ঢাকা কলেজের শিক্ষকদের জরুরি বৈঠক

টানা দুই দিন ধরে দফায় দফায় নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের ঘটনা নিয়ে জরুরি বৈঠক করছেন কলেজটির শিক্ষকরা। আজ বুধবার, ২০ এপ্রিল সকাল থেকে নতুন করে কোনো উত্তেজনা দেখা না গেলেও থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে ওই এলাকায়।

ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ, মঙ্গলবারের ছবি

ঢাকা কলেজ সূত্রে জানা গেছে, উদ্ভূত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ, শিক্ষক পরিষদের সম্পাদক, আবাসিক হলসমূহের তত্ত্বাবধায়কসহ শিক্ষকরা জরুরি বৈঠকে বসেছেন। বৈঠকে গত দুই দিনের ঘটনা পর্যালোচনার পাশাপাশি পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

এদিকে, গতকাল মঙ্গলবার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা করলেও অনেক শিক্ষার্থীই হলে অবস্থান করছেন। আজ দুপুরে ঢাকা কলেজ ক্যাম্পাসে কিছু শিক্ষার্থীর আনাগোনা দেখা গেছে। অবশ্য কোনো ধরনের উত্তেজনা নেই সেখানে।

অপরদিকে, আজ সকাল থেকেই নিউমার্কেট এলাকা দিয়ে যান চালাচল করছে। তবে এখনও বন্ধ রয়েছে নিউমার্কেটসহ আশপাশের সবগুলো মার্কেট। পবিত্র ঈদুল ফিতরের আর মাত্র ১২ দিন আছে। সারা বছর ব্যবসায়ীরা সাধারণত এই সময়টার অপেক্ষায় থাকে। তাই সকাল থেকেই মার্কেট খোলার সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন তারা।

নতুন করে যাতে কোনো বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে না পারে সেজন্য নিউমার্কেট এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় রয়েছেন সেখানে উপস্থিত ব্যবসায়ীরা।

বিষয়টি নিয়ে দুপুরে সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। তিনি বলেছেন, পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত অনুকূলে রয়েছে। এ অবস্থা থাকলে আমরা সব দেখে মার্কেট খুলে দেব।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ব্যবসায়ীদের তিনি বলেছেন, তারা যেন আজ দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষা করে। বুঝে হোক আর না বুঝেই হোক, ৭ কলেজের শিক্ষার্থীরা নাকি ঢাকা অচল করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আবার তাদের সঙ্গে শামিল হয়েছে নুরুল হক নুররাও। আবার ইডেনের শিক্ষার্থীরাও নাকি রাস্তায় নামার কথা বলেছে।

মন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি যাতে আবারো খারাপ না হয়, সেজন্য আমি দুপুর পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের অপেক্ষা করতে বলেছি। পরিস্থিতি দেখে তারপর যেন দোকান খোলে। পরিস্থিতি এখন পর্যন্ত অনুকূলে আছে, যদি আর কোনো সমস্যা না হয় তাহলে সব দেখে মার্কেট খুলে দেব আমরা।

প্রসঙ্গত, গত সোমবার, ১৮ এপ্রিল দিবাগত রাতে দুই দোকানের কর্মীদের বিরোধকে কেন্দ্র করে নিউমার্কেট এলাকায় ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গতকাল মঙ্গলবার বিকাল পর্যন্ত থেমে থেমে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে।

এ ঘটনায় ঢাকা কলেজের দুই শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ৫০ জনের অবস্থা গুরুতর। এ ছাড়া দুই দিনের এসব ঘটনায় অন্তত ১১ জন সাংবাদিক এবং পুলিশের ২৫ জন সদস্য আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

অপরদিকে, সংঘর্ষের ঘটনায় আহত এক যুবক চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মারা গেছেন। নাহিদ, ১৮, নামের ওই যুবক একটি কুরিয়ার সার্ভিস কোম্পানিতে কাজ করতেন।