কিয়েভের ক্যাফে থেকে উঠে আসা যুদ্ধচিত্র

আজ ৩১ মার্চ, বৃহস্পতিবার। কিয়েভের ফাঁকা রাস্তাগুলোকে আরও বেশি নির্জন দেখাচ্ছে। এমন একটি ঠাণ্ডা দিনে হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি। রাজধানীর চারপাশে সামরিক তৎপরতা কমানোর জন্য রাশিয়ার দাবির প্রতিক্রিয়াও একইভাবে নিস্তেজ ছিল। এর মধ্যেই ইউক্রেনীয় কয়েকজন তরুণের আলোচনায় উঠে এসেছে যুদ্ধচিত্র।

নির্জন কিয়েভ

শহরের কেন্দ্রে পাকা রাস্তার একটি ক্যাফেতে বসে আমরা। আনিয়া আমাকে বলেছিল, যুদ্ধে কেউ প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে না। আমাদের দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া উচিত। কিন্তু বন্ধু দাশা তা মানতে রাজি নয়। সে বলল, আমাদের অবশ্যই রাশিয়ানদের ছাড় দেওয়া উচিত নয়। শেষ পর্যন্ত আমাদের দৃঢ়তার সাথে লড়ে যাওয়া উচিত। অন্যথায় আমাদের এখানকার জীবন সবসময় ভয়ের মধ্যে কাটবে।

চাকরিজীবি ওলেক্সান্ডার বললেন, তিনি আত্মবিশ্বাসী, রাশিয়ান সৈন্যরা কিয়েভে একেবারে থেকে যাবে না। নিশ্চয়ই যুদ্ধ গেম একদিন শেষ হয়ে যাবে। তিনি তার স্যান্ডউইচের জন্য অপেক্ষা করতে করতে প্রফুল্লভাবে বলছিলেন, এটা শুধু সময়ের ব্যাপার, সবকিছু আগের মতো হয়ে যাবে।

ক্যাফের মালিক মেরিনা আমাকে বলছেন, আমরা সত্যিই চাই এসবের অবসান হোক। সবাই তাদের শান্তিপূর্ণ জীবনে ফিরে যেতে চায়। কিন্তু আমি মনে করি না এটি এখনও শেষ হয়েছে।

মেরিনা জানান, ২০১৪ সালে ইউক্রেনের পূর্বে রাশিয়া-সমর্থিত বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সাথে যুদ্ধ শুরু হলে তার রেস্তোরাঁটি ডোনেস্ক থেকে কিয়েভে স্থানান্তরিত হয়। আমরা ভেবেছিলাম এটাই শেষ। কিন্তু এখন আবার যুদ্ধ। মেরিনা জানায়, এবার কিয়েভ থেকে সরে যাওয়ার ইচ্ছা নেই।

সবশেষ পরিস্থিতি: হোয়াইট হাউস জানিয়েছে, পুতিন এবং তার সামরিক নেতৃত্বের মধ্যে গোলমাল হচ্ছে এমন গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে। যুক্তরাজ্য বলছে, রুশ সৈন্যরা মাঝে মাঝে আদেশ মানতে অস্বীকার করছে এবং একবার ভুলবশত নিজেদের বিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।

জার্মানি বলেছে, রাশিয়া ইউরোপীয় দেশগুলোকে তার গ্যাসের জন্য ইউরো দিয়ে অর্থ প্রদানের অনুমতি দেবে। রুবেল দিয়ে লেনদেনের যে হুমকি ছিল তা থেকে সরে এসেছে রাশিয়া। জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, যুদ্ধ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত ৪০ লাখ মানুষ ইউক্রেন ছেড়ে পালিয়েছে।

ক্রেমলিনের একজন মুখপাত্র বলেছেন, উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি অর্জিত হয়নি। চেরনিহিভ অঞ্চলের গভর্নর বলেছেন, রাশিয়ার প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও হামলা বন্ধ হয়নি। ইউক্রেনের কর্মকর্তারা বলছেন, দোনেস্ক অঞ্চলের ফ্রন্ট লাইনে প্রায় সব শহরেই গুলি চালাচ্ছে রাশিয়া।