প্রধানমন্ত্রী: আ.লীগের লোকজনই জিয়াকে ধরে এনে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করিয়েছিল

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান নিজের ইচ্ছায় নয়, বরং সামরিক কর্মকর্তা হিসেবে ধরে এনে তাকে দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করানো হয়েছিল। এই কাজটা করেছিলেন আওয়ামী লীগের নেতারাই। তারাই জিয়াকে দিয়ে ঘোষণা পাঠ করিয়েছিলেন।

গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা

স্বাধীনতা দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় রোববার ২৭ মার্চ, এসব কথা বলেন দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক হান্নান সাহেব ২৬ মার্চ দুপুর আড়াইটায় প্রথম স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। ওখানে আরো যারা ছিলেন, পর্যায়ক্রমে তারা একে একে এটি পাঠ করেন। ওই সময় জহুর আহমেদ চৌধুরী সাহেব বলেছিলেন, আর্মির একটা লোক নিয়ে আস— তাহলে একটা যুদ্ধ যুদ্ধ ভাব আসবে। মেজর রফিকের বইয়ে এ কথা উল্লেখ আছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সোয়াত জাহাজ থেকে পাকিস্তানিদের অস্ত্র খালাস করতে গিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান। ২৫ মার্চ থেকে সে তো কোনো বাঙালি সৈনিক কিংবা কাউকে বাঁচানোর চেষ্টা করেনি। এ কারণেই সেখানে সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটে। সেখানে থাকা অন্য বাঙালি অফিসাররা তাদের সৈন্যদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে চলে গিয়েছিল। কিন্তু জিয়া কেন ২৫ মার্চ পর্যন্ত সেখানে থাকে? উল্টো যারা চট্টগ্রামে ব্যারিকেড দিয়েছিল তাদের গুলি করেছে, তাদেরকে মেরেছে।

আওয়ামী লীগ প্রধান বলেন, জিয়া যখন সোয়াত জাহাজ থেকে অস্ত্র নামাতে যায়, তখন সবাই তাকে ধরে এবং আটকায়। এরপর তাকে ধরে নিয়ে কালুরঘাট বেতার কেন্দ্রে আসা হয় এবং তাকে দিয়ে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করানো হয়। কেউ যদি এতটুকুও করে, সেটা কখনোই অস্বীকার করেনি আওয়ামী লীগ। যথাযোগ্য মর্যাদা তাকে দিয়েছিল। কিন্তু সেটা সে রক্ষা করতে পারেনি। উল্টো ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, যার পেছনে জিয়াউর রহমানের হাত ছিল। মোশতাক ও জিয়া মিলেই তো এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। যে কারণে পরবর্তীতে খুনিদের দায়মুক্তি দিয়ে পুরস্কৃতও করা হয়েছিল।

শেখ হাসিনা আরো বলেন, পাকিস্তানের সেনা কর্মকর্তা আসলাম বেগ মুক্তিযুদ্ধের সময় জিয়াউর রহমানকে প্রশংসামূলক চিঠি দিয়েছিল। তাহলে প্রশ্ন হলো— যখন দেশে গণহত্যা চালিয়েছিল পাকিস্তানি বাহিনী, তখন জিয়াউর রহমানকে কেন এই চিঠি লিখবে? আসরে সেক্টর কমান্ডার হলেও যুদ্ধক্ষেত্রে থাকেনি জিয়াউর রহমান। যেখানে গোলাগুলি চলতো, সেখান থেকে ৩ মাইল দূরে চলে যেতো সে।

চট্টগ্রামের আমাদের মোশাররফ ভাই এখনো বেঁচে আছেন, তারা একই সঙ্গে রণক্ষেত্রে ছিল। যার জন্য নাম দিয়েছিল মিস্টার রিট্রিট। বিএনপি দেখাতে পারবে না যে, সে (জিয়া) পাকিস্তানি কোনো সৈনিকের ওপর একটা গুলি চালিয়েছে, কিংবা পাকিস্তানিদের বিপক্ষে একটি গুলি চালিয়েছে। অথচ সে নাকি মুক্তিযোদ্ধা, বলেন প্রধানমন্ত্রী।