যে কারণে আটকে আছে ঢাকা-শিলিগুড়ি ট্রেন চলাচল

বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানী ঢাকার সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের শিলিগুড়ির মাঝে মিতালী এক্সপ্রেস চালুর কথা ছিল। তবে ভিসা জটিলতার কারণে এই রুটে যাত্রীবাহী ট্রেন চালু হচ্ছে না। কবে নাগাদ এটি চালু হবে, তাও নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারছে না। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসব তথ্য মিলেছে।

চিলাহাটি-হলদিবাড়ী রেলপথ উদ্বোধন, ফাইল ছবি

গত ১৫ মার্চ মিতালী এক্সপ্রেস ছাড়ার সময়সূচি ও ভাড়া নির্ধারণের বিষয়টি জানিয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল রেলওয়ের মহাপরিচালকের দপ্তর। এতে বলা হয়, ট্রেনটি ভারতের নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশন থেকে প্রতি সপ্তাহের রবি ও বুধবার বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে আসবে। দুপুর ১২টা ৫৫ মিনিটে হলদিবাড়ি স্টেশন হয়ে ১টা ৫৫ মিনিটে নীলফামারী ডোমার চিলাহাটি স্টেশনে পৌঁছাবে এটি। ট্রেনটি ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে পৌঁছাবে রাত সাড়ে ১০টায়।

আবার ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন থেকে প্রতি সপ্তাহের সোম ও বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে ছেড়ে যাবে মিতালী এক্সপ্রেস। ভোর ৫টা ৪৫ মিনিটে চিলাহাটি হয়ে ৬টা ৫ মিনিটে হলদিবাড়ি এবং সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনে পৌঁছাবে ট্রেনটি। ঢাকা-জলপাইগুড়ির ৫৯৫ কিলোমিটারের পথে এসি (বাথ) ৪ হাজার ৯০৫ টাকা, এসি (চেয়ার) ৩ হাজার ৮০৫ টাকা এবং সাধারণ আসনে ২ হাজার ৭০৫ টাকা ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। করোনাকালীন বিধিনিষেধ শিথিল হওয়ায় যাত্রীবাহী ট্রেন চলুর দাবি জানিয়ে আসছেন যাত্রীরা।

বাংলাদেশ-ভারত রেল যোগাযোগ, ফাইল ছবি

রেল মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে ফের পর্যটক ভিসা চালু হলে চিলাহাটি-হলদিবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে। ভিসা জটিলতার বিষয়টি স্বীকার করে রেলের পশ্চিমাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক মিহির কান্তি গুহ বলেন, দুই দেশের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলছে, সমস্যা দূর হলে দ্রুত ট্রেন চালু হয়ে যাবে।

দীর্ঘ ৫৫ বছর পর ২০২১ সালের ১ আগস্ট চালু হয় চিলাহাটি-হলদিবাড়ীর মধ্যকার রেলপথটি, যা দুই দেশের মধ্যে ইতিহাস সৃষ্টি করে। পাক-ভারত যুদ্ধের সময় ১৯৬৫ সালে বন্ধ হয়ে যায় দুই অঞ্চলের যোগাযোগের অন্যতম এই রেলপথটি। পুনঃস্থাপনের পর ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর রেলপথটি যৌথভাবে উদ্বোধন করেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী।

সে সময় ঢাকাস্থ ভারতীয় হাইকমিশন জানিয়েছিল, এই রেলপথ দিয়ে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের রপ্তানিযোগ্য পণ্য আনা-নেয়া চলবে, যা দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যকে শক্তিশালী করবে। এটি আঞ্চলিক বাণিজ্য সম্প্রসারণ এবং সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এর মধ্য দিয়ে উভয় দেশের প্রধান বন্দর ও স্থল বন্দরগুলোতে রেল নেটওয়ার্কের প্রবেশাধিকার বাড়বে।

গুরুত্বপূর্ণ এই রেল রুটটি পুনরায় চালু হলে বাংলাদেশ থেকে নেপাল, ভুটান এবং ভারতের সেভেন সিস্টার হিসেবে পরিচিত সাতটি (অরুণাচল, আসাম, মেঘালয়, মণিপুর, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরা) রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশের যোগাযোগ ও ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে।