেভাবে বক্তব্য-বিবৃতি দেব!

ইমরান খান

গতকাল রোববার খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মলকনাদ জেলায় দেওয়া এক ভাষণে ইমরান দাবি করেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য দেশসহ ২২টি দেশের রাষ্ট্রদূতেরা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে রাশিয়া ও ইউক্রেনের লড়াইয়ে ইসলামাবাদকে মস্কোর বিরুদ্ধে ভোট দিতে বলেন। এর মাধ্যমে তারা মূলত প্রেটোকল ভেঙেছেন।

তাদের কথায় বিরক্ত হয়েছিলেন ইমরান। তিনি পাল্টা ওইসব রাষ্ট্রদূতকে বলে বসেন, আপনারা ভারতকে এ ধরনের কথা বলতে পারবেন? আসলে ভারতকে বলার সময় ভয়ে মরে যান তারা। আমার তাদের চাকর নাকি যে, শেখানো কথা মতো রাশিয়ার বিরুদ্ধে বিবৃতি দেব!’

রাশিয়ার হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ইউক্রেনের একটি এলাকা

জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ইউক্রেনের যুদ্ধে নিয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল, তাতে সমর্থনের জন্য পাকিস্তানকে অনুরোধ করেন ২২ দেশের দূতরা। মার্চ মাসের শুরুতেই ফ্রান্স, বেলজিয়াম, স্পেন, জার্মানি, জাপানসহ ২২টি দেশের দূতদের স্বাক্ষর করা যৌথ বিবৃতিতে এমন আহ্বান জানানো হয়েছিল। যদিও সাধারণ পরিষদের ওই প্রস্তাবে রাশিয়ার বিপক্ষে যায়নি পাকিস্তান। ভারত বাংলাদেশের মতো ভোটদানে বিরত ছিল ইসলামাবাদও।

ইমরান দাবি করেন, আগের সরকারগুলোর কারণেই পাকিস্তানের এরকম অবস্থা হয়েছে। তার সময়ে তিনি পাকিস্তানকে অন্যভাবে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। তার আমলে পাকিস্তান কখনো বিদেশি শক্তির কাছে মাথা নত করেনি বলেও দাবি করেন ইমরান খান। তিনি বলেন, অতীতে আমেরিকার কাছে মাথা নত করতো ইসলামাবাদ। বিদেশি শক্তির মুখের ওপর কিছু বলতে পারত না। এখন অবস্থা পাল্টেছে। পাকিস্তান এখন নির্বিচারে তাদের সব কথা মেনে নেয়না।

একই স্থানে ভারতের পররাষ্ট্রনীতিরও প্রশংসা করেন ইমরান। তিনি বলেন, আমি প্রতিবেশী দেশ ভারতের প্রশংসা করছি। তাদের পররাষ্ট্রনীতি সব সময় স্বাধীন ছিল। এর ফলে তারা বিভিন্ন স্থানে নিজেদের মতো করে মতামত দিতে পারে। আজ তারা যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একটি জোটে (কোয়াড) আছে। এরপরও তারা রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করছে। এটি তাদের স্বাধীন পররাষ্ট্রনীতির কারণেই সম্ভব হয়েছে।