শেষ জ্বালানি ঘাঁটিতে হামলার দাবি রাশিয়ার

ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভের শহরতলিতে দেশটির শেষ বড় জ্বালানি ঘাঁটি এবং বিদেশি ভাড়াটে সৈন্যদের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ধ্বংস করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ দাবি করে। ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর অবশিষ্ট জ্বালানি ঘাঁটির মধ্যে এটি ছিল বৃহত্তম, যেখান থেকে সামরিক বাহিনীতে জ্বালানি সরবরাহ করা হতো।

কিয়েভের শহরতলিতে জ্বালানি ঘাঁটিতে হামলা

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ মস্কোতে একটি দৈনিক ব্রিফিংয়ে বলেন, গত বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় রাত আটটায় উচ্চ-নির্ভুল মাত্রার সমুদ্রভিত্তিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র কালিব্র কিয়েভের কাছে কালিনোভকার বসতিতে একটি জ্বালানি ঘাঁটিতে আঘাত করে। 

এছাড়া বিদেশি ভাড়াটে সৈন্যদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রেও ব্যালিস্টিক ও ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র দ্বারা আঘাত করা হয়েছিল, যা একটি মোবাইল স্বল্প-পাল্লার ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থেকে ছোড়া হয়। কোনাশেনকভ বলেন, কেএ-৫২ এবং এমআই২৬ হেলিকপ্টারের সমন্বয়ে তৈরি নাইট হান্টারের একটি দল এই অভিযান চালিয়ে সাতটি ট্যাঙ্কসহ ২৪টি সামরিক সরঞ্জাম ধ্বংস করেছে। দলটি ইউক্রেনের সামরিক অবকাঠামোর ৫১টি বস্তুকে আঘাত করেছে।

রুশ হামলায় আগুন জ্বলছে একটি ভবনে

তিনি উল্লেখ করেন, নাইট হান্টার ইউক্রেনের ৫১টি সামরিক বস্তুতে আঘাত করেছিল। এর মধ্যে ছিল দুটি কমান্ড সেন্টার, তিনটি রকেট লঞ্চার, দুটি বুক-এম১ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এবং ডিনিপ্রপেট্রোভস্ক এলাকায় একটি ঝ-৩০০ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার রাডার, তিনটি ডি-৩০ আর্টিলারি সরঞ্জাম, রকেট এবং আর্টিলারি অস্ত্র ও গোলাবারুদের দুটি গুদাম, সামরিক সরঞ্জামের ঘনত্বের ২৬টি এলাকা ইত্যাদি। রুশ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের চারটি ড্রোনও ভূপাতিত করেছে।

রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এ মুখপাত্র জানান, সামগ্রিকভাবে বিশেষ সামরিক অভিযানের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২৬১টি ড্রোন, ২০৪টি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, এক হাজার ৫৮৭টি ট্যাঙ্ক এবং অন্যান্য সাঁজোয়া যুদ্ধ যান, ১৬৩টি একাধিক রকেট লঞ্চার, ৬৩৬টি ফিল্ড আর্টিলারি এবং মর্টার, বিশেষ সামরিক বাহিনীর এক হাজার ৩৯৭টি যানবাহন ধ্বংস করা হয়েছে।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনে তার যুদ্ধ শুরু করেছে। এর পর থেকে ইউক্রেনে কমপক্ষে এক হাজার ৩৫ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন এবং এক হাজার ৬৫০ জন আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হবে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার মতে, ৩৬ লক্ষাধিক ইউক্রেনীয় প্রতিবেশী দেশগুলিতে পালিয়ে গেছেন। আরও কয়েক লাখ দেশের অভ্যন্তরে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।