রাশিয়ায় চীনা অস্ত্রের চালান, যুক্তরাষ্ট্র বলছে প্রমাণ নেই!

রাশিয়ার কাছে সাম্প্রতিক সময়ে কোনো চীনা অস্ত্র চালানের প্রমাণ পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মঙ্গলবার একজন শীর্ষ মার্কিন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। সম্প্রতি ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনে বেইজিং মস্কোকে সাহায্য করার বিষয়ে ওয়াশিংটন উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল। তবে চীন রাশিয়াকে সাহায্য করার বিষয়টিকে গুজব আখ্যায়িত করে আসছে। এএফপি, ডিফেন্স পোস্ট।

রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, আমরা দেখিনি এবং আমাদের হাতে প্রমাণ আসেনি যে, চীন রাশিয়াকে সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহ করেছে। তবে অবশ্যই এ ব্যাপারে আমরা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন গত শুক্রবার তার চীনা প্রতিপক্ষ শি জিনপিংয়ের সাথে প্রায় দুই ঘণ্টার ফোনালাপ করেন। হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, আলাপে বাইডেন পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা থেকে রাশিয়ার অর্থনীতিকে উদ্ধার করা বা মস্কোর যুদ্ধ প্রচেষ্টায় সহায়তা করার বিরুদ্ধে শি-কে সতর্ক করেছিলেন।

সুলিভান বলছেন, আমাদের পর্যবেক্ষণে বিষয়টি থাকবে। চীনা প্রেসিডেন্টকে রাশিয়ায় সামরিক সরঞ্জাম সরবরাহের প্রভাব এবং এর পরিণতি স্পষ্ট করে জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দুই নেতা একে অপরকে খুব ভালভাবে বোঝেন।

খবরে বলা হচ্ছে, বাইডেন ইউরোপে ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ব্রাসেলসে তিনি ইইউ নেতাদের সাথে সাক্ষাত করবেন এবং আগামীকাল বৃহস্পতিবার ন্যাটো মিত্রদের সাথে বৈঠকে যোগ দেবেন। সুলিভান বলছেন, ব্রাসেলসে থাকাকালীন ইউক্রেনের সংঘাতে চীনের সম্ভাব্য অংশগ্রহণের প্রশ্নে অবশ্যই পরামর্শ করবেন বাইডেন।

হোয়াইট হাউসের মতে, রাশিয়ার সাথে চীনের সম্ভাব্য সহযোগিতার ইস্যুতে বাইডেন এবং ইউরোপীয় অংশীদাররা বিস্তারিত আলোচনা করবেন। সফরে তিনি এবং ইউরোপীয় নেতারা বৃহস্পতিবার রাশিয়ার বিরুদ্ধে ‌অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ' উন্মোচন করবেন এবং ইতোমধ্যে যে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা রয়েছে তা কঠোর করবেন বলে জানাচ্ছেন সুলিভান।

নতুন নিষেধাজ্ঞার ঘোষণাটি শুধু নতুন পদক্ষেপের উপর ফোকাস করবে না, বরং নিষেধাজ্ঞাগুলো যাতে রাশিয়া এড়িয়ে যেতে না পারে সেজন্য নতুন নিষেধাজ্ঞার কথা চিন্ত করছে পশ্চিমারা।

২০১৪ সালে শুরু হওয়া রুশ-ইউক্রেনীয় সংঘাত উত্তেজনার এক পর্যায়ে যুদ্ধে রূপ নেয়, যখন রাশিয়া গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেন আক্রমণ শুরু করে। আন্তর্জাতিকভাবে একে আগ্রাসন যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই আক্রমণ ইউরোপীয় রাষ্ট্রটির ওপর সবচেয়ে বড় সামরিক হামলা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ইউরোপের সবচেয়ে বড় শরণার্থী সংকট সৃষ্টি করেছে এই সংঘাত। বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়েছে লাখ লাখ মানুষ।

২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ক্রিমিয়া দখল করে নেয়। রাশিয়ান-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীরা দক্ষিণ-পূর্ব ইউক্রেনের অংশ দখল করতে ডনবাসে যুদ্ধ শুরু করে। ২০২১ সালে রাশিয়া ইউক্রেনের সীমান্তে বড় ধরনের সামরিক তৎপরতা শুরু করে।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অভিযোগ তোলেন, ইউক্রেন নব্য-নাৎসিদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে, যারা রাশিয়ান ভাষী সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করে। পুতিন আরও অভিযোগ করেন, ন্যাটো ২০০০ সালের গোড়ার দিকে পূর্ব দিকে সম্প্রসারণ নীতি গ্রহণ করে রাশিয়ার নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।