পশ্চিমাদের ‘কাপুরুষ’ বললেন জেলেনস্কি!

সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েও প্রয়োজনের মুহূর্তে পাশে না থাকায় পশ্চিমাদের প্রকারন্তরে কাপুরুষ আখ্যা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। আক্ষেপ করে বলেছেন, মারিওপলের প্রতিরোধকারী সেনাদের সাহসের এক শতাংশও যদি পশ্চিমাদের মধ্যে থাকতো!

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি

দুনিয়ার অন্যতম সেরা সামরিক শক্তির বিরুদ্ধে এক মাসেরও বেশি সময় ধরে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে ইউক্রেন। রুশ হামলায় ইউক্রেনের যে ক্ষতি হচ্ছে তা ধারণাতীত, বর্ণনাতীত। তবুও আত্মসমর্পণের কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে। প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি, সেনা বা সাধারণ জনগণ- কারো পক্ষ থেকেই সেরকম আভাস পাওয়া যায়নি। অথচ পশ্চিমা বিশ্ব এ লড়াইয়ে যে ভূমিকা রেখেছে সেটাকে লজ্জাজনকই মনে করছেন জেলেনস্কি। সরাসরি বলেই দিয়েছেন, পশ্চিমাদের সাহসের বড় অভাব।

দেশটা প্রায় ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে পরাক্রমশালী রাশিয়ার হামলায়, তবু রাশিয়ার আগ্রাসনের কাছে আত্মসমর্পণ করেনি ইউক্রেনের সেনারা। মাথা নত করেননি প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। দলে দলে বাস্তুচ্যুত হলেও সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে আত্মসমর্পণ করার মতো কোনো দাবি আসতে দেখা যায়নি।

রুশ হামলায় বিধ্বস্ত মারিওপোল

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়ার অভিযান শুরুর প্রথম দিন থেকেই আমেরিকা, ব্রিটেনসহ গোটা পশ্চিমা দুনিয়ার কাছে সাহায্য চেয়ে আসছেন জেলেনস্কি। কিন্তু কিছু অস্ত্রশস্ত্র ছাড়া তেমন কোনো সহযোগিতা পাননি। অথচ রুশ অভিযান শুরুর আগে থেকেই সব রকমের সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছিলেন তারা। অভিযান শুরুর পর বাস্তবে তেমন কিছু দেখা যায়নি।

রাশিয়ার বিমান হামলা ঠেকাতে জেট বিমান চেয়েছিলেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট। তা দেওয়া-না দেওয়া নিয়ে চলছে টালবাহানা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলেনস্কি বলেন, মারিওপলের রক্ষাকারীদের সাহসের ১ শতাংশও যদি ‘ট্যাঙ্ক এবং জেট প্লেন হস্তান্তর কীভাবে হবে, তা নিয়ে ৩১ দিন ধরে ভেবে চলা’ ব্যক্তিদের মধ্যে থাকত!

যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে জেলেনস্কি প্রায় প্রতিদিনই পশ্চিমা বিশ্বের কাছে সাহায্য চেয়ে আসছেন। ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বার বার সাহায্যের আবেদন করেছেন তিনি। কয়েকটি দেশ কিছু অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করলেও পাশে এসে দাঁড়ানোর মতো কাউকে পাওয়া যায়নি।

ন্যাটোর সীমাবদ্ধতার কথা উল্লেখ করে বাইডেন আগে জানিয়ে দিয়েছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ন্যাটো সেনা সরাসরি অংশ নেবে না। তাতে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি তারা ইউক্রেনের আকাশকে নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করতেও রাজি হয়নি। সব মিলিয়ে তাদের সার্বিক কর্মকাণ্ডের মধ্যে কাপুরুষতার লক্ষণ দেখতে পেয়েছেন তিনি। তাই তিনি মন্তব্য করেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর মধ্যে সাহসের বড়ই অভাব।