যুদ্ধের মধ্যেও ভারতে অস্ত্রের চালান পাঠাল রাশিয়া

ইউক্রেনে রাশিয়ার অভিযান চালানোর ৫০ দিন পেরিয়ে গেছে। যুদ্ধ থামার কোনো লক্ষণ দেখা না গেলেও নিজের অস্ত্র ব্যবসা ঠিকই চালিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া। এতসব নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও ভারতকে তার প্রতিশ্রুত অস্ত্রের চালান পাঠিয়েছে মস্কো। তবে ব্যাংকিং সিস্টেম এখনো নির্ধারিত না হওয়ায় ভবিষ্যতের চালান নিয়ে চিন্তিত দুই পক্ষই। খবর এনডিটিভি।

ভারতে পৌঁছেছে রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র

খবরে বলা হয়, সমুদ্রপথে রাশিয়ার পাঠানো এই চালানে এস-৪০০ এয়ার ডিফেন্স মিসাইল সিস্টেমের প্রশিক্ষণ স্কোয়াড্রনের জন্য সিমুলেটরসহ অন্যান্য সরঞ্জাম রয়েছে। এতে ক্ষেপণাস্ত্র বা লঞ্চার অন্তর্ভুক্ত নেই বলে জানিয়েছে ভারতের প্রতিরক্ষা সূত্র।

তবে এটি অদূর ভবিষ্যতে অব্যাহত থাকবে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। কারণ এসব সমরাস্ত্র বাবদ রাশিয়াকে অর্থ প্রদানের কোনো সমাধান এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।

এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম

ভারতের একটি সরকারি সূত্র বার্তা সংস্থা এএনআইকে জানায়, প্রতিরক্ষা বাহিনী অতি সম্প্রতি রাশিয়া থেকে এটি চালান পেয়েছে। এখন পর্যন্ত সরবরাহে কোনো সমস্যা হয়নি। তবে ভবিষ্যতে একইভাবে চলতে পারে কি না, তা নিয়ে উদ্বেগ রয়েছে। কারণ রাশিয়ার বিভিন্ন ব্যাংকের ওপর যেভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তাতে ভারত আগের মতো রাশিয়াকে এর মূল্য পরিশোধ করতে পারছে না।

ভারত ও রাশিয়া উভয় পক্ষই সমস্যাটি মোকাবেলায় উপায় খুঁজে বের করার জন্য কাজ করছে। ইতোমধ্যে অনেকগুলো বিকল্প নিয়ে কাজ শুরু হয়ে গেছে।

ফাইটার জেট, পরিবহন বিমান, হেলিকপ্টার, যুদ্ধজাহাজ, ট্যাংক, সাজোয়া যান এবং সাবমেরিনের মতো সমরাস্ত্রের ক্ষেত্রে রাশিয়ান অস্ত্রের অন্যতম বৃহত্তম ব্যবহারকারী ভারত। গত কয়েক দশক ধরে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স ও ইসরায়েলের মতো দেশ থেকেও অস্ত্র কিনতে শুরু করেছে ভারত। তারপরও রাশিয়ার ওপর নির্ভরতা অনেক বেশি।

ভারতের সামরিক বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, তাদের বিমান বাহিনী রাশিয়ান সরবরাহের ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। কারণ এ বাহিনীর মূল অংশ সু-৩০ বিমানবহর এবং এমআই হেলিকপ্টারবহর পুরোটাই রাশিয়ানির্ভর। অন্যদিকে সেনাবাহিনী সাঁজোয়া রেজিমেন্ট রাশিয়ার তৈরি টি-৯০ এবং টি-৭২ ট্যাংকবহরের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল।

উল্লেখ্য, আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেম কেনার জন্য ২০১৪ সালে রাশিয়ার সাথে চুক্তি করে ভারত। গত বছরের ডিসেম্বর থেকেই ভারতে এস-৪০০ পাঠানোর কাজ শুরু করে। ২০২৩ সালের মধ্যেই চুক্তি মোতাবেক অত্যাধুনিক পাঁচটি ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভারতের হাতে চলে আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।