শ্রীলঙ্কায় নতুন মন্ত্রিসভা গঠন

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবি রাজাপাকসা নতুন মন্ত্রিসভা গঠন করেছেন। ঘোষিত ১৭ জন মন্ত্রীর তালিকায় রাজাপাকসা পরিবারের কোনো সদস্য নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসা স্বপদে বহাল রয়েছেন।এছাড়া পররাষ্ট্র মন্ত্রী জি.এল.পেইরিস ও অর্থমন্ত্রী আলি সাবরির দপ্তরে কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি।

শ্রীলঙ্কার নতুন মন্ত্রিসভা

নতুন মন্ত্রীসভায় জনপ্রশাসন, স্থানীয় সরকার ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে রয়েছেন দীনেশ গুনাবর্ধনে। এছাড়া মৎস্যসম্পদ মন্ত্রী ডগলাস দেবানন্দ, শিক্ষা ও বনজ শিল্প মন্ত্রী ড. রমেশ পাথিরানা, জননিরাপত্তা ও পর্যটন মন্ত্রী প্রসন্ন রানাতুঙ্গা, পরিবহন ও শিল্পমন্ত্রী দিলাম আমুনুগামা, মহাসড়ক বিষয়ক মন্ত্রী কনক হেরাথ, শ্রম মন্ত্রী ভিদুরা বিক্রমানায়েকে, কৃষি ও সেচ মন্ত্রী জনক ওয়াকামবুরা।

বাণিজ্য মন্ত্রী শেহান সেমাসিংহে, পানি সরবরাহ মন্ত্রী মোহন প্রিয়দর্শন ডি সিলভা, বন্যপ্রাণী ও বনজসম্পদ সংরক্ষণ মন্ত্রী বিমলবীর দিশানায়েকে, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চন বিজয়শেখর, ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ মন্ত্রী থেনুকা বিধানাগামাগে, গণমাধ্যমবিষয়ক মন্ত্রী ড. নালক গোদাহেওয়া, স্বাস্থ্যমন্ত্রী চান্না জয়সুমন, পরিবেশমন্ত্রী নাসির আহামেদ এবং বন্দর ও নৌ পরিবহন মন্ত্রী প্রমিত বান্দারা তেন্নাকুন।

এর আগে তীব্র অর্থনৈতিক সংকট ও জনবিক্ষোভের মুখে চলতি মাসের গোড়ার দিকে প্রেসিডেন্ট গোতাবি রাজাপাকসা ও তার ভাই মহিন্দা রাজাপাকসা ছাড়া মন্ত্রীসভার সব সদস্য পদত্যাগ করেন। এরপর প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসা বিরোধী দলগুলোকে জাতীয় ঐক্যমতের সরকার গঠনের প্রস্তাব দিলে বিরোধীরা তা প্রত্যাখ্যান করে।

বিগত মন্ত্রীসভার যেসব সদস্য এবার বাদ পড়লেন তাদের মধ্যে রয়েছেন প্রেসিডেন্ট ও প্রধানমন্ত্রীর বড় ভাই চমল রাজাপাকসা, তার ছেলে শষীন্দ্র রাজাপাকসা ও প্রধানমন্ত্রীর পুত্র নমল রাজাপাকসা। এছাড়া সাবেক পরিবহন মন্ত্রী ও চিফ হুইপ জনস্টন ফার্নান্দেজকে এবার মন্ত্রীসভায় রাখা হয়নি।

অর্থনৈতিক সংকট ও অব্যবস্থাপনায় অতিষ্ট শ্রীলঙ্কানদের অব্যাহত বিক্ষোভের মুখে গোতাবি রাজপাকসা নতুন মন্ত্রিসভা ঘোষণা করলেন। তার বড় ভাই প্রধানমন্ত্রী মহিন্দা রাজাপাকসা নতুন মন্ত্রীসভার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না। তবে তিনি পরে মন্ত্রীদের নিয়ে নিজের বাসভবনে বৈঠক করেন।

এদিকে গোতাবি রাজাপাকসার পদত্যাগ দাবিতে লঙ্কানদের আন্দোলন আরও জোরদার হচ্ছে। নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের সংকটের কারণে শ্রীলঙ্কার মানুষের দুর্ভোগও অব্যাহত রয়েছে। দেশটির বিদ্যুৎ বিভাগ সোমবার থেকে দৈনিক সাড়ে চার ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকবে বলে ঘোষণা দিয়েছে।

জ্বালানি পরিবেশক প্রতিষ্ঠান লঙ্কা ইন্ডিয়ান অয়েল কোম্পানি (এলআইওসি) গতকাল রোববার মধ্যরাত থেকে অকটেন ও ডিজেলের দাম যথাক্রমে ১০ ও ৩৫ শতাংশ বাড়িয়েছে। প্রতি লিটার অকটেন এখন ৩৩৮ রুপি আর ডিজেল ২৮৯ রুপি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ফেব্রুয়ারি থেকে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো শ্রীলঙ্কায় জ্বালানির মূল্য বাড়ল। শ্রীলঙ্কার রুপির বিনিময় হার কমে যাওয়ায় জ্বালানির মুল্য বৃদ্ধি করতে হয়েছে বলে এলআইওসির মুখপাত্র জানিয়েছেন। গত ৭ মার্চ থেকে শ্রীলঙ্কান রুপির মানের ৬০ শতাংশের বেশি অবনমন হয়েছে।