ইমরান-বিরোধীদের ঐক্যে ‘ফাটলের আভাস’!

ইমরান খানকে ক্ষমতা থেকে হটানোর এক সপ্তাহের মাথায় পাকিস্তানের নতুন ক্ষমতাসীন জোটে ফাটলের আভাস দেখা যাচ্ছে। পিটিআই সরকারের বিরুদ্ধে গঠিত জোটের নেতা ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম (জেইউআই-এফ) মাওলানা ফজলুর রহমান বলেছেন, তিনি ‘অবিলম্বে নির্বাচন’ চান এবং এ বিষয়ে জোটসঙ্গীদের অবহিত করবেন। খবর ডন।

জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম নেতা মাওলানা ফজলুর রহমান, ছবি- ডন

ইসলামাবাদে দলের এক কর্মীসভায় ফজলুর রহমান বলেন, নতুন সরকার বড়জোর এক বছর থাকবে। পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের নিজস্ব পরিচিতি রয়েছে। আমি তাদের (জোট শরিকদের) বলছি যে, আমরা এখনও অবিলম্বে নির্বাচন চাই।

ইমরান খান সরকারের বিরুদ্ধে গঠিত পাকিস্তান ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (পিডিএম) জোটের প্রধান ফজলুর রহমান। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি তিনিই প্রথম ইউরোপীয় রাষ্ট্রদূতদের সমালোচনা করায় ইমরান খানের পাল্টা সমালোচনা করেন এবং সরকারের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হবে বলে ঘোষণা দেন।

সোমবার ইসলামাবাদে দলের কর্মীদের উদ্দেশে ফজলুর রহমান বলেন, নির্বাচনী ব্যবস্থা ও ভোট কারচুপির সম্ভাবনা নিয়ে জোট শরিকদের মধ্যে কোনো প্রশ্ন থাকলে নির্বাচনী সংস্কার আনা যেতে পারে। তিনি বলেন, যেকোনো যুক্তির একটা সীমা আছে। জেইউআই-এফ বিনা প্রয়োজনে ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার পক্ষে অবস্থান নিবে না। আমরা আমাদের অবস্থানে অটল থাকব। এ নিয়ে জোট শরিকদের সঙ্গে কাজ করব।

ইমরান খানের প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, তার বিদায় হলেও, আমরা তাকে বাড়ি পাঠালেও, যে আমানতের জন্য লড়াই করেছি সেটা জনগণকে ফিরিয়ে দেওয়া আমাদের কর্তব্য। শাহবাজ শরিফ শিগগিরই মন্ত্রিসভার নাম ঘোষণা করছেন- এ মর্মে গণমাধ্যমে নানা খবরের মধ্যেই ফজলুর রহমান এসব কথা বলেন।

এর আগে রোববার পাকিস্তান মুসলিম লীগ (নওয়াজ)-এর তথ্য সম্পাদক মরিয়ম আওরঙ্গজেব বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সদস্যরা আগামীকাল (আজ সোমবার) শপথ নিবেন। জেইউআই-এফ, এমকিউএম(পি)সহ সব দলকে মন্ত্রিসভায় রাখা হচ্ছে।

তবে সরকারের একটি সূত্র জানায়, ফজলুর রহমান মন্ত্রিসভায় যোগ দিচ্ছেন না, যদিও তিনি সরকারের সঙ্গে থাকবেন। জানা গেছে, ফজল নিজে প্রেসিডেন্ট হতে চেয়েছিলেন। তার এ চাওয়া পূরণ হয়নি। এছাড়া আওয়ামী ন্যাশনাল পার্টি (এএনপি)-কে মন্ত্রিসভায় একটি পদ দেওয়ায় ও স্বতন্ত্র এমএনএ মহসিন দাওয়ারকে মন্ত্রী করায় মাওলানা ফজলুর দলের অসন্তোষ রয়েছে।

সূত্র জানায়, এএনপি ও মহসিন দাওয়ার জেইউএফের বিরুদ্ধে নির্বাচনে প্রার্থী দেওয়ার পরও কেন তাদের মন্ত্রিসভায় নেওয়া হচ্ছে সেজন্য পিপিপি নেতা আসিফ আলি জারদারি ও বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারির কাছেও প্রশ্ন তুলেছেন ফজল। জবাবে জারদারি তাকে বলেছেন, তিনি নিজে ইমরান খান বিরোধী জোট গঠনের সময় এসব পক্ষকে মন্ত্রীত্বের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, তার পক্ষে সে প্রতিশ্রুতি থেকে পিছিয়ে আসা সম্ভব নয়। জোটের সব পক্ষ মন্ত্রীত্ব পাবার আগে পিপিপির কেউ মন্ত্রী হবে না বলেও মন্তব্য করেন জারদারি।