নিষেধাজ্ঞাকে উল্টো পশ্চিমাদের ওপর প্রয়োগ, বিপাকে ইউরোপ!

ইউক্রেনে হামলার পর রাশিয়ার ওপর বিভিন্ন রকম নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা বিশ্ব। সামরিকভাবে রাশিয়াকে শায়েস্তা করতে না পেরে দেশটিকে আর্থিকভাবে চাপে ফেলতে সব ধরনের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তারা। তবে মস্কো এরইমধ্যে বেশ কিছু ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞাকে উল্টো শত্রুদের ওপরই প্রয়োগ করে বিপাকে ফেলছে তাদের। খবর আলজাজিরা।

রুশ প্রেসিডেন্ট পুতিন

জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংকসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ায় চাপের মুখে পড়েছে রাশিয়া। ডলারের বিপরীতে কমে গেছে রুবলের দাম। সুদের হার পরিবর্তন করে এটি ঠিক রাখার চেষ্টা করেছিল পুতিন প্রশাসন। তবে এতে তেমন সফলতা আসেনি। এবার বিষয়টি নিয়ে এমন এক পদক্ষেপ নিয়েছে পুতিন সরকার, যাতে এক ঢিলে দুই পাখি মরছে!

পুতিন জানিয়েছেন, এখন থেকে পশ্চিমাদের কাছে বিশেষ করে ‘অবন্ধু দেশগুলো’র তিনি কেবল রুশ মুদ্রা রুবেলেই বিক্রি করবেন গ্যাস। অর্থাৎ রাশিয়ার কাছ থেকে গ্যাস ও তেল কিনলে অর্থ পরিশোধ করতে হবে রুবলের মাধ্যমে। এতে লেনদেনের নিষেধাজ্ঞা কিছুটা এড়ানো যাবে, আবার রুবলও শক্তিশালী হবে। রুশ সংস্থা গ্যাজপ্রমকে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে এক সপ্তাহ সময় বেঁধে দিয়েছেন পুতিন।

এখন থেকে গ্যাসের দাম পরিশোধ করতে হবে রুবলে

বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, এই ঘোষণার ফলে যারা মূলত রাশিয়ান গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল- ইউরোপের সেই দেশগুলো বেকায়দায় পড়বে। ইউরোপের ৪০ শতাংশ গ্যাস আসে রাশিয়া থেকে। ফলে পুতিনের ঘোষণার পরই জ্বালানি বাজারে প্রভাব পড়ে।

ইংল্যান্ড-নেদারল্যান্ডসের মতো বিভিন্ন দেশে এরই মধ্যে গ্যাসের দাম ৩৩ শতাংশ বেড়ে গেছে। কারণ ইউরো বা ডলারের পরিবর্তে যদি রুবলে এর বিনিময় শোধ করতে হয় তাহলে প্রতিদিন ৮০-১০০ কোটি ডলারের সমপরিমান রুবলের প্রয়োজন হবে, যা সংগ্রহ করা কঠিনই হবে ‘অবন্ধু দেশগুলো’র জন্য। এর জন্য তাদেরকে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোর দ্বারস্থ হওয়া ছাড়া কোনো উপায়ই নেই। অথচ এসব ব্যাংকের অধিকাংশের ওপর নিষেধাজ্ঞা চাপিয়ে রেখেছে তারাই।

জানা গেছে, ইউক্রেনে হামলার পর থেকে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার মুদ্রা রুবলের দর ২২ শতাংশ পর্যন্ত কমে গিয়েছিল। তবে পুতিনের এ ঘোষণার পর আবারো রুবলের চাঙ্গাভাব দেখা গেছে।

উল্লেখ্য, যেসব দেশের ওপর অবরোধ-নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, সেসব দেশ আন্তর্জাতিক চাপ এড়াতে অনেক সময় নিজেদের মুদ্রায় লেনদেন করে থাকে। ইরান থেকে তেল কেনার ক্ষেত্রে ভারতসহ বিভিন্ন দেশ এ পন্থা অবলম্বন করে থাকে।