সেনাবাহিনীকে ‘সংকুচিত’ করতে চান মোদি!

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সরকার ভারতীয় সেনাবাহিনীর বাজেট সংকুচিত করার উপায় খুঁজছেন। কারণ এই বাহিনীর বেতন এবং পেনশন বিলের জন্য বছরে প্রায় ৭০ বিলিয়ন ডলার ব্যয় হচ্ছে। বাহিনীটিকে আধুনিকীকরণ এবং সরঞ্জামের ঘাটতি পূরণ করতে প্রয়োজন হয় বিশাল অংকের অর্থ। সাবেক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচএস পানাগ বলেছেন, বাহিনীটিতে বর্তমান এক লাখেরও বেশি কর্মীর ঘাটতি হয়েছে। বিবিসি।

ভারতীয় সেনাবাহিনী

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্য সংখ্যা ১.৪ মিলিয়ন। বাহিনীটি বিশ্বের বড় সেনা কোম্পানির একটি। বহু তরুণ ভারতীয়ের জন্য এই বাহিনীতে যোগদান লোভনীয় ও নিরাপদ একটি সুযোগ। প্রতি বছর প্রায় ৬০ হাজার কর্মী অবসর নেয়। কিন্তু মহামারির কারণে গত দুই বছর নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে।

ভারত ইতোমধ্যেই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম সামরিক ব্যয় বহনকারী দেশ। এক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পরে থাকা ভারত বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অস্ত্র আমদানিকারক দেশ। মোদি সরকার এখন প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের দেশীয় উৎপাদন বাড়াতে বিলিয়ন ডলার খরচ করছে। ভারতের কাছে পরমাণু ওয়ারহেড এবং ব্যালিস্টিক মিসাইলের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।

প্রতিরক্ষা বিভাগের সূত্রের বরাত দিয়ে সাম্প্রতিক একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য সৈন্য নিয়োগের প্রস্তাব নিয়ে চিন্তাভাবনা করছে। মোদি নিজেই এই সংস্কারের প্রবক্তা। অতীতে তিনি মোবাইল এবং প্রযুক্তিচালিত শক্তির প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

লেফটেন্যান্ট জেনারেল পানাগ বলেন, একবিংশ শতাব্দীর বিশাল বাহিনীটিকে হালকা এবং অত্যাধুনিক ও সামরিক প্রযুক্তি দ্বারা সমৃদ্ধ করা প্রয়োজন। একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতি হিসাবে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যয় কমিয়ে সেনাবাহিনীতে সংস্কার আনা দরকার।

একজন সাবেক প্রতিরক্ষা অফিসার লিখেছেন, সেনাবাহিনীর এখনকার তুলনায় অনেক কম লোক নিয়ে কাজ করার ক্ষমতা রয়েছে। দিল্লির জওহরলাল নেহরু ইউনিভার্সিটির নিরাপত্তা অধ্যয়নের অধ্যাপক লক্ষ্মণ কুমার বেহেরার মতে, ভারতের প্রতিরক্ষা বাজেটের ৬০ ভাগ অর্থ ব্যয় করে চীন, যা দেশটির বাজেটের এক তৃতীয়াংশেরও কম।

চীনের সাথে বিতর্কিত হিমালয় সীমান্তে কয়েক হাজার ভারতীয় সেনা এখনও অবস্থান করছে। ভারতশাসিত কাশ্মীরে প্রায় অর্ধমিলিয়ন সৈন্য স্থায়ীভাবে অবস্থান করছে। সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অফ ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের অনিত মুখার্জি বলেছেন, সীমান্তজুড়ে যখন অস্থিরতা বিরাজ করছে তখন সেনবাহিনীতে নিয়োগ বন্ধ রাখা সামগ্রিক প্রতিরক্ষায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে।